ঈদুল আজহায় টানা ছুটিতে বিভিন্ন বয়সী পর্যটকে ভরে উঠেছে খাগড়াছড়ির প্রধান প্রধান পর্যটন স্পটগুলো। পাহাড়, অরণ্য, ঝরনা ও উপত্যকা ঘেরা জেলার প্রতিটি পর্যটনকেন্দ্রে দর্শনার্থীদের ভিড় দেখা গেছে।
Advertisement
জেলার আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝরনা ও জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক পর্যটকের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে। এবারের ঈদে স্থানীয় পর্যটকদের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলা থেকে খাগড়াছড়িতে ছুটে এসেছেন হাজারো পর্যটক। ঈদুল আজহার ছুটিতে পর্যটক সমাগম কয়েকগুণ বাড়ার সম্ভাবনা পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের।
ঈদ ঘিরে কেউবা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে আবার কেউ বা পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে বেড়ান এ পর্যটন কেন্দ্র থেকে ওই পর্যটন কেন্দ্রে। এবারের ঈদে পাহাড়ের নির্মল সৌন্দর্য উপভোগই যেন তাদের কাছে মুখ্য হয়ে উঠেছে।
সাজেকের প্রবেশদ্বার পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র, রিছাং ঝরনা ও জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্ক পর্যটকদের আকর্ষণের শীর্ষে রয়েছে। আলুটিলার ভিন্নধর্মী লাভ ব্রিজ, অ্যাম্পিথিয়েটার আর রহস্যময় গুহায় পর্যটকদের আনাগোনা চোখে পড়ার মতো। অন্যদিকে জেলা পরিষদ পার্কের ঝুলন্ত সেতুতে উঠতেই বেশি পছন্দ শিশু-কিশোরদের। পাহাড়ের ওপর থেকে আছড়ে পড়া স্বচ্ছ পানির রিছাং ঝরনা ঘিরেও পর্যটকদের আগ্রহের কমতি নেই। এছাড়া পানছড়ির মায়াবিনী লেক, গুইমারার সরোবর ও মাটিরাঙ্গার জলপাহাড়েও রয়েছে পর্যটকদের পদচারণা।
Advertisement
ঈদ সামনে রেখে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট মালিকরা। বেশিরভাগ হোটেলের ৬০-৭০ শতাংশের বেশি কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। হোটেল গাইরিংয়ের সব কক্ষ ১৫ জুন পর্যন্ত বুকিং হওয়ার কথা জানিয়েছেন হোটেলটির ব্যবস্থাপক প্রান্ত ত্রিপুরা।
জানতে চাইলে আবাসিক হোটেল অরণ্য বিলাসের ব্যবস্থাপক আব্দুর রশীদ সাগর বলেন, এরই মধ্যে আমাদের হোটেলের ৪০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। আগামী কয়েকদিন চাপ আরও বাড়বে। ঈদ উপলক্ষ্যে অরণ্য বিলাস ৩০ শতাংশ ছাড় দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ঈদ উপলক্ষ্যে নোয়াখালী থেকে বন্ধুদের সঙ্গে ভ্রমণে আসা কাওছার সজীব বলেন, পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতেই খাগড়াছড়ি আসা। খাগাড়ছড়ির আলুটিলা সুরঙ্গ ও রিছাং ঝরনার সৌন্দর্য উপভোগ শেষে সাজেক ভ্রমণের কথাও জানান এ পর্যটক।
শহরের একঘেয়ে পরিবেশ থেকে মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নিতে পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা চট্টগ্রামের গৃহিণী শিখা দে বলেন, হর্টিকালচার পার্ক, আলুটিলার রহস্যময় সুড়ঙ্গ, রিছাং ঝরনা ঘুরেছি। পাহাড়ের নির্মল পরিবেশ পেয়ে ভীষণ ভালো লাগছে।
Advertisement
জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কের তত্ত্বাবধায়ক থোয়াই অংগ্য মারমা বলেন, ঈদে পার্কে পর্যটকের ভালো সমাগম রয়েছে। সামনের দিনগুলোতে পর্যটকদের উপস্থিতি আরও বাড়তে পারে।
খাগড়াছড়িতে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরনের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে জেলা পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুলিশ কাজ করছে। পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক টহল দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ঈদের লম্বা ছুটিতে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ করতে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে পুলিশের টিম কাজ করছে। পর্যটকরা যেন প্রতারণার শিকার না হন সে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় রিসোর্টগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
এমএন/এমএস