গত চারদিন ধরে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে হার মানলো মাহিয়া তাসনিম মায়া (১৫)। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে মারা যায় সে। একমাত্র মেয়ের এমন মৃত্যুতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা আফরোজা আক্তার বিউটি।
মেয়ের শেষ মুহূর্তের কথা স্মরণ করে তিনি জানান, ২০১৯ সালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান মাহিয়ার বাবা মোহাম্মদ আলী। সেই থেকে একমাত্র সন্তান মাহিয়াকে নিয়েই জীবন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
হাসপাতালের বেডে মাহিয়া তার মাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিল, ‘মা আমার জন্য টেনশন করো না, আমি সুস্থ হয়ে যাবো।’ কিন্তু সেই আশ্বাস আর বাস্তব হলো না।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে মাহিয়ার মরদেহ পৌঁছায় মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার জয়পুর গ্রামে, তার নানা নজরুল ইসলামের বাড়িতে। সকাল সাড়ে ৮টায় জানাজা শেষে তাকে মাদরাসা সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানাজায় অংশ নেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তরিকুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মন্ডল, মুজিবনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান।
এর আগে ২১ জুলাই রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এসময় অন্যদের সঙ্গে দগ্ধ হয় মাহিয়া। সে ইংলিশ ভার্সনের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।
দুর্ঘটনায় তার শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
মাহিয়া ঢাকায় বসবাস করতো মায়ের সঙ্গে। ঢাকার তাদের নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। এ দুর্ঘটনায় গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে প্রতিবেশী সবাই মাহিয়ার মৃত্যুতে শোকাহত।
আসিফ ইকবাল/জেডএইচ/এমএস