ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ধর্ম

জুমার নামাজ যাদের ওপর ফরজ

ইসলাম ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৯:২৫ এএম, ১৮ জুলাই ২০২৫

জুমার নামাজ ফরজ মুসলমান প্রাপ্তবয়স্ক, জ্ঞানসম্পন্ন (যিনি মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন নন) মুকিম (যিনি মুসাফির নন) স্বাধীন (যিনি ক্রিতদাস নন) নগর বা লোকালয়ের অধিবাসী পুরুষদের ওপর; যার এমন কোনো গ্রহণযোগ্য অসুবিধা, অসুস্থতা বা বার্ধক্য নেই যে কারণে তিনি মসজিদে উপস্থিত হতে ও জুমা আদায় করতে অক্ষম।

আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, জুমার নামাজ প্রত্যেক মুসলিমের উপর জামাআতের সাথে আদায় করা আবশ্যক। কিন্তু তা চার প্রকার লোকের উপর আবশ্যক নয়; ক্রীতদাস, নারী, শিশু ও অসুস্থ ব্যক্তি। (সুনান আবু দাউদ: ১০৬৭)

আরেকটি বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ ও পরকালের ওপর যাদের ইমান আছে, তাদের ওপর জুমা আবশ্যক। তবে অসুস্থ, মুসাফির, নারী, শিশু ও ক্রিতদাসদের ওপর জুমা আবশ্যক নয়। (দারাকুতনি, বায়হাকি)

মুসাফির ও নারীদের ওপর জুমার নামাজ আদায় করা আবশ্যক নয়। তবে তারা যদি মসজিদে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ পান, তাহলে জুমা আদায় করে নেবেন। মুসাফির ব্যক্তি জুমার ইমামতিও করতে পারবেন। কোনো মসজিদের খতিব সাহেব যদি সফর পরিমাণ দূরত্ব থেকে এসে জুমার ইমমতি করেন, তাহলে তার ও মুক্তাদিদের জুমা শুদ্ধ হবে।

মসজিদে উপস্থিত হতে অক্ষম অসুস্থ, অন্ধ বা বৃদ্ধদের ওপর জুমা ফরজ নয়। তবে অন্ধ ব্যক্তি যদি তাকে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার মতো কাউকে পেয়ে যান তাহলে তার ওপর জুমা আদায় করা আবশ্যক হবে।

যে ব্যক্তি এমন বিজন কোনো জায়গায় অবস্থান করছেন, যেখানে জুমার নামাজ আদায় করার মতো মানুষ নেই এবং তিনি জুমার জন্য লোকালয়ের কোনো মসজিদে উপস্থিতও হতে পারছেন না, তার ওপর জুমা ফরজ নয়।

মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তি ও অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুদের ওপর কোনো ইবাদতই ফরজ বা ওয়াজিব নয়, জুমাও তাদের ওপর ওয়াজিব নয়।

গ্রহণযোগ্য কোনো ওজর ছাড়া জুমার নামাজ ছেড়ে দেওয়া অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি অলসতা করে ধারাবাহিকভাবে তিনটি জুমার জামাতে অনুপস্থিত থাকে, আল্লাহ তা’আলা তার অন্তরে মোহর মেরে দেন। (সুনানে নাসাঈ: ১৩৭২) অর্থাৎ সেই অন্তর হেদায়াত পাওয়ার অযোগ্য হয়ে যায়।

জুমার নামাজ যাদের ওপর ফরজজুমার খুতবা। ছবি: সংগৃহীত

খুতবা শুরু হওয়ার আগেই জুমায় উপস্থিত হওয়া জরুরি

যাদের ওপর জুমা ফরজ তাদের কর্তব্য জুমার দিন মসজিদে জুমার খুতবা শুরু হওয়ার আগেই মসজিদে চলে যাওয়া। জুমার আজানের পর দুনিয়াবি কাজকর্ম করার ব্যাপারে কোরআনে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। দ্রুত মসজিদে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন, হে মুমিনগণ, যখন জুমার দিনে সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের দিকে ধাবিত হও আর বেচা-কেনা বর্জন কর। এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, যদি তোমরা জানতে। (সুরা জুমা: ৯)

তাই জুমার আজান হয়ে গেলে মসজিদে চলে যাওয়া, সব দুনিয়াবি কাজ বন্ধ করে দেওয়া কুরআনের সরাসরি নির্দেশে ওয়াজিব বা অবশ্য কর্তব্য।

জুমার ফরজ ও সুন্নত নামাজ

জুমার ফরজ নামাজ দুই রাকাত যা জামাতে আদায় করা হয়। জুমার সুন্নতে মুআক্কাদা নামাজ আট রাকাত; জুমার ফরজ নামাজের আগে চার রাকাত, পরে আরও চার রাকাত। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন জুমার ফরজ পড়ে, তখন সে যেন জুমার পর চার রাকাত নামাজ পড়ে নেয়। (সহিহ মুসলিম: ৮৮১)

সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদের (রা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে তিনি তার ছাত্র ও অনুসারীদের জুমার আগে চার রাকাত ও জুমার পরে চার রাকাত নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিতেন। তাই এ আট রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদা নামাজ বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আদায় করা উচিত।

জুমা পরবর্তী চার রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদা নামাজের পর ভিন্ন সালামে আরও দুরাকাত নামাজ আদায় করাও সুন্নত। তবে এ দুই রাকাত সুন্নতে মুআক্কাদার অন্তর্ভুক্ত নয়।

ওএফএফ/এএসএম

আরও পড়ুন