ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ভ্রমণ

সাত গম্বুজ মসজিদ ও অজানা সমাধির গল্প

সাজেদুর আবেদীন শান্ত | প্রকাশিত: ০১:৪৯ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২৫

শুক্রবারের কোনো এক ঝলমলে ছুটির দিনে ঢাকার ভেতরেই ঘুরে আসতে পারেন মোহাম্মদপুরের সাত গম্বুজ মসজিদ ও অজানা সমাধি থেকে। ঢাকার কোলাহল থেকে কিছুটা দূরে এই স্থাপত্য আপনাকে অনেকটা প্রশান্তি দিবে। আসুন প্রথমেই এই সাত গম্বুজ মসজিদের ইতিহাস জেনে নেওয়া যাক।

১৬৮০ খ্রিস্টাব্দ। মোঘল সাম্রাজ্যের শাসন চলছে তখন বাংলায়। ঢাকার সুবেদার ছিলেন শায়েস্তা খাঁ। তারই পুত্র উমিদ খাঁ মোহাম্মদপুর এলাকায় নির্মাণ করেন এক অসাধারণ মসজিদ। যার ছাদে রয়েছে সাতটি গম্বুজ। এই সাত গম্বুজের জন্যই এর নাম ‘সাত গম্বুজ মসজিদ’।

সাত গম্বুজ মসজিদ ও অজানা সমাধির গল্প

মসজিদটি মোঘল স্থাপত্যরীতিতে তৈরি। এটি লালবাগ দুর্গ মসজিদ এবং খাজা আম্বর মসজিদ এর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। মসজিদটি ১৫ ফুট উঁচু এক প্ল্যাটফর্মের উপর নির্মিত। মসজিদের উপরে তিনটি বড় গম্বুজ এবং চার কোণায় ছোট চারটি গম্বুজ স্থাপিত, যা মসজিদটির ভারসাম্য রক্ষা করে। মসজিদের চার কোণায় মোঘল মিনারের আদলে তৈরিকৃত মিনার ও খিলানযুক্ত প্রবেশপথ রয়েছে। যার স্থাপত্যগুণ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।

মসজিদের দেয়ালে রয়েছে মনোমুগ্ধকর অলঙ্করণ। ইটের উপর খচিত কারুকাজ, সিমেট্রিকাল খিলান এবং নকশাবহুল মেহরাব আজও সেই সময়ের দক্ষ শিল্পীদের কাজের নিদর্শন বহন করে।

মসজিদের ভেতরে চার কাতারে প্রায় ৯০ জন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। মসজিদের সামনে একটি বড় উদ্যান আছে। অনেক আগে এর পাশ দিয়ে বয়ে চলত বুড়িগঙ্গা নদী। শুধু তাই না বড় বড় লঞ্চ, স্টিমার ভিড়ত এ মসজিদের সামনের ঘাটে। আজ কেবলই তা স্মৃতি।

সাত গম্বুজ মসজিদ ও অজানা সমাধির গল্প

অজানা সমাধি

মসজিদ থেকে কয়েকশো গজ দূরে একটি সমাধি রয়েছে। স্থানীয়রা একে বলেন ‘অজানা সমাধি’। এই সমাধির স্থাপত্যও মোঘল ধাঁচের। বাইরের দিক থেকে চতুষ্কোণ কিন্তু ভেতরে অষ্টকোণাকৃতি। এর উপরে রয়েছে ছোট একটি গম্বুজ। কার কবর এটি তা আজও নিশ্চিতভাবে কেউ জানে না। ইতিহাসবিদদের অনুমান, সম্ভবত মসজিদের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বা কোনো সুফি সাধকের কবর এটি। আবার কেউ কেউ মনে করেন, এটি শায়েস্তা খাঁর মেয়ের সমাধি। সমাধিটি ‘বিবির মাজার’ বলেও খ্যাত।

বেশ কিছুদিন আগে সমাধিক্ষেত্রটি পরিত্যক্ত এবং ধ্বংসপ্রাপ্ত ছিল। বর্তমানে এটি সংস্কার করা হয়েছে। এখন এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। পাশেই আছে মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া, তাজমহল রোড-এখানকার খাবারও বিখ্যাত। ভোজনরসিকরা চাইলে এ জায়গার কাবাব, চাপ, বিরিয়ানি স্বাদ নিতে পারেন।

সাত গম্বুজ মসজিদ ও অজানা সমাধির গল্প

কীভাবে যাবেন?

মোহাম্মদপুরে রিং রোড ধরে মণিপুরীপাড়া বা বসিলা রোডের দিক থেকে আসলে মসজিদের সাইনবোর্ড চোখে পড়বে। সরু একটি গলি দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করলে পূর্বমুখী মূল মসজিদটিকে দেখা যাবে। এছাড়া ব্যক্তিগত যানবাহন অথবা রিকশায় সহজেই আসা যায় এই মসজিদে।

আরও পড়ুন

কেএসকে/এমএস

আরও পড়ুন