ভিডিও EN
  1. Home/
  2. খেলাধুলা

কিংবদন্তি ফুটবলার ফজলুর রহমান আরজু আর নেই

প্রকাশিত: ০৪:২৪ পিএম, ২২ মার্চ ২০১৬

রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত কিংবদন্তি ফুটবলার ফজলুর রহমান আরজু আর নেই। আজ ২২ মার্চ মঙ্গলবার সকালে হালিশহরে নিজ বাসায় বার্ধক্য জনিত কারণে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নালিল্লাহে... রাজিউন)। মৃত্যুকালে এ কিংবদন্তি ফুটবলারের বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি দীর্ঘদিন রোগাক্রান্ত ছিলেন বলে তার পারিবারিক সুত্র জানায়।

আরজু’র ছেলে সুইডেন প্রবাসী আরিফ জানান,  আগামীকাল তারা বাবার দাফন হবে আড়াইহাজার থানার দুপ্তারা গ্রামে।
ক্রীড়া জগতে ৫০ ও ৬০ এর দশকে যেসব রত্ন উপমহাদেশে খেলাধুলায় তাদের নৈপুণ্যতায় কোটি কোটি মানুষকে আনন্দ দিয়েছিলেন তাদের মাঝে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত একজন হচ্ছেন কিংবদন্তি ফুটবলার ফজলুর রহমান আরজু।

যে সব সংগঠকদের অক্লান্ত পরিশ্রম আর তাদের ঘামে আজকের ক্রীড়া জগত সমৃদ্ধ ক্রীড়া জগতে যাদের অবদান এ দেশের ইতিহাস হয়ে আছে আরজু তাদেরই একজন। রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ফজলুর রহমান আরজু ক্রীড়াবিদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে অক্লান্ত চেষ্টা করেন। চট্টগ্রাম কাস্টমসে ক্রীড়া সংগঠক হিসাবে তিনি তার চাকুরীর জীবনে অসংখ ক্রীড়াবিদের কর্মসংস্থান করে দিয়ে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন ।

বাবার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ছেলে আরিফ জানান, আমার বাবার ক্রীড়া নৈপুণ্যের কথা শুনেছি ১৯৪৯ সালে লীগ চ্যাম্পিয়ন ইপি জিমখানা দলের হয়ে শিরোপা জয়ের পেছনে তার একক নৈপুণ্যের অবদানই ছিল বেশি। ১৯৫১ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় ঐতিহ্যবাহী ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, তিনি ছিলেন তখন ওই ক্লাবের খেলোয়াড়। ১৯৫২ সালে চ্যাম্পিয়ন হয় বিজি প্রেস। ১৯৫২ সালেই পাকিস্তানের জাতীয় ফুটবলের আসর বসে ঢাকায়। ঢাকায় অনুষ্ঠিত জাতীয় ফুটবল সে সময় ব্যাপক সাড়া জাগায়।

১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত যারাই আরজুর খেলা দেখেছেন তাদের মুখে শুনেছি, আরজু ছিলেন একজন অপ্রতিরোধ্য ফুটবলার। বল নিয়ে তার ছুটে চলার গতিকে আটকে দেবার মত তখনকার দিনে ঢাকার মাঠে কাউকে দেখা যায়নি। ১৯৫০ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ঢাকার লীগ শিরোপা ছিল ওয়াল্ডারার্স ক্লাবের দখলে, আর ওই সময়টার ফুটবলের মাঠে রাজত্ব করে বেড়িয়েছেন আরজু।

‘৫৩ থেকে ’৫৫ এ তিন বছর ওয়ান্ডারার্স চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যতম নায়কই ছিলেন আরজু। এরপর ‘৫৬ হতে ‘৫৮ সাল আরজু খেলেন ঢাকা মোহামেডানে। তার নেতৃত্বেই ১৯৫৭ সালে প্রথমবারের মতো লীগ শিরোপা লাভ করে মোহামেডান। যদিও ’৫১ সালে আরজুর ঢাকা লীগের সূচনাটা ছিলো ওয়ারী ক্লাবের হয়ে। এর ফাঁকে আজাদের হয়ে আগাখান গোল্ড কাপও খেলেছিলেন তিনি। কলকাতার আইএফএ শীল্ডও খেলেছেন ওয়ারী ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের হয়ে।

১৯৫৫ সালে ওয়ান্ডারার্স ছেড়ে যোগ দেন মোহামেডানে। সেখানে তাঁর অধিনায়কত্বে প্রথম বছর লীগ রানার্সআপ হয় সাদা-কালোরা। টানা তিন বছর মোহামেডানে খেলার পর ১৯৫৮ সালে অবসরে যান আরজু। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি খেলোয়াড় গড়ার কাজে মন দেন। অবসর নেওয়ার পর সেনাবাহিনী, নৌ বাহিনী, বিকেএসপি ও ফৌজদরহাট ক্যাডেট কলেজে ফুটবল প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। জনপ্রিয় কিংবদন্তি ফুটবলারের মৃত্যুতে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

আইএইচএস/আরআইপি