বেগম জিয়াকে নিয়ে আকরাম খানের স্মৃতিচারণ
বিরোধী দলের নেত্রী হয়েও আইসিসি ট্রফি জেতার পর দারুণ সংবর্ধনা দিয়েছিলেন
দেশের প্রথম নারী ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোকে মুহ্যমান জাতি।
অন্য সব ক্ষেত্রর মত ক্রীড়াঙ্গনও বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন। জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে জানিয়েছেন শোক। আত্মার প্রতি সন্মান প্রদর্শনের পাশাপাশি কামনা করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর আত্মার শান্তিও।
বেগম জিয়ার সাথে নিজের ক্যারিয়ারের কিছু স্মৃতিও মেলে ধরেন বিসিবি প্রধান।
তার সমসাময়িক জাতীয় দলের অপর দুই সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান আর মিনহাজুল আবেদিন নান্নুও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তার আত্মার শান্তি কামনাও করেছেন।
আকরাম ও নান্নু দুজনই প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিজেদের কিছু স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে জাগো নিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপে আকরাম খান বলেন, ‘তিনি ছিলেন আমাদের মায়ের মত। আমাদের খুব ভালোবাসতেন। তার সান্নিধ্যে যখনই গেছি, খুব সমাদর পেয়েছি। ভাল লেগেছে। হাসিমুখে আমাদের ডাকতেন। আমাদের খোঁজ খবর নিতেন।’
বেগম জিয়ার ক্রীড়া অনুরাগ, ক্রিকেট ও ক্রিকেটারদের প্রতি মমত্ব ও ভালবাসার উদাহরণ দিতে গিয়ে দেশের ক্রিকেটের সফল সেনাপতি আকরাম খান জানান, ‘আমি খুব সৌভাগ্যবান যে আমার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দুটি সাফল্য পায়। যার প্রথমটি ছিল ১৯৯৬ সালে, বেগম খালেদা জিয়া তখন প্রধানমন্ত্রী। সেবার মালয়েশিয়ার মাটিতে হওয়া এসিসি ট্রফিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম আমরা। আমিই ছিলাম অধিনায়ক। সেই এসিসি ট্রফি জয়ী দলকে আন্তরিক সংবর্ধনা দিয়েছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। সেটা আমার মনে দাগ কেটে আছে।’
কেবল যে প্রধানমন্ত্রী অবস্থায় ক্রিকেটারদের সংবর্ধনা দিয়েছেন এমনটা নয়। বিরোধী দলীয় নেতা থাকাকালিনও তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাফল্যে সংবর্ধনা ও উপহার দিয়েছিলেন।
আকরাম খান বলেন, ‘আমরা যখন ১৯৯৭ সালে এপ্রিলে সেই মালয়েশিয়ার মাটি থেকে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন হয়ে ওয়ার্ল্ডকাপের টিকিট কনফার্ম করে দেশে ফিরি। তখনও বেগম জিয়া আমাদের উষ্ণ আন্তরিক ভালোবাসায় আচ্ছন্ন করেছেন। বলে রাখি, তিনি মানে বেগম জিয়া কিন্তু তখন প্রধানমন্ত্রী নন, প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী। এবং তার কিছুদিন আগেও তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ৯৬‘র নির্বাচনে হেরে বিএনপি তখন প্রধান বিরোধী দল।’
সরকারে না থাকলেও দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি যে দাতিত্ব সেটি পালন করতে কখনোই ভুলতেন না বেগম জিয়া। একইভাবে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা যেকোনো ক্রীড়ার সাফল্যকে তিনি উদযাপন করতেন আনন্দের সঙ্গেই।
যেমন বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় বাংলাদেশ দলকে যেভাবে বরণ করেছিলেন সেই কথাটা বিস্তারিতই বললেন আকরাম, ‘বিরোধী দলের নেত্রী হয়েও বেগম জিয়া আমাদের জাতীয় দলকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন। আমাদের দুই দফা সাক্ষাত হয়। প্রথমে হোটেল পূর্বানিতে আমাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। পরে মিন্টু রোডে তার কার্যালয়ে নিয়ে অনেক উপহার সামগ্রী দেন। এবং ডিনার করান। প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি বিরোধী দলীয় নেত্রী হয়েও বেগম জিয়ার ঐ দুটি সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে।’
এআরবি/আইএন