আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারে ‘প্রহসনের’ নির্বাচন, ৫০% এর বেশি ভোট পড়ার দাবি জান্তার

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা জানিয়েছে, দেশটিতে তাদের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রথম ধাপে যোগ্য ভোটারদের মধ্যে ভোটার উপস্থিতি ৫০ শতাংশের বেশি ছিল।

২০২১ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, যার পর থেকে দেশটি গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। গত রোববার তারা এক মাসব্যাপী ধাপে ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু করে, যা জনগণের হাতে আবার ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

তবে মানবাধিকার কর্মী ও পশ্চিমা কূটনীতিকরা এই নির্বাচনকে নিন্দা জানিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, ভিন্নমত দমনে কঠোর দমননীতি চলছে এবং প্রার্থী তালিকায় সামরিক বাহিনীর ঘনিষ্ঠদের আধিক্য রয়েছে, যা সেনাবাহিনীর শাসন দীর্ঘায়িত করতে পারে।

মিয়ানমারের প্রধান সামরিকপন্থি দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) এই সপ্তাহে নির্বাচনের প্রথম ধাপে বিপুল জয়ের দাবি করেছে। একই সঙ্গে জান্তা অভিযোগ করেছে, সপ্তাহান্তে বিদ্রোহীরা ভোটকেন্দ্র ও সরকারি ভবনে হামলা চালিয়েছে।

জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন এক রেকর্ডকৃত বার্তায় জানান, প্রথম ধাপে ভোট দেওয়ার যোগ্য ১ কোটি ১৬ লাখের বেশি মানুষের মধ্যে ৫২ শতাংশ ভোট দিয়েছেন, অর্থাৎ ছয় মিলিয়নেরও বেশি ভোটার।

মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক দেশগুলোতেও ৫০ শতাংশের বেশি ভোটার উপস্থিতি দেখা যায় না।

তিনি আরও বলেন, এই সফল নির্বাচন আমাদের সরকারের বিজয় নয়। এটি আমাদের দেশ ও জনগণের বিজয়।

স্বাধীনতার পর মিয়ানমারের ইতিহাসের বেশিরভাগ সময়ই দেশটি সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। পরে প্রায় এক দশক বেসামরিক সরকার ক্ষমতায় ছিল।

তবে ২০২০ সালের নির্বাচনে নোবেলজয়ী অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) দল সামরিকপন্থি প্রতিদ্বন্দ্বীদের বড় ব্যবধানে পরাজিত করার পর, সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ব্যাপক ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তুলে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেন।

২০২০ সালের নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল প্রায় ৭০ শতাংশ।

কিন্তু আগের নির্বাচনে ভোট দিতে লাইনে দাঁড়ানো বিপুলসংখ্যক তরুণ ভোটারকে রোববারের ভোটে দেখা যায়নি।

সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি ছেড়ে বহু মানুষ বিদেশে চলে গেছে।

এছাড়া যারা এখনও দেশে রয়েছেন, তাদের অনেকেই এই নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী নন। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই ভোটকে সামরিক শাসনকে নতুনভাবে বৈধতা দেওয়ার জন্য সাজানো এক ‘প্রহসন’ বলে অভিহিত করেছে।

সূত্র: এএফপি

এমএসএম