সাড়ে তিন বছর পর নতুন নেতৃত্ব আসছে রাজশাহী মহানগর বিএনপির। ১০ আগস্ট বিএনপির সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আসন্ন সম্মেলনকে ঘিরে রাজশাহী মহানগর বিএনপিতে চলছে প্রস্তুতি ও সাংগঠনিক তৎপরতা। দীর্ঘদিন পর নগর বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এই সম্মেলনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর এরশাদ আলী ঈশাকে আহ্বায়ক ও মামুনুর রশিদ মামুনকে সদস্যসচিব করে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় সাড়ে তিন মাস পর আহ্বায়ক কমিটির পরিধি বাড়িয়ে ৬১ সদস্যের করা হয়। তারপর থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে আহ্বায়ক কমিটিতেই রাজশাহী মহানগর বিএনপি চলছে। এই কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি করার দাবিতে কিছুদিন ধরে নানা কর্মসূচি পালন করেন দলের একাংশের নেতাকর্মীরা। তারা আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ আনেন। এমনকি বিভক্ত হয়েছেন কয়েক ভাগে।
তবে রাজশাহী মহানগর বিএনপির সম্মেলন ১০ আগস্ট হবে। গত বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বশীল নেতাদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে। সভায় ভার্চুয়ালি অংশ নেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পরে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী চিঠি দিয়ে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট নেতাদের জানান। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে মহানগর বিএনপিতে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রস্তুতি প্রায় চূড়ান্ত। এরই মধ্যে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে কাউন্সিল সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনকে সফল করতে মহানগরের প্রতিটি ইউনিটে কর্মী সভা, মতবিনিময় ও প্রচার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা জানান, দলকে আরও সংগঠিত ও শক্তিশালী করতেই সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিএনপি পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে এটি হবে ঐতিহাসিক সম্মেলন।
তিনি বলেন, এখন আহ্বায়ক কমিটি আছে, যখন রেগুলার কমিটি হবে তখন দল চাঙা হবে। গণতান্ত্রিকভাবে যাকে নির্বাচিত করবে তিনি নির্বাচিত হয়ে আসবেন। বিএনপি গণতন্ত্র দল গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হবে। এবার প্রায় ৭০০ কাউন্সিলর থাকছে। মনে করেন যে একটা কাউন্সিলর থেকে ২-৩ জন প্রার্থী দাঁড়াবে যাকে ভালো মনে করবে সেই বিজয়ী হবে। আমরা আশা করছি এ সম্মেলনের পর দলের সব বিভক্তি কেটে যাবে।
রাজশাহী মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট বলেন, আমাদের বিভাগের নেতাকর্মী সবাই মিলে এবং চেয়ারপারসন তারেক রহমান একটি সম্মেলনের তারিখ দিয়েছেন। মহানগর জেলা থানা পর্যায়ে যেসব নেতারা নির্যাতিত মামলা খেয়েছেন আন্দোলনের সঙ্গে ছিলেন, তারাই ভোটে আসবেন এবং ভোটের মাধ্যমে তারা নির্বাচিত হবেন।
রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. সৈয়দ শাহীন শওকত বলেন, আমরা মনে করি এই সম্মেলনকে ঘিরে দল চাঙা হবে। এটি চলমান প্রত্রিয়া। দলকে গতিশীল করবে।
তিনি বলেন, এবার দলে নেতৃত্ব ঠিক হবে দলের ভোটে। গণতান্ত্রিক উপায়ে হবে। যারা দালের সঙ্গে ছিল। বিগত ১৫ বছর যার ফ্যাসিস্ট বিরোধী আন্দোলনে কাজ করেছে। মামলা খেয়েছে। জেলে গেছে। এমনকি যারা রাজপথে ছিলেন। সৎ ও যোগ্য তারাই এবার নেতৃত্বে আসবেন।
সাখাওয়াত হোসেন/জেডএইচ/এমএস