শীত এলেই সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা আর হালকা জ্বরে ভোগেন অনেকেই। ঠান্ডা আবহাওয়ায় শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়ে। ঠিক এই সময়েই কাজে আসে ঘরোয়া অথচ কার্যকর পানীয় — তুলসি পাতার চা।
১. সর্দি-কাশির চিকিৎসা
আয়ুর্বেদ ও প্রাচীন চিকিৎসাশাস্ত্রে তুলসিকে ঔষধি গাছ বলা হয়। তুলসি পাতায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল উপাদান। এসব উপাদান শরীরকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। শীতে ভাইরাসজনিত সর্দি-কাশি বা ফ্লু হলে তুলসি চা গলা আর বুকে আরাম দেয়। এটি কফ পাতলা করে, শ্বাসনালির প্রদাহ কমায় এবং কাশি প্রশমিত করতে সহায়ক।
২. মোটের ওপর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
শীতকালে তুলসি চা খাওয়ার সবচেয়ে বড় উপকারিতা হলো রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। তুলসিতে থাকা ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে সক্রিয় করে। নিয়মিত তুলসি চা পান করলে ঠান্ডাজনিত সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে। বিশেষ করে যারা বারবার সর্দি বা গলা ব্যথায় ভোগেন, তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী।
৩. হজমে সহায়ক
হজমের ক্ষেত্রেও তুলসি চা কার্যকর। শীতে অনেকের হজমের সমস্যা, গ্যাস বা পেট ফাঁপার অভিযোগ বাড়ে। তুলসি চা হজম এনজাইমের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের অস্বস্তি কমায়। একই সঙ্গে এটি শরীরের মেটাবলিজম স্বাভাবিক রাখতে সহায়ক।
৪. মানসিক স্বাস্থেও উপকার করে
তুলসি চা মানসিক চাপ কমাতেও ভূমিকা রাখে। শীতকালে অলসতা ও মনমরা ভাব অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। তুলসি একটি প্রাকৃতিক অ্যাডাপ্টোজেন, যা স্ট্রেস হরমোন কমাতে সাহায্য করে। দিনে এক–দুই কাপ তুলসি চা মন ভালো রাখতে এবং ক্লান্তি দূর করতে সহায়ক হতে পারে।
তুলসি চা তৈরি করাও সহজ। কয়েকটি তাজা তুলসি পাতা ভালো করে ধুয়ে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিতে পারেন। স্বাদ ও উপকারিতা বাড়াতে চাইলে অল্প আদা বা মধু যোগ করা যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত চিনি না দেওয়াই ভালো।
শীতকালে তুলসি পাতার চা শুধু উষ্ণতা দেয় না, বরং শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখে। সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে হজম ও ইমিউনিটি—প্রাকৃতিক উপায়ে সুস্থ থাকতে চাইলে তুলসি চা হতে পারে দৈনন্দিন অভ্যাসের অংশ।
সূত্র: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন, ইন্ডিয়া; জার্নাল অব আয়ুর্বেদিক অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ মেডিসিন
এএমপি/এএসএম