ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

আয়ারল্যান্ড সফর স্থগিত : ক্লাব পাড়া ও ক্রিকেটাররা খানিক স্বস্তিতে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশিত: ০৯:০৫ পিএম, ২১ মার্চ ২০২০

প্রাণঘাতী করোনা আতঙ্কে শঙ্কিত গোটা দেশ। ক্রিকেটার, কোচ সবাই উদ্বিগ্ন। এর মধ্যেও একটি খবরে ঢাকার ক্লাবপাড়া ও ক্রিকেটারদের মনে খানিক স্বস্তির পরশ। তা হলো, করোনার কারণে বাংলাদেশ জাতীয় দলের আয়ারল্যান্ড সফর স্থগিত করেছে আইরিশ ক্রিকেট বোর্ড।

ভাবছেন, এটা নিয়ে স্বস্তির কি আছে? আছে, আছে। করোনার ভয়াল গ্রাস কাটিয়ে টাইগাররা যদি সত্যি সত্যিই পূর্ব নির্ধারিত সূচি (১৪ মে থেকে বেলফাস্টে প্রথম ওয়ানডে) খেলতে আয়ারল্যান্ড সফরে যেতেন, তাহলে নির্ঘাত প্রিমিয়ার লিগের ‘বারোটা বেজে’ যেত। মানে প্রিমিয়ার লিগ আর এ বছর আদৌ হতো কিনা সন্দেহ।

নাহ, ক্রিকেট পাড়ার গুঞ্জন নয়, দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক বিসিবি পরিচালক এবং ক্লাব ক্রিকেটে অন্যতম শীর্ষ শক্তি আবাহনীর প্রশিক্ষক খালেদ মাহমুদ সুজন ২৪ ঘন্টা আগে এমন শঙ্কাই প্রকাশ করেছিলেন। এবারের প্রিমিয়ার লিগের ভবিষ্যত নিয়েও খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন সুজন। রাজ্যের সংশয় এসে ভর করেছিল তার মনে।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে জাগো নিউজের সাথে একান্ত আলাপে দেশের ক্রিকেটের এ ব্যস্ত ও সফল প্রশিক্ষক বলেই ফেলেছেন, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে লিগ শুরু করতে না পারলে এ বছর আর লিগ করাই কঠিন হবে। আর হাতে সময় থাকবে না। তারপর জাতীয় দলের টানা সিডিউল। ’

তার মনে ঘুরে ফিরে একটা প্রশ্নই উঁকি দিচ্ছিল, প্রাণঘাতী করোনা যেভাবে জেঁকে বসছে আর দিনকে দিন বিস্তৃত হচ্ছে, তাতে এবারের লিগ কি সত্যি ১৫ এপ্রিল শুরু করা সম্ভব হবে? ততদিনে কি করোনা মুক্ত হতে পারবে বাংলাদেশ? আর যদি তা না হয়, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহেও যদি লিগ শুরু করা না যায়, তাহলে কি এবার আর আদৌ প্রিমিয়ার লিগ হবে? ঘুরিয়ে বললে জাতীয় দলের যে ব্যস্ত সিডিউল, তাতে এপ্রিলের ২০ তারিখের মধ্যে শুরু না হলে এবারের প্রিমিয়ার লিগ শেষ করাই যে কঠিন হয়ে যাবে।

কারণ মে মাসের ১০ তারিখের পর থেকে জুন পর্যন্ত প্রায় টানা সূচি ক্রিকেট জাতীয় দলের। তারপর আবার এসে যাবে জাতীয় দলের বিশ্ব টি-টোয়েন্টির প্রস্তুতির সময়। সব মিলে প্রিমিয়ার লিগের ভবিষ্যত প্রায় অন্ধকার দেখছিলেন আবাহনী কোচ। ভাবছেন, জাতীয় দলের খেলার সাথে প্রিমিয়ার লিগের সম্পর্ক কি?

বিগত দিনে তো কয়েক বছর জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ছাড়াই হয়েছে প্রিমিয়ার লিগ। কাজেই এবারো যদি এপ্রিলে শুরু করা সম্ভব না-ই হয়, জাতীয় দলের যখন খেলা থাকবে, তখন পাশাপাশি প্রিমিয়ার লিগও চলবে। সমস্যা কি?

এমন নয় জাতীয় দলের খেলোয়াড় ছাড়া লিগ হয়নি। হয়েছে তো। গত চার পাঁচ লিগের প্রায় প্রতি আসরেই জাতীয় দলের কার্যক্রমের সাথে প্রিমিয়ার লিগে সূচি ‘ক্ল্যাশ’ করেছে। তাতে করে কোন কোনবার অল্প কটি ম্যাচই খেলতে পেরেছেন জাতীয় ক্রিকেটাররা। কোনবার খেলাই হয়নি। এবারো সেরকমই হবে!

কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। এবার আগে থেকেই জানা, মে মাসে আয়ারল্যান্ড সফর টাইগারদের। ১৪ মে বেলফাষ্টে আয়ারল্যান্ডের সাথে টাইগারদের প্রথম ওয়ানডে। হয়তো বড়জোর ১০ মে পর্যন্ত টানা লিগ খেলার সুযোগ মিলবে। সেই ভেবেই আসলে এবারের প্রিমিয়ার লিগের সূচি তৈরী করা হয়েছিল।

ভাবা হয়েছিল, আয়ারল্যান্ড যাবার আগে পর্যন্ত লিগ খেলতে পারবেন জাতীয় ক্রিকেটাররা। যেহেতু ১৬ মার্চ শুরু হয়েছিল লিগ, তাতে করে করোনার কারণে স্থগিত না হলে ঐ সময়ে হয়ত লিগ শেষ হয়ে যেত। কিংবা হাতে গোনা দু‘ একটি ম্যাচ মিস করতেন ১৪-১৫ জন জাতীয় ক্রিকেটার। আর তাই চ্যাম্পিয়ন আবাহনী, প্রাইম ব্যাংক আর গাজী গ্রুপ এক ঝাঁক জাতীয় ক্রিকেটার দিয়ে দল সাজিয়েছে।

এর মধ্যে আবাহনী ও প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে জাতীয় দলের ক্রিকেটার ছাড়া খেলা অসম্ভব। ঐ দল দুটির একাদশ সাজানোই সম্ভব হবে না। এর মধ্যে আবাহনীর অবস্থা সবচেয়ে করুণ। কারণ দলটির প্রথম একাদশের ৮ জনই (লিটন দাস, নাইম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, আফিফ হোসেন ধ্রুব, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন আর তাইজুল ইসলাম) হয়তো আয়ারল্যান্ড যেতেন।

প্রাইম ব্যাংকে তামিম ইকবাল, রুবেল হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান এবং গাজী গ্রুপেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সৌম্য সরকারের মত জাতীয় দলের ক্রিকেটার আছেন। তারা খেলতে না পারলে দল দুটির শক্তি প্রায় অর্ধেক কমে যেত।

কাজেই আয়ারল্যান্ড সফর বহাল থাকলে ঐ দলগুলো কোনভাবেই খেলতে রাজি হতো না। তাদের প্রবল আপত্তির মুখে লিগ চালানোও সম্ভব হতো না। কাজেই আয়ারল্যান্ড সফর স্থগিত, একটা স্বস্তি অবশ্যই। এখন অপেক্ষা করোনার ভয়াল থাবা থেকে মুক্তির। সেটা শুধু ক্লাব ও ক্রিকেটার নয়, গোটা জাতির জন্যই হবে পরম প্রশান্তি ও স্বস্তির।

এআরবি/এমএমআর/জেআইএম