মেসির হ্যাটট্রিকে উড়ে গেল এস্পানিওল
কে বলেছে নেইমারের অভাব দারুণ প্রভাব ফেলবে বার্সার পারফরম্যান্সের ওপর। বরং, যা দেখা যাচ্ছে তাতে তো সবাই এখন নিশ্চিত হয়ে যেতে পারে, এক লিওনেল মেসি থাকলে আর কারও প্রয়োজন নেই কাতালান ক্লাবটির। নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এস্পানিওলের মুখোমুখি হয়েছিল তারা ঘরের মাঠ ন্যু ক্যাম্পে। সেখানেই মৌসুমের প্রথম হ্যাটট্রিক করে বসলেন বার্সার আর্জেন্টাইন তারকা। তার হ্যাটট্রিকে এস্পানিওলকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বার্সেলোনা। একই সঙ্গে রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে ৪ পয়েন্টের ব্যবধান তৈরি করে নিলো তারা।
প্রথম ম্যাচে রিয়াল বেটিস ২-০, দ্বিতীয় ম্যাচে আলাভেসকেও একই ব্যবধানে হারানোর পর তৃতীয় ম্যাচে এসে এককভাবেই জ্বলে উঠলেন মেসি। বার্সার জার্সি গায়ে ৩৮তম হ্যাটট্রিক করলেন মেসি। শুধু তাই নয়, লা লিগায় ২০১৬ সালের ৩ মার্চে (প্রায় দেড় বছর) রায়ো ভায়োকানোর বিপক্ষে হ্যাটট্রিকের পর নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক করলেন মেসি। ৫৫৪ দিনের হ্যাটট্রিক খরা কাটালেন বার্সার আর্জেন্টাইন তারকা। ক্যারিয়ারে দুই হ্যাটট্রিকের মধ্যে এটা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সময় নেয়ার ঘটনা।
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে গত দেড়-দুটা সপ্তাহ খুব বাজে কেটেছে লিওনেল মেসির। উরুগুয়ে এবং ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে গোল করতে পারেননি। তার দলও দুই ম্যাচে করেছে ড্র। বিশ্বকাপ খেলতেই পারবে কি না আর্জেন্টিনা, সে শঙ্কায় সবাই। কিন্তু লিওনেল মেসি জাতীয় দলের হয়ে না পারলেও ক্লাবের জার্সি গায়ে যে সব সময়ই অপ্রতিরোধ্য- সেটা আবারও দেখিয়ে দিলেন বিশ্ববাসীকে।

শিরোপার অন্যতম দুই প্রত্যাশী রিয়াল মাদ্রিদ এবং অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ যখন ড্র করে পয়েন্ট হারাচ্ছিল, তখন পূর্ণ পয়েন্ট নিয়েই মাঠ ছাড়লো বার্সা। ২৬তম মিনিটেই প্রথম গোলের দেখা পান মেসি। যদিও গোলটি অফ সাইড ছিল কি না তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সে কারণে বলতে গেলে এই গোলটি ছিল ভাগ্য থেকে প্রাপ্ত।
ইভান র্যাকিটিক যখন মেসিকে বলটি পাস দেন এবং তিনি যখন বলটি রিসিভ করেন, তখন ছিলেন এস্পানিওল ডিফেন্ডারদের চেয়েও ভেতরে। অথ্যাৎ অফ সাইড। মেসি বল পেয়েই বাম পায়ের শটে এস্পানিওলের জালে বল জড়িয়ে দেন। এরপরই লাইন্সম্যানের দিকে খানিক তাকালেন। এরপরই মেতে উঠলেন উল্লাসে। মেসিও ভেবেছিলেন, হয়তো লাইন্সম্যান অফসাইডের পতাকা তুলে ধরবেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে লাইন্সম্যানের পতাকা উপরে উঠলো না।
এর একটু পরই ইভান র্যাকিটিক আর আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় একটি দারুণ গোল হতে যাচ্ছিল; কিন্তু শেষ মুহূর্তে বলটি ফিরিয়ে দেন এস্পানিওল গোলরক্ষক পাউ লোপেজ।

খেলার ৩৫তম মিনিটেই দ্বিতীয় গোলটি করেন মেসি। এই গোলে অবদান জর্দি আলবার। বাম পাশ থেকে বল নিয়ে উঠে আসেন আলবা। এরপরই তিনি পাস দেন মেসির কাছে। দ্রুত বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেটিকে শট করেন মেসি। এক ডিফেন্ডার চেষ্টা করেছিলে বলটি থামানোর; কিন্তু তার আগেই মেসি বল জড়িয়ে দিলেন জালে।
দ্বিতীয়ার্ধও দারুণ শুরু করে বার্সা। এই অর্ধেই বার্সার জার্সি গায়ে অভিষেক ঘটে ওসমানে ডেমবেলের। জেরার্ড দেওলোফিউয়ের পরিবর্তে মাঠে নামেন তিনি। তার আগেই অবশ্য হ্যাটট্রিক পূরণ করে ফেলেন মেসি। এবারও জর্দি আলবার ক্রস থেকে বল পেলেন মেসি। বল পেয়েই সেটিকে বাম পায়ের শটে জড়িয়ে দিলেন এস্পানিওলের জালে।
মেসির গোলের পরই মাঠে নামেন ডেমবেলে। খেলার ৮৭তম মিনিটে চতুর্থ গোলটি করেন জেরার্ড পিকে। ইভান র্যাকিটিকের নেয়া কর্নার কিক থেকে ভেসে আসা বলে দারুণ এক হেড করেন পিকে। সেটিই জড়িয়ে যায় এস্পানিওলের জালে। তিন মিনিট পর আবারও গোল। এবার গোলদাতা লুইস সুয়ারেজ। গোলটি বানিয়ে দিয়েছেন নতুন রিক্রুট ওসমান ডেমবেলে। তার কাছ থেকে বল পেয়ে বাম পায়ের শটে এস্পানিওলের জালে বল জড়ান সুয়ারেজ।
আইএইচএস/এমএস