প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, এবারের বিজয় দিবস হোক জাতীয় জীবনে নতুনভাবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার দিন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের বিজয়ের মধ্য দিয়ে উদিত স্বাধীনতার প্রভাত পরবর্তী সময়ে বহুবার কর্তৃত্ববাদ ও কুশাসনের অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়েছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমরা আবারও বৈষম্য, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার সুযোগ পেয়েছি।
ড. ইউনূস বলেন, একটি সুশাসিত ও প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার যে ব্যাপক সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তা এখন জনগণের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে সফল পরিণতির দিকে এগোচ্ছে। আমি আশা করি, এসব উদ্যোগের ফলে কর্তৃত্ববাদ নির্মূল হবে এবং রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে জনগণকেন্দ্রিক ও টেকসই উন্নয়নের পাশাপাশি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে। ১৬ ডিসেম্বর, ‘মহান বিজয় দিবস’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ১৬ ডিসেম্বর—আমাদের মহান বিজয় দিবস। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি এক অবিস্মরণীয় ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। ১৯৭১ সালের এই দিনে নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের পর আমরা অর্জন করি বহুল আকাঙ্ক্ষিত বিজয়। অগণিত শহীদের আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীন জাতীয় পরিচয় এবং আমাদের লাল-সবুজের পতাকা। এ মহান উপলক্ষে দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত সকল বাংলাদেশিকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতার দীর্ঘ সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী বীর শহীদদের প্রতি জানাই আমার গভীর শ্রদ্ধা। তাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ আমাদের অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়ানোর শক্তি জোগায় এবং প্রতিটি সংকট ও সংগ্রামে মুক্তির পথে আমাদের পথনির্দেশ করে।
তিনি বলেন, এই বিজয় দিবস হোক জাতীয় ঐক্যের নতুন আহ্বান। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে যে গণতান্ত্রিক রূপান্তর শুরু হয়েছে, তার মাধ্যমে জনগণের প্রকৃত ক্ষমতায়ন রক্ষায় যে কোনো মূল্যে আমরা আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করি।
অধ্যাপক ইউনূস নতুন প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ, সুখী ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আসুন যে স্বাধীনতা আমরা অপরিসীম ত্যাগের বিনিময়ে অর্জন করেছি, তার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে ধর্ম, জাতিসত্তা কিংবা সম্প্রদায় নির্বিশেষে শান্তি ও সমৃদ্ধির পথে আমরা হাতে হাত রেখে এগিয়ে চলি।
এমইউ/এমএমকে