চোখে তার সানগ্লাস। গায়ের ফুলহাতা শার্ট। শার্টটি কালো প্যান্টের সঙ্গে ইন করা। কোমরে কালো বেল্ট। প্যান্টটি আবার পায়ের মোজার ভেতরে গুঁজে দেয়া। পায়ে পেগাসাস কেডস, হাতে কালো ছাতা। দেখতে ‘ফুল জেন্টেলম্যান’। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দায়িত্ববোধের দিক থেকে অন্যসব সাধারণ মানুষের তুলনায় একটু বেশি বললেই চলে। এর মধ্যে অন্যতম হলো আপনি তাকে দাওয়াত দেন আর না দেন তিনি নিজ দায়িত্বে সবার আগে আপনার বাড়িতে উপস্থিত হয়ে খেয়ে আসবেন। গ্রামের কার বাড়িতে বিয়ে, খাৎনাসহ অন্যান্য অনুষ্ঠান হচ্ছে এটা কেউ জানুক আর না জানুক তিনি অবশ্যই জানেন।এমনই এক আজব মানুষের সঙ্গে শুক্রবার সকালে দেখা হয় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদে। সেখানে তিনি ত্রাণের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন।এই মানুষটির নাম মোহন খন্দকার। বয়স ৬০ বছর পার হয়েছে কিছুদিন আগে। বাড়ি মাতবরের ডাঙ্গি। তবে এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে মোহন খন্দকার একজন খুব সহজ সরল ও সাদাসিধে মানুষ। তাকে যতই রাগ অথবা গালিগালাজ করেন না কেন বিনিময়ে তিনি আপনাকে দেবেন মুখ ভরা হাসি।ত্রাণ পাওয়ার পর কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বললেন, ত্রাণ তো আমি নিই না, দিলো তাই নিলাম। আমার অবশ্য একটা বিয়ের দাওয়াত আছে সেখানে যেতে হবে। মোকলেস মেম্বার জোর করে স্লিপ ধরিয়ে দিল তাই ত্রাণ নিতে এলাম। না হলে উনি আবার মন খারাপ করবেন।দাওয়াত কোথায় জানতে চাইলে তিনি বললেন, মাতবর চেয়ারম্যানের বাড়িতে।মোহন বললেন, আমার দুই ছেলে। বড় ছেলে উজ্জল রাজমিস্ত্রি, সে যা আয় করে সেগুলোই খাই।মোহনের ব্যাপারে ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য ফজলুর রহমান খান বলেন, তিনি আগে সার্কাসে কাজ করতেন। সার্কাস বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এরপর থেকে তিনি শুধু এলাকায় দাওয়াত খেয়ে বেড়ান।এমএএস/এনএফ/পিআর