একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, একদিনের বিভীষিকা, এখনো থামেনি মানুষের ভিড়
একটি শান্ত শিক্ষাঙ্গন, যেখানে প্রতিদিন ঘন্টাধ্বনিতে মুখরিত হয় আঙিনা-সেই মাইলস্টোন কলেজ এখন যেন স্মরণকালের বিভীষিকার এক দৃশ্যপট। বিমান বিধ্বস্তের সেই ভয়াল ঘটনার পর কেটে গেছে বেশকিছু ঘণ্টা, তবুও থামেনি মানুষের কৌতূহলী ভিড়, থামেনি স্বজন হারানোদের কান্না। যেখানে বই খোলা থাকার কথা ছিল, সেখানে এখন ছড়িয়ে আছে বিমানের ধ্বংসাবশেষ, আর আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা আতঙ্কিত চোখ। ছবি: হাসান আদিব
-
বিমান বিধ্বস্তের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে পুরোদমে। পাশে দাঁড়িয়ে কাঁদছেন অভিভাবকরা, কেউ খুঁজছেন নিখোঁজের খবর, কেউবা শুধু নিঃশব্দে তাকিয়ে আছেন ধ্বংসস্তূপের দিকে-যেন বাস্তব নয়, কোনো দুঃস্বপ্ন দেখছেন।
-
রাজধানীর উত্তরা এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো সেই ছোট বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার অনেকক্ষণ পরও সরেনি উত্তেজনার পারদ। মাইলস্টোন কলেজের ঠিক পাশেই ঘটেছে দুর্ঘটনাটি, যেখানে ছাত্রছাত্রীদের চলাফেরা ছিল প্রতিনিয়ত। দুর্ঘটনার পর থেকেই বিমানটির ধ্বংসাবশেষ ধীরে ধীরে একে একে বের করে নিচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস, সিভিল এভিয়েশন ও বিমানবাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
-
চলছে তদন্ত, নেওয়া হচ্ছে নমুনা। চারপাশে ব্যারিকেড টানিয়ে সীমিত রাখা হয়েছে প্রবেশাধিকার। তবুও আশপাশে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন। কেউ ভিডিও করছেন, কেউ ছবি তুলছেন, কেউবা শুধু দাঁড়িয়ে রয়ে গেছেন দীর্ঘ সময় ধরে।
-
যে কলেজে ছেলেমেয়েরা প্রতিদিন পড়াশোনা করতে আসে, সেই জায়গায় এভাবে একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাবক মহল। তাদের চোখে মুখে হতাশা, কণ্ঠে ক্ষোভ।
-
পুলিশ ও আনসার সদস্যদের চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ স্পষ্ট। বারবার অনুরোধ করেও সরানো যাচ্ছে না কৌতূহলী জনতাকে। কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যাচ্ছে না জনস্রোত। ফলে তদন্তকারী দল এবং উদ্ধারকার্য চালানো বাহিনীর কাজ ব্যাহত হচ্ছে। এমনকি গণমাধ্যমকর্মীরাও বাধা পাচ্ছেন সঠিকভাবে কাজ করতে।
-
এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশে এমনভাবে বিমান ওড়ানো হয়েছিল? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি একটি প্রশিক্ষণ বিমান ছিল। তবে আবাসিক এলাকা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এত কাছ দিয়ে ওড়ার অনুমতি কীভাবে দেওয়া হয়েছিল-সেই প্রশ্ন তুলছে সচেতন নাগরিকরা। এই দুর্ঘটনা যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সেই দাবি উঠেছে সর্বস্তর থেকে।