ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কখন হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে চলতি বছরের শেষ দিকে এই নির্বাচন হতে পারে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেই নির্বাচনে অংশ নিতে এখন থেকেই ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। একই সঙ্গে তারা নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কারও চান।
Advertisement
সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই জেলায় জেলায় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা শুরু করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান এরই মধ্যে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সফর করছেন। আর জনসভার মাধ্যমে নিজেদের প্রার্থীদের পরিচয়ও করিয়ে দিচ্ছেন।
জামায়াতের একাধিক কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে আসনভিত্তিক প্রার্থী দিচ্ছেন তারা। এর মাধ্যমে নির্বাচনের আগে তাদের প্রার্থীদের সাধারণ মানুষের কাছে পরিচিত মুখ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। দীর্ঘ ১৬ বছর নির্বাচন থেকে দূরে থাকা এবং আওয়ামী লীগের নির্যাতন-নিপীড়নের কারণে ভোটকেন্দ্রিক দৌড়ঝাঁপ হয়নি। ঘোষিত প্রার্থীরা জনগণের মধ্যে তাদের জনসেবা ও সামাজিক কাজের মাধ্যমে নিজেদের প্রভাব বৃদ্ধি করতে পারেন। এছাড়া প্রার্থীর নেতৃত্বে দলীয় অবস্থান সুসংহত করা এবং জনগণের আরও কাছে পৌঁছানোর চেষ্টার অংশ হিসেবেই জামায়াত প্রার্থী ঘোষণা করছে।
‘জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। এরই মধ্যে আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এখন অভ্যন্তরীণভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হচ্ছে।’- জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন বিভাগের সদস্য মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত
Advertisement
৩০০ আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিলেও জামায়াত দেশের শতাধিক আসনে শক্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চায়। সেই কারণে দুটি ক্যাটাগরিও করেছে তারা। ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ৫০টি ও ‘বি’ ক্যাটাগরিতে ৫০টি আসন থাকবে। ভোটের আগে জোটবদ্ধ হলে এই হিসাবের পরিবর্তন হতে পারে।
আরও পড়ুন চলতি বছরের শেষ দিকে সংসদ নির্বাচন হতে পারে: ড. ইউনূস সরকারকে দ্রুত নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান বিএনপির আগে চব্বিশের অপরাধের বিচার, তারপর অন্য কাজ: জামায়াত আমির ইসলামি দলগুলোকে কাছে পেতে ছুটছেন তারানাম প্রকাশ না করার শর্তে জামায়াতের এক শুরা সদস্য জাগো নিউজকে জানান, আগামী নির্বাচনে তরুণদের বেশি সুযোগ দিচ্ছে জামায়াত। জ্যেষ্ঠ নেতারা উপদেষ্টার ভূমিকায় কাজ করছেন। এতে নতুনদের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির চেষ্টা হচ্ছে। জোটে নির্বাচনের ক্ষেত্রে কিছু আসন ছাড়তে হলেও স্থানীয় পর্যায়ে যাতে সেসব নেতা নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে পারেন সে চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি জামায়াতের একটি দূরদর্শী চিন্তা বলেই মনে করেন ওই শুরা সদস্য।
জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন বিভাগের সদস্য ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত জাগো নিউজকে বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী একটি নির্বাচনমুখী দল। এরই মধ্যে আমরা ৩০০ আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। এখন অভ্যন্তরীণভাবে প্রার্থী ঘোষণা করা হচ্ছে। নির্বাচন কাছাকাছি এলে এবং তফসিল ঘোষণার পরে বোঝা যাবে জামায়াত জোটবদ্ধ নির্বাচন করবে নাকি কিছু আসনে কাউকে ছাড় দিয়ে নির্বাচন করবে। সার্বিক পরিস্থিতির ওপর বিষয়টি নির্ভর করছে।’
নির্বাচন কখন চাচ্ছে জামায়াত এমন প্রশ্নের জবাবে ইয়াছিন আরাফাত বলেন, দেশের শহীদ পরিবার ও জনগণের চাওয়া হচ্ছে সংস্কার করার মাধ্যমে দ্রুত নির্বাচন করা। আমরা কিছু দলের কাছে শুনি সংস্কার করতে গেলে নির্বাচনে দেরি হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা চাই, যে জুলুমবাজ সরকার দেশে ক্ষমতায় ছিল, তাদের মতো করে যেন আর কোনো সরকার ক্ষমতায় জুলুম করে না থাকতে পারে। সেজন্য সংস্কার করার পরে নির্বাচন হোক।
