দেশজুড়ে

সৈয়দপুরে বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে দোকান দখলের অভিযোগ

নীলফামারীর সৈয়দপুরে দোকান ও গোডাউন ঘর দখলের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রেজাউল খান রেজা।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিসিক শিল্পনগরীতে নিজের কারখানায় বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী আমিনুল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি আমিনুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী বাজারে আমিনুল সুপার মার্কেট নামে তার একটা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তিনি ২০১১ সালে জমি কিনে সেখানে মার্কেটটি নির্মাণ করেন। মার্কেটটিতে ‘আরিফ ট্রেডার্স’ নামের বিসিআইসি সার ডিলার ব্যবসার বিক্রয় কেন্দ্র ও গোডাউন রয়েছে। বাকি দোকানগুলো ভাড়ায় দেওয়া আছে। এছাড়াও মার্কেটের পিছনে কয়েক শতক ফাঁকা জায়গাও আছে।

তিনি আরও জানান, ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থ্যাণের পর থেকে রেজাউল খান তার মার্কেটসহ ফাঁকা জায়গাটি দখল করার ষড়যন্ত্র করে আসছিলেন। অবশেষে গত ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে রেজাউল তার দলবল নিয়ে দেয়াল ভেঙে দোকান ও গোডাউন দখল করেন। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গেলে তার লোকজন তাকে লাঠি দিয়ে মারতে উদ্যত হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। এ সময় সৈয়দপুর থানার ওসিকে জানালে তিনি একজন এসআইসহ ফোর্স পাঠান।

ভুক্তভোগী আরও জানান, দখলবাজরা পুলিশের সঙ্গেও খারাপ আচারণ করে। বাধ্য হয়ে পুলিশ ফিরে যায়। পরে রাতের ফাঁকা জায়গায় স্থাপনা নির্মাণের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ২জন নির্মাণ শ্রমিককে আটক করে থানায় নেয়। ফাঁকা জায়গাসহ দোকান ও গোডাউন এখনও তার দখলে আছে। দখল ছেড়ে দিতে তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। না দিলে তিনি দখল ছাড়বে না বলেও জানান। এমনকি এই ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হত্যার হুমকি দিচ্ছেন রেজাউল খান। তিনি দখলদার ও চাঁদাবাজ ওই বিএনপি নেতার বিচার দাবি করেছেন।

আরও পড়ুন:তিস্তায় অবৈধ পাথর উত্তোলন বন্ধে অভিযানউত্তরা ইপিজেডের শ্রমিকনেতার মুক্তির দাবিতে সড়ক অবরোধ, পরে জামিন

এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা রেজাউল খান বলেন, গত দুই মাস আগে তিনি জায়গাসহ দোকানটি একই মালিকের ওয়ারিশের কাছে ক্রয় করেছেন। এছাড়া এর কিছু অংশ ২০০১ সালে তার প্রবাসী ভাই ক্রয় করেছেন। দখল বা অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের বিষয়টি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে মীমাংসার জন্য উভয় পক্ষকে ডাকা হলে পরপর দুইদিন তিনি আসেননি। উল্টো তিনি মামলার হুমকি দিচ্ছেন।

সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার বলেন, আমরা বিএনপি নেতা রেজাউল খান রেজার বিষয়টি শুনেছি। দুইজনকে খোঁজ নিয়ে জানাতে বলেছি। এ ঘটনার সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কারণ দখলদার ও চাঁদাবাজ দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন আমাদের নেতা তারেক রহমান। অতএব কোনো বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে যদি চাঁদাবাজি ও কারো দোকান দখলের অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয় পক্ষকে ডেকেছিল। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করার জন্য পরামর্শ দিই। কারণ জায়গাজমির বিষয় আসলে থানা পুলিশের তেমন কোনো ভূমিকা নেই।

আমিরুল হক/এনএইচআর/জেআইএম