খাগড়াছড়িতে সেই মারমা শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় ধর্ষণের কোনো আলামত মেলেনি। ওই কিশোরীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত পরীক্ষার ১০টি সূচকের প্