Advertisement
‘মৌলিক কিছু সংস্কার করা না গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। এই অবস্থায় নির্বাচন দেওয়া হলে এটা হবে নির্বাচনের জেনোসাইড বা নির্বাচন গণহত্যা। আমরা এটা চাই না। আমরা চাই সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির পর নির্বাচন।’ -জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান
অফিসিয়ালি প্রার্থী ঘোষণা করেনি জামায়াত: আমিরআগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জামায়াত এখনো চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করেনি বলে জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে, সেটা প্রাথমিক সিলেকশন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সিলেট নগরীর কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান তিনি।
আরও পড়ুন সংস্কারের জন্য সরকারকে যৌক্তিক সময় দিতে চান জামায়াত আমির জামায়াতের একার পক্ষে রাষ্ট্র পরিচালনা সম্ভব নয়: শফিকুর রহমান প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন দিন: ডা. তাহের ইসলামি দলগুলোকে কাছে পেতে ছুটছেন তারাএর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সিলেট বিভাগের সর্বস্তরের দায়িত্বশীলদের নিয়ে আয়োজিত অনলাইন বৈঠকে ১৯টি আসনের প্রার্থী ঘোষণা করেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সিলেট অঞ্চলের পরিচালক অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।
এ প্রসঙ্গে রোববার জামায়াত আমির বলেন, ‘ইলেকশন এখনো অনেক দূর। ইলেকশন কাছে এলে দল ফাইনাল সিদ্ধান্ত নেবে। এখন যেটা প্রকাশ করা হয়েছে, সেটা প্রাথমিক সিলেকশন। তখন যাদের নমিনেশন দেওয়া হবে, তারাই প্রার্থী হবেন।’
নির্বাচনের আগে সংস্কার প্রসঙ্গে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘নির্বাচনের আগে মৌলিক সংস্কার প্রয়োজন। মৌলিক কিছু সংস্কার করা না গেলে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব হবে না। এই অবস্থায় নির্বাচন দেওয়া হলে এটা হবে নির্বাচনের জেনোসাইড বা নির্বাচন গণহত্যা। আমরা এটা চাই না। আমরা চাই সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টির পর নির্বাচন।’
বিএনপির জন্য এই প্রার্থিতা ঘোষণা চ্যালেঞ্জ হওয়ার কথা নয়। কারণ প্রতিটি আসনে বিএনপির ১০ জনের বেশি প্রার্থী দেওয়ার মতো লোক আছে। বিএনপি তাদের মধ্যে যোগ্য কাকে প্রার্থী করবে এটিই বড় চ্যালেঞ্জ। -ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান
নির্বাচন ঘিরে যে কোনো দলই প্রস্তুতি নিতে পারেজামায়াতের নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, নির্বাচন কেন্দ্র করে যে কোনো রাজনৈতিক দলই প্রস্তুতি নিতে পারে। তা কখন নেবে সেটি তাদের বিষয়। সামনে নির্বাচন হতেই হবে। সে ক্ষেত্রে যেসব দল আগে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিত না, তারা বর্তমানে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও আগাম শক্তির জানান দিচ্ছে।
এটি জামায়াতের দীর্ঘদিনের জোটসঙ্গী বিএনপির ওপর চাপ কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপির জন্য এই প্রার্থিতা ঘোষণা চ্যালেঞ্জ হওয়ার কথা নয়। কারণ প্রতিটি আসনে বিএনপির ১০ জনের বেশি প্রার্থী দেওয়ার মতো লোক আছে। বিএনপি তাদের মধ্যে যোগ্য কাকে প্রার্থী করবে এটিই বড় চ্যালেঞ্জ।
আরও পড়ুন ছাত্রদের নতুন দল ফেব্রুয়ারিতেই, টার্গেট বিএনপির ভোট ব্যাংক আগামীর বাংলাদেশ তরুণদের হাতে তুলে দেবো: ডা. শফিকুর জামায়াত যেখানে নির্বাচিত হয়েছে এক টাকাও দুর্নীতি হয়নি শান্তি-শৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে নির্বাচনের দিকে এগোতে চায় জামায়াত কাউকে ধর্ম চাপিয়ে দেওয়া হবে না: জামায়াত আমিরজামায়াতসহ ইসলামি দলগুলো জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করলে সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি কেমন হতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবুর রহমান বলেন, বিএনপি ও জামায়াত আলাদা জোট করলে তারা প্রধান হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, যা দেশের রাজনীতির জন্য ভালো।
ঢাকার দুই মহানগরের জামায়াত নেতাদের তথ্যে জানা গেছে, ঢাকার আসনগুলোর জন্য প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে তা জানানো হবে।
