ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

একটা ‘দল’ হয়েই জিতেছে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:৩৮ পিএম, ০২ মার্চ ২০১৬

এক কথায় চমৎকার। দুর্দান্ত একটি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। জয়টা হয়তো সাধারণ মানুষের জন্য দারুণ উদ্দীপনার, তবে এক সময় মনে হচ্ছিল ম্যাচটা ঝুলে গেছে। এমনকি আমি কখনও চিন্তা করিনি ম্যাচটা এত ক্লোজ হবে। সৌম্য যখন ব্যাটিং করছিল, তখন মনে হচ্ছিল খুব সহজেই জিতে যাবো; কিন্তু সৌম্য আর মুশফিক আউট হওয়ার পর একটু কঠিনই হয়ে গিয়েছিল ম্যাচটা।

তবে আমি এটাও মনে করি যে, এমন প্রেসার ম্যাচ খেলার প্রয়োজন আছে আমাদের। কারণ, আমরা এভাবে ম্যাচ  খেলে জিততে পারি, টি-টোয়েন্টিতে এর আগে কখনও প্রমাণ করতে পারিনি। এবার পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রমাণ করে ফেলেছি যে, টি-টোয়েন্টিতেও আমরা ভালো করতে পারি। যেমনটা হয়েছিল, গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওই ম্যাচটাকেই আমি মনে করি, ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদশের ঘুরে দাঁড়ানোর সবচেয়ে বড় মঞ্চ। টি-টোয়েন্টিতেও এমন একটা ম্যাচের প্রয়োজন ছিল। অনেকে অনেক কথা বলছিল, যে আমরা টি-টোয়েন্টি খেলতে পারি না, পাওয়ারের অভাব আছে। আমি মনে করি, পাকিস্তানকে হারানোর পর টি-টোয়েন্টিতেও আমাদের সাফল্যেও ধারা শুরু হলো।

এই এশিয়া কাপ আসলে টি-টোিেন্টতে বাংলাদেশের একটা বড় দল হয়ে ওঠার মিশনও। এশিয়া কাপের শুরু থেকে খেলোয়াড়দের মধ্যেও আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে, যে তারাও জিততে জানে। এ টুর্নামেন্টে এসে তারা প্রমাণ দিচ্ছে, আগে দিতে পারেনি। ভালো দল তো তারাই, যারা চাপকে জয় করতে পারে। চাপের কারণে দিশেহারা হয়ে যায়নি। বাংলাদেশ আজ সেটা পেরেছে। আরেকটা বিষয়, বাংলাদেশ যে ক্রিকেটে ধীরে ধীরে ভালো দলে পরিণত হচ্ছে, সেটা আজ প্রমাণ করতে পেরেছে তারা।

শেষ মুহূর্তের ফিনিশিংয়ের জন্য মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং মাশরাফি অবশ্যই কৃতিত্ব পাওয়ার দাবিদার। মাশরাফি যে পরপর দুটি চার মেরে ৮ রান করে দিল, খেলার মোড় তখনই ঘুরে গেছে। বাংলাদেশের জয়ের জন্য তখন ওই দু’টা চার খুবই দরকার ছিল। এরপর রিয়াদের বাউন্ডারিটা দারুণ ফিনিশিং এনে দিয়েছে। রিয়াদ বাংলাদেশের একজন গুড ফিনিশার। যখন থেকে সে প্রতিষ্ঠা পেতে শুরু করেছে, তখন থেকে ৬ কিংবা ৭ নাম্বারে নেমে দারুণ ফিনিশিংয়ের কাজ করে গেছে। আর মাশরাফি ইজ অ্যা গ্রেট ক্যাপ্টেন অ্যান্ড গ্রেট মোটিভেটর। তার নেতৃত্ব এবং পরিচালনায় বাংলাদেশ এখন ক্রিকেটে অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

বাংলাদেশের ব্যাটিংটা ভালো হয়েছে শুধুমাত্র ভালো বোলিংয়ের কারণে। আমি আগে থেকেই বলে আসছিলাম, বাংলাদেশ যদি ব্যাটিংটা একটু ভালো করে, তাহলে বোলিংয়ে ম্যাচ বের করে আনা খুবই সহজ ব্যাপার হবে। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচছাড়া পরের সব ম্যাচেই খুব ভালো বোলিং করেছে। আজকে প্রথম থেকে ছিল দুর্দান্ত। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ সুপার বোলিং করেছে।

বোলিংয়ে মুস্তাফিজ ছিলেন না। এমনিতেই পরীক্ষিত সৈনিক। তার অনুপস্থিতি বাংলাদেশ দলকে ভোগাবে বলেই ধারণা করেছিলাম। কারণ, টি-টোয়েন্টিতে মুস্তাফিজ, তামিম- এরা  হচ্ছে চ্যাম্পিয়ন ক্রিকেটার; কিন্তু দেখা গেলো, মুস্তাফিজকে ছাড়াও দারুণ বোলিং করেছে বাংলাদেশ। অর্থাৎ মোট কথা হলো, বোলিং, ব্যাটিং এবং ফিল্ডিং- তিন বিভাগেই আজ পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়েছিল বাংলাদেশ। সে কারণেই এমন একটা জয় পেয়েছে টাইগাররা।

পাকিস্তানি বোলিংয়ের কথা যদি বলতে যাই, তাহলে আলাদাভাবেই মোহাম্মদ আমিরের বোলিংয়ের কথা বলতে হয়। প্রথম থেকেই অসাধারণ প্রতিভাধর ছিল। এরপর ৫ বছরের বড় একটা বিরতি। সেখান থেকে ফিরে আবার ধারাবাহিক একটা পারফরম্যান্স করে যাওয়াই প্রমাণ করে, মোহাম্মদ আমির অসাধারণ একজন ক্রিকেটার। শুধু পাকিস্তানই নয়, ক্রিকেট বিশ্বের একটা সম্পদ সে। শেন ওয়ার্ন, মুরালি, ওয়াসিম আকরামরা যেমন ছিলেন, তেমনি একজন ক্রিকেটার হওয়ার যোগ্যতা রাখে সে।

লেখক: বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক ওপেনার

আইএইচএস/বিএ

আরও পড়ুন