দেশজুড়ে

‘মাসুমা নিজে বাঁচতে পারতেন কিন্তু শিশুদের বাঁচাতে গিয়ে দগ্ধ হ‌ন’

ঢাকায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড ক‌লেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় পাঁচদিন চি‌কিৎসা‌ধীন থাকার পর মারা গে‌ছেন প্রতিষ্ঠা‌নের স্টাফ মাসুমা বেগম (৩৬)।

রোববার (২৭ জুলাই) সকাল সা‌ড়ে ৯টার দি‌কে গ্রা‌মের বা‌ড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিনে তার জানাজা শে‌ষে পা‌রিবা‌রিক কবরস্থ‌নে দাফন করা হয়।

এরআগে শ‌নিবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১টার দি‌কে ঢাকায় হাসপাতা‌লে চি‌কিৎসা‌ধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। পরে মর‌দেহ নি‌য়ে দুপু‌রের‌ দি‌কে গ্রা‌মের বা‌ড়ি বোরহানউদ্দিনর উদ্দে‌শ্যে রওনা ক‌রেন তার প‌রিবা‌রেরর সদস‌্যরা। রাত সা‌ড়ে ১১টার‌দি‌কে মর‌দেহ গ্রা‌মের বা‌ড়ি‌তে পৌঁছে।

মাসুমা বেগম ভোলার বোরহানউদ্দিন উপ‌জেলার মা‌নিকা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়া‌র্ডের কুড়া‌লিয়া গ্রা‌মের মো. সে‌লি‌মের স্ত্রী।

মাসুমা বেগ‌মের স্বামী মো. সে‌লিম জানান, তিনি ঢাকায় এক‌টি কোম্পা‌নির গাড়ি চাল‌কের চাক‌রি ক‌রেন। ২০০২ সা‌লে একই এলাকার মাসুমার সঙ্গে প‌রিবা‌রিকভা‌বে বি‌য়ে হয় সে‌লি‌মের। বি‌য়ের এক বছর প‌রে স্ত্রী‌কে ঢাকায় নি‌য়ে যান তিনি। এক ছে‌লে ও এক মেয়ে তা‌দের। প্রায় ৪ বছর আগে মে‌য়ের বি‌য়ে দেন। ছে‌লে উত্তরার এক‌টি স্কু‌লে ৬ষ্ঠ শ্রেণি‌তে পড়ে। ভাগ‌্য বদ‌লের আশায় প্রায় ৫ বছর আগে মাসুমা মাইলস্টোন স্কু‌লে চাক‌রি‌ নেন। মাসুমার বেত‌নের টাকায় তার ছে‌লের পড়াশুনা চ‌লে।

তিনি আরও আরও জানান, ঘটনার দিন স্কুল ছু‌টি হওয়ার ক‌য়েক মি‌নিট পর দুর্ঘটনা ঘ‌টে। দুর্ঘটনার সময় মাসুমা নি‌জে বাঁচ‌তে পার‌তেন কিন্তু স্কু‌লের শিশু‌দের বাঁচা‌তে গি‌য়ে তিনি দগ্ধ হ‌ন। তা‌কে হাসপাতা‌লে নি‌য়ে যাওয়া হ‌লে ক‌য়েক‌দিন চি‌কিৎসা‌ধীন অবস্থায় থাকার পর শনিবার বেলা ১১টার দি‌কে মারা যান।

মাসুমার ছে‌লে মো. মানছুর জানায়, ঘটনার দিন সে তার স্কু‌লে ছি‌ল। স্কু‌লে থাকা অবস্থায় সে দুঘর্টনার খবর পে‌য়ে দ্রুত ছু‌টে গিয়ে মা‌কে খুঁজ‌তে থা‌কে। প‌রে বাবার সঙ্গে হাসপাতা‌লে গিয়ে ওইদিনই তার মা‌য়ের সঙ্গে দেখা ক‌রে। মা‌য়ের এমন অবস্থা দে‌খে কান্না কর‌তে থা‌কে সে।

বোরহানউদ্দিন উপ‌জেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান উজ্জামান জানান, তি‌নি সকা‌লে মাসুমার বা‌ড়ি‌তে গিয়ে প‌রিবা‌রকে শান্তনা দেন। ত‌বে সরকা‌রি নি‌র্দেশনা এলে মাসুমার পরিবারকে সরকা‌রিভা‌বে সহ‌যোগিতার করা হ‌বে ব‌লে জানান তি‌নি।

জু‌য়েল সাহা বিকাশ/এমএন/জিকেএস