চট্টগ্রামের ১৬ আসনে প্রার্থী যারাচট্টগ্রামের ১৬টি আসনেও জামায়াতের প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। দ্রুতই তা ঘোষণা করা হবে। প্রার্থীরা হলেন চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) অধ্যক্ষ নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আলাউদ্দিন শিকদার, চট্টগ্রাম ৪ (সীতাকুণ্ড) আনোয়ারুল সিদ্দিকী, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) ইঞ্জিনিয়ার সিরাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) শাহজাহান মঞ্জুর, চট্টগ্রাম ৭ (রাঙ্গুনিয়া) অধ্যক্ষ আমিরুজ্জামান, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) ডা. আবু নাসের, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি- বাকলিয়া) ডা. ফজলুল হক, চট্টগ্রাম-১০ (খুলশী-পাহাড়তলী-হালিশহর) অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) শফিউল আলম, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) ইঞ্জিনিয়ার লোকমান, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) অধ্যাপক মাহমুদুল হাসান, চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) ডা. শাহাদত হোসাইন, চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) শাহজাহান চৌধুরী ও চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে অধ্যক্ষ জহিরুল ইসলাম।
ফেনীতে শুধু একজনফেনীর তিনটি আসনের মধ্যে শুধু ফেনী-৩ (দাগনভূঞা-সোনাগাজী) আসনে জামায়াতের পক্ষ থেকে ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. ফখরুদ্দিন মানিকের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
বান্দরবান-৩০০ নম্বর সংসদীয় আসনে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
পটুয়াখালীতে প্রার্থী যারাপটুয়াখালী-১ (সদর, মির্জাগঞ্জ ও দুমকি) আসনে জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট নাজমুল আহসান, পটুয়াখালী-২ (বাউফল) আসনে ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে সাবেক জেলা আমির অধ্যাপক শাহ আলম এবং পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনে কলাপাড়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল কাইয়ুমের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
সাঈদীর দুই ছেলের নাম ঘোষণাপিরোজপুর-১ (সদর, ইন্দুরকানি ও নাজিরপুর) আসনে প্রয়াত আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ছোট ছেলে মাসুদ সাঈদী, পিরোজপুর-২ (নেছারাবাদ, কাউখালী ও ভান্ডারিয়ার) আসনে বড় ছেলে শামীম সাঈদী এবং পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে মঠবাড়িয়া উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক শরীফ আব্দুল জলিলের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার বিচার করতে হবে: জামায়াত সেক্রেটারি জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীরা সম্মান ও নিরাপত্তা পাবে জামায়াত একলা চলো নীতি অবলম্বন করেছে: গয়েশ্বর বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের কোনো দূরত্ব নেই: ডা. তাহের ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ জনের নাম ঘোষণাঠাকুরগাঁও-১ (সদর) আসনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য দেলাওয়ার হোসেন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনে (বালিয়াডাঙ্গী-হরিপুর-রানীশংকৈলের একাংশ) জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আব্দুল হাকিম এবং ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে (পীরগঞ্জ-রানীশংকৈলের একাংশ) জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক বেলাল উদ্দীন প্রধান।
শরীয়তপুরের তিনটি আসনে প্রার্থী যারাশরীয়তপুর-১ (পালং-জাজিরা) আসনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি ড. মোশাররফ হোসেন মাসুদ তালুকদার, শরীয়তপুর-২ (নড়িয়া ও সখিপুর) আসনে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন বকাউল এবং শরীয়তপুর-৩ (ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা ও গোসাইরহাট) আসনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আজহারুল ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
নাটোরের চারটি আসনে প্রার্থী ঘোষণানাটোর-১ আসনে লালপুর উপজেলা জামায়াতের আমির এবং লালপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা মো. আবুল কালাম আজাদ, নাটোর-২ আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসের শুরা সদস্য ও জেলা নায়েবে আমির অধ্যাপক মো. ইউনুস আলী, নাটোর-৩ আসনে জেলার অফিস সম্পাদক অধ্যাপক সাইদুর রহমান এবং নাটোর-৪ আসনে বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপজেলা চেয়ারম্যান ও জামায়াতে ইসলামী নাটোর জেলা শাখার সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা আব্দুল হাকিম।
ফরিদপুরের সব আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণাফরিদপুরে নয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত চারটি সংসদীয় আসনের সবগুলোতে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে জামায়াতে ইসলামী। ফরিদপুর-১ আসনে ঢাকা জেলা শাখার শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক ড. ইলিয়াছ মোল্লা, ফরিদপুর-২ আসনে নগরকান্দা উপজেলা জামায়াতের আমির ও উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সোহরাব হোসেন, ফরিদপুর-৩ আসনে জামায়াতের কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য অধ্যাপক আব্দুত তাওয়াব এবং ফরিদপুর-৪ আসনে ভাঙ্গা উপজেলা জামায়াতের আমির ও উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা সরোয়ার হোসেনকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
জেলা জামায়াতের আমির মো. বদরউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে বলেন, ফরিদপুরের চারটি আসনে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সে অনুযায়ী যাচাইবাছাই করে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন সবাই মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই: জামায়াত আমির ভারতের দিকে মাথা ঝুঁকে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা জনগণ মেনে নেবে না সংস্কারের নামে অযথা সময়ক্ষেপণ উচিত হবে না: ডা. তাহের সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সামনে আরও লড়াই আছে: জামায়াত আমির দিনাজপুরের ছয়টি আসনে প্রার্থী যারাদিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের দিনাজপুর শহর শাখার সাবেক সভাপতি, সাবেক কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য এবং তুরাগ থানা জামায়াতের আমির ব্যবসায়ী মো. মতিউর রহমান। দিনাজপুর-২ (বিরল-বোচাগঞ্জ-) আসনে জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য ও বিরল উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মাওলানা এ কে এম আফজালুল আনাম। দিনাজপুর-৩ (সদর) আসনে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, বিমান বাহিনীর সার্জেন্ট (অব.) জেলা জামায়াতের ইউনিট সদস্য অ্যাডভোকেট ময়নুল আলম। দিনাজপুর-৪ (চিরিরবন্দর-খানসামা) আসনে সাবেক জেলা আমির ও চিরিরবন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আফতাব উদ্দিন মোল্লা। দিনাজপুর-৫ (ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর) আসনে জামায়াতের জেলা কর্মপরিষদ সদস্য, পার্বতীপুর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান শিক্ষাবিদ মো. আনোয়ার হোসেন। দিনাজপুর-৬ (নবাবগঞ্জ-বিরামপুর-হাকিমপুর-ঘোড়াঘাট) আসনে দিনাজপুর জেলা শাখার সাবেক আমির এবং জামায়াতের রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য মো. আনোয়ারুল ইসলামের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
শুধু কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে প্রার্থী ঠিক হয়নিকিশোরগঞ্জ-১ (সদর-হোসেনপুর) আসনে মোসাদ্দেক আলী ভুঁইয়া, কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে শফিকুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনে মোহাম্মদ রোকন রেজা, কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনে রমজান আলী এবং কিশোরগঞ্জ-৬ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনে কবির হোসেনের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জ-৩ (করিমগঞ্জ-তাড়াইল) আসনে এখনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি।
ঝিনাইদহের সব আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণাঝিনাইদহের চারটি সংসদীয় আসনে সবগুলোতে দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) দলটির পক্ষ থেকে এ ঘোষণা আসে।
সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন ঝিনাইদহ-১ (শৈলকূপা) আসনে উপজেলা জামায়াতের আমির এ এস এম মতিয়ার রহমান, ঝিনাইদহ-২ (সদর-হরিনাকুণ্ডু) আসনে জেলা আমির অধ্যাপক আলী আজম মো. আবুবকর, ঝিনাইদহ-৩ (কোটচাঁদপুর-মহেশপুর) আসনে কোটচাঁদপুর উপজেলার সাবেক আমির অধ্যাপক মতিউর রহমান ও ঝিনাইদহ-৪ (কালীগঞ্জ-সদর আংশিক) আসনে কালীগঞ্জ উপজেলা আমির মাওলানা আবু তালেব।
ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক আলী আজম মো. আবুবকর বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সারাদেশেই দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করবে কেন্দ্র। এর অংশ হিসেবে ঝিনাইদহ জেলার চারটি সংসদীয় আসনে দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষিত হয়েছে। দলীয়ভাবে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্যায় থেকে পর্যালোচনার পরে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী মাসুদ পারভেজচুয়াডাঙ্গা-১ আসনে জামায়াতের হয়ে নির্বাচন করবেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ। গত ৬ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের সদর উপজেলার আলুকদিয়া ইউনিয়ন কার্যালয় উদ্বোধনকালে জেলা আমির রুহুল আমিন এ ঘোষণা দেন।
সিরাজগঞ্জের ৫ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণাসিরাজগঞ্জের নয়টি উপজেলা নিয়ে গঠিত ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জ পৌর শহরের দারুল ইসলাম একাডেমি হলরুমে অনুষ্ঠিত এক দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে দলের কেন্দ্র থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাঁচটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে জামায়াতের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ড।
জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- সিরাজগঞ্জ-১ (কাজীপুর-সদরের একাংশ) আসনে জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহীনুর আলম, সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক জাহিদুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনে কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) আসনে জেলা নায়েবে আমির অধ্যক্ষ আলী আলম ও সিরাজগঞ্জ-৬ (শাহজাদপুর) আসনে উপজেলা আমির অধ্যাপক মিজানুর রহমান।
রায়গঞ্জ ও তাড়াশ উপজেলা নিয়ে গঠিত সিরাজগঞ্জ-৩ আসনে এখনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। যাচাই-বাছাই করে কিছু দিনের মধ্যে সেটিও ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে দলটি।
সিলেট বিভাগের ১৯ আসনে নাম ঘোষণাসিলেট-১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট-২ আসনে অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, সিলেট-৩ আসনে দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান আহমদ, সিলেট-৪ আসনে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন, সিলেট-৫ আসনে জেলার নায়েবে আমির আনোয়ার হোসেন খান ও সিলেট-৬ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
আরও পড়ুন ইসলাম ধর্মভিত্তিক দলগুলোর জোট কতদূর? স্বৈরশাসকরা একবার পালিয়ে গেলে আর ফিরে আসে না ঘুস-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি: জামায়াত আমির যারা দেশের উন্নয়নে কাজ করবে আমরা তাদের বুকে টেনে নেবসুনামগঞ্জ-১ আসনে জেলা জামায়াতের আমির তোফায়েল আহমেদ খান, সুনামগঞ্জ-২ আসনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মুহাম্মদ শিশির মনির, সুনামগঞ্জ-৩ আসনে সিলেটের এপিপি ইয়াছিন খান, সুনামগঞ্জ-৪ আসনে মুহাম্মদ শামস উদদীন ও সুনামগঞ্জ-৫ আসনে আব্দুস সালাম আল মাদানী।
হবিগঞ্জ-১ আসনে মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি শাহজাহান আলী, হবিগঞ্জ-২ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের শুরা সদস্য শেখ জিল্লুর রহমান আজমী, হবিগঞ্জ-৩ আসনে জেলা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ কাজী মহসিন আহমেদ ও হবিগঞ্জ-৪ আসনে জেলা আমির কাজী মাওলানা মুখলিছুর রহমান।
মৌলভীবাজার-১ আসনে আমিনুল ইসলাম, মৌলভীবাজার-২ আসনে জেলা আমির প্রকৌশলী এম শাহেদ আলী, মৌলভীবাজার-৩ আসনে সাবেক জেলা আমির আব্দুল মান্নান ও মৌলভীবাজার-৪ আসনে আব্দুর রব।
এএএম/এমআইএইচএস/এমএমএআর/জিকেএস