নির্বাচনের রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কর্মকর্তাদের নিয়োগের দাবি উঠেছে। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে এ যাত্রা শুরু করার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুচ আলী।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় মিলনায়তনে ‘নির্বাচন কর্মকর্তা সম্মেলন-২০২৫’ অনুষ্ঠানে ইউনুচ এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিনা আহমেদ, আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ, নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদসহ সারা দেশের নির্বাচনী কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনে মূলত জেলা প্রশাসককে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়ে থাকে ইসি। এ ধারা থেকে বের হয়ে ইসি কর্মকর্তারা যেন এসব পদ পান সেই দাবি পুনরায় তুলে ধরা হয় সম্মেলনে।
এ বিষয়ে দ্রুত অধ্যাদেশ জারির আশা প্রকাশ করে ইউনুচ বলেন, নির্বাচন কমিশনের কর্মচারী-কর্মকর্তারা কার কাছে প্রত্যাশা করবে! রিটার্নিং কর্মকর্তা তো আমাদের হাত দিয়েই নিয়োগ হবে। ইসির কর্মকর্তারা রিটার্নিং কর্মকর্তা হবেন কি হবেন না- কমিশন যদি এ সিদ্ধান্তহীনতা ভোগে তাহলে কোন পরিবর্তনে এগিয়ে যাবে? কমিশনারদের বলবো, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং এবং সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের যাত্রা এখান (ইসি) থেকে যেন শুরু হয়। সেইভাবে আমাদের ইসির কর্মকর্তাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে মানুষের প্রত্যাশা আকাশচুম্বি। আমি মনে করি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং এবং গুরুত্বপূর্ণ। এমন পরিস্থিতিতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই পারে সমগ্র দেশ ও জাতিকে সঠিক পথের দিশা দিতে। বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে সমগ্র দেশের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা।
রিটার্নিং কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে জানিয়ে ইউনুচ বলেন, আচরণবিধি প্রতিপালনে প্রথম থেকেই কঠোর হতে হবে। মাঠ পর্যায়ে আচরণবিধি প্রতিপালনে আমরা ব্যত্যয় দেখি। এ জন্য প্রথম থেকেই আমরা যদি কঠোর হতে পারি তাহলে নির্বাচন কমিশন কী ধরনের নির্বাচন করছে তার একটি মেসেজ প্রার্থী, জনগণ ও ভোটারদের মধ্যে চলে যাবে।
এআই-ফেসবুকের ভুয়া আইডির অপব্যবহার প্রসঙ্গে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা বলেন, এআই ব্যবহারকে চ্যালেঞ্জ মনে করছি। এআই ব্যবহার করে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে অপ্রচার চালানো হতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেক আইডি ব্যবহারের সম্ভাবনা আছে। এগুলো কীভাবে রোধ করা যায় সেই বিষয়টিও আমাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট হ্যাক করে অপপ্রচার চালানো হতে পারে- এটা আমার ব্যক্তিগত ধারণা। সম্প্রতি আমরা ডাকসু নির্বাচনে দেখেছি, জাকসু নির্বাচন দেখেছি, এমনকি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার বক্তব্য উদ্ধৃত করে একটি রাজনৈতিক দলের নেতার বিষয়ে কথা বলা দেখেছি। সবগুলো কিন্তু এআই ব্যবহার করে করা হয়েছে। তাই কমিশনকে বলবো কীভাবে এগুলো আমরা রোধ করতে পারি।
ইউনুচ ইসির বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় পদোন্নতি দেওয়ারও দাবি জানান।
এমওএস/একিউএফ/জেআইএম