মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে এরই মধ্যে ২৯ জন মারা গেছেন। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ৬৯ জন। যাদের বেশিরভাগই শিশু-কিশোর। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষার্থী-শিক্ষক, অভিভাবকদের পাশাপাশি পুরো দেশ শোকে মুহ্যমান। যারাই দেখছেন, শুনছেন, সবাই বলছেন, নেওয়া যাচ্ছে না এমন কষ্ট। এই কষ্ট এখন শুধু ভুক্তভোগীর পরিবার নয়, কোটি বাংলাদেশির। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমের কল্যাণে ঘরে ঘরে শিশু-কিশোরদের কাছে পৌঁছে গেছে এ ঘটনার মর্মস্পর্শী ছবি-ভিডিও। এতে তৈরি হয়েছে এক ধরনের ট্রমা। এমতাবস্থায় সবার হিলিংয়ের (শারীরিক বা মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠা) জন্য খ্যাতনামা মনোবিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। ট্রমা নিয়ে এই মনোবিজ্ঞানী বলেন, ‘এ ধরনের সমস্যা রিকভার করার জন্য স্টাডি করা দরকার- কারা কারা আক্রান্ত হয়েছে। এরপর তাদের চিকিৎসার আওতায় নিয়ে আসা যাবে। একই ধরনের সমস্যা যেহেতু সবার সেহেতু তাদের সঙ্গে কাউন্সিলিং সেশন করা যেতে পারে। যারা বেশি আক্রান্ত তাদের আলাদা আলাদাও কাউন্সিলিং করা যায়। বাবা-মায়ের সঙ্গেও বসা দরকার, তারাও তো ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছেন। তাদের হিলিং হলে তারাও সন্তানদের সাহস দিতে পারবেন। ট্রমার বাইরে কিছু আছে কি না, সেটা বাচ্চাদের সঙ্গে কথা বলা ছাড়া বোঝা যাবে না।’ আরও পড়ুন
ডা. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ বলেন, ‘কিছু কিছু জিনিস নিজে থেকেই ঠিক হয়ে যাবে। কারণ সব বাচ্চা তো এক রকম না। কেউ বেশি সেনসেটিভ। কেউ কেউ আবার স্বাভাবিক। কারও হিলিং হবে না। কাউন্সিলিংটা খুবই জরুরি।’ বাবা-মা বাচ্চাদের সামনে এগুলো নিয়ে সিরিয়াসনেস দেখাবেন না পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘উদ্বিগ্ন হবে না। বোঝাতে হবে, এটা একেবারেই স্বাভাবিক ঘটনা, যে কারও জীবনে আসতে পারে। এটা থেকে হিলিং হতে সময় লাগবে। কষ্ট লাগাই স্বাভাবিক। বাবা-মা বাচ্চাদের সামনেই কান্নাকাটি করা বা রি-অ্যাক্ট করা যাবে না। কী হলো, কী হবে, এ নিয়ে যদি চরম উদ্বিগ্ন হয়, তাহলে এটি বাচ্চাদের মধ্যেও প্রভাব পড়বে।’ ‘পড়াশোনাসহ যে কোনো বিষয়ে চাপ দেওয়া যাবে না। একেবারে পড়া বন্ধ করাও যাবে না। যতটুকু সম্ভব সহজ করে দেওয়া, যা করতে পছন্দ করে, যে কাজে উৎসাহিত হয়, সেগুলো করা। অর্থাৎ, সারাক্ষণ এসব ইস্যু আলোচনা না করে অন্য ইস্যুতে সম্পৃক্ত রাখা।’ যোগ করেন খ্যাতনামা মনোবিজ্ঞানী ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সেলিনা ফাতেমা বিনতে শহীদ।
এসইউজে/এএসএ/এমএফএ/এমএস