ক্যাম্পাস

৪ ঘণ্টার অপারেশনের পর লাইফ সাপোর্টে চবি শিক্ষার্থী মামুন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. মামুন। তার মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তার নাকে ও মুখে বেশি পরিমাণে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি কানের পর্দা ফেটে গেছে।

রোববার (৩১ আগস্ট) রাত আনুমানিক ১টার দিকে চট্টগ্রামের পার্কভিউ হসপিটালে মামুনের ব্রেইন অপারেশন সম্পন্ন হয়। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখার পর তার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে।

জানা যায়, হামলার সময় শক্ত ধারালো কোনো বস্তু দিয়ে মামুনের মাথার পেছনে ব্রেইনের অংশে আঘাত করা হয়েছে। ফলে অনেক রক্তক্ষরণ হয়েছে।

পার্কভিউ হাসপাতালের জি.এম জানিয়েছেন, মামুনের অবস্থা কিছুটা ভালো। তবে লাইফ সাপোর্টে আছে। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানাতে পারবো।

মামুনের সহপাঠী শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘মামুনের মাথার আঘাত ডাক্তারের আশঙ্কার চেয়েও তীব্র ছিল, ব্রেনের ওপর ব্লাড-ক্লথ অপসারণ করলেই যেখানে জটিলতা কেটে যাওয়ার আশা ছিল সেখানে দেখা গেছে ব্রেনের ওপর হাড়ের টুকরো অংশ ঘিরে নতুন জটিলতা তৈরি হয়েছে। এটি অপসারণে পুরো খুলি খুলে অপারেশন পরিচালনা করতে হয়েছে। ফলে পর্যবেক্ষণের সুবিধার্থে এটি সেরে ওঠার আগ পর্যন্ত খুলি বসানো যাবে না। তাকে ৭২ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পর্যবেক্ষণ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই তার শারীরিক অবস্থার ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যাবে।’

আরও পড়ুন পুরুষশূন্য জোবরা গ্রাম, ক্যাম্পাসজুড়ে উৎকণ্ঠা  ‘আমাদের হল ছাড়তে হলে শিক্ষকদেরও কোয়ার্টার ছাড়তে হবে’  হল ছাড়ার নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান বাকৃবি শিক্ষার্থীদের 

এ বিষয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, গতকাল প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে মামুনের অপারেশন করা হয়েছে। ডাক্তার জানিয়েছে তার অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক। অপারেশনে মামুনের মাথা থেকে ১৩ টুকরো হাড় বের করা হয়েছে। তার খুলি এখন ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। তাকে শক্ত বস্তু দিয়ে আঘাত করার ফলে ব্রেইনের ভেতরে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিন ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে। সে যদি সুস্থ হয়, তাহলে দুই মাস পর তার খুলি লাগাতে হবে বলে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার জানিয়েছেন।

চবি উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো কামাল উদ্দিন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা পরিপূর্ণ সহযোগিতা করছি। আমাদের দুজন শিক্ষক সেখানে ছিলেন। আজ প্রো-ভিসি (একাডেমিক) এবং রেজিস্ট্রার সেখানে গেছেন। কোনো শিক্ষার্থীকে যদি উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করতে হয় সেটাও আমরা ব্যবস্থা করে রেখেছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেটের কাছে এক ছাত্রী একটি ভবনে ভাড়া থাকেন। শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি ওই ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করলে দারোয়ানের সঙ্গে তার তর্ক হয়। একপর্যায়ে ভবনের দারোয়ান তাকে মারধর করেন। পরে ২নং গেটে থাকা শিক্ষার্থীরা দারোয়ানকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে ধাওয়া করলে স্থানীয় লোকজন শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। তখন সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাদের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া না পাওয়ায় সংঘর্ষের মাত্রা বেড়েছে।

সোহেল রানা/এফএ/জিকেএস