শামীমের ছাদ বাগানে ৮০ রকমের মরুর গোলাপ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি চাঁপাইনবাবগঞ্জ
প্রকাশিত: ১২:২৩ পিএম, ২৩ নভেম্বর ২০২৩

ইসমাইল খান শামীম একজন উদ্যোক্তা। কাজ করেন আম চাষিদের জন্য। নিজেও তৈরি করেছেন বিশাল আম বাগান। তাই আম চাষি হিসেবেই সবার কাছে পরিচিত। তবে ছোটবেলা থেকে তার পছন্দ গাছপালা। ফলে আম ব্যবসার পাশাপাশি বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন মরুভূমির ফুল অ্যাডেনিয়াম বা ডেজার্ট রোজ। ছাদ তার অনন্য কাজের একটি অংশ। এখন সেই বাগানে আছে ৮০ রকমের অ্যাডেনিয়াম বা মরুর গোলাপ।

জানা যায়, ১৭৫২ সালে প্রথম কেনিয়ায় এই ফুলের গাছ খুঁজে পাওয়া যায়। ফুলটি প্রধানত মরুভূমি অঞ্চলে দেখা যায়। বর্তমানে পৃথিবীর সর্বত্র অ্যাডেনিয়ামের দেখা পাওয়া যায়। অ্যাডেনিয়াম বা ডেজার্ট রোজকে বলা যেতে পারে ‘মরুর গোলাপ’।

in-(3).jpg

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার পাইলিং মোড় এলাকার খানপাড়ার বাসিন্দা ইসমাইল খান শামীম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘কয়েক বছর আগে আমি থাইল্যান্ড গিয়েছিলাম। সেখানে বেশ কিছু স্থানে অ্যাডেনিয়াম বা মরুর গোলাপ দেখে মুগ্ধ হই। তাদের কাছে জানতেও চাই, এই মরুর গোলাপ কি বাংলাদেশে চাষ করা সম্ভব? তারা বলেন, এটি শুধু মরুভূমির ফুল হওয়ায় বাসায় চাষ করে সফল হওয়া সম্ভব নয়।’

আরও পড়ুন: লাল পিঁপড়ার ডিম বিক্রি করেই চলে সংসার

তিনি বলেন, ‘কিছুদিন পর বাংলাদেশে এসে খোঁজ নিলাম এই মরুর গোলাপের। বেশ কিছু ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিলাম। পরে একজন আমার পোস্টে সাড়া দিয়ে মরুর গোলাপের চারা দিতে চাইলেন। তার কাছ থেকে মূলত মরুর গোলাপের চারা নিয়ে ২০১৯ সালে চাষ শুরু করি।’

in-(3).jpg

শামীম বলেন, ‘এখন আমার ছাদ বাগানে প্রায় ৮০ রকমের অ্যাডেনিয়াম ফুলের গাছ আছে। আমার কিছু কিছু গাছ আছে, যা এখন বিক্রি হবে ১০ হাজার টাকার বেশি দামে। কিন্তু আমি চারা কিনেছিলাম মাত্র ৩০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকায়। তাই আমার মনে হয়, এই মরুর গোলাপ বাণিজ্যিকভাবেও চাষ করা সম্ভব।’

এ উদ্যোক্তা বলেন, ‘আমার গাছগুলোয় লাল, মেরুন, গোলাপি, ঘিয়ে, সাদা, হলদে, নীলাভ, কালোসহ ৮০ রকমের ফুল ফোটে। যা দেখতে আসেন দূর-দূরান্তের মানুষ। এতে আমার খুব ভালো লাগে। আগামীতে ইচ্ছা আছে বাণিজ্যিকভাবে মরুর গোলাপ চাষ করার। ফুলটি মরুভূমির উদ্ভিদ। এটি ভার্মি কম্পোস্ট, হাঁড়ের গুঁড়া, বেলে দোআঁশ মাটি দিয়ে টবে লাগাতে হয়।’

আরও পড়ুন: সমুদ্রের অলস প্রাণী শাপলা পাতা মাছ

ইসমাইল খান শামীমের ছাদ বাগান দেখতে এসেছেন পাশের এলাকার মনিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমি অনেকবার শুনেছি শামীম ভাইয়ের ছাদে অনেক সুন্দর ফুলের গাছ আছে। তাই দেখতে এসেছি। দেখে মন ভরে গেল। এত সুন্দর ফুলের গাছ এর আগে আমি কখনো দেখিনি।’

in-(3).jpg

পাশের গ্রামের বাসিন্দা আতিকুর রহমান জ্যাকি বলেন, ‘শামীমের ছাদ বাগানে মাঝে মাঝেই আসা হয়। দেখতে খুব ভালো লাগে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি তুলে আপলোড দিলেও সাড়া পাওয়া যায়। তাই মাঝে মাঝে আসা হয়।’

শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘উপজেলায় অ্যাডেনিয়ামের চাষ অনেক কম। এটি মূলত মরুভূমিতে হয়ে থাকে। তবে এখন বাণিজ্যিকভাবেও অনেক স্থানে চাষ হচ্ছে। এ উপজেলায় সেটি এখনো হয়ে ওঠেনি। আগামীতে এই মরুর গোলাপ যদি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হয়। তবে অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।’

সোহান মাহমুদ/এসইউ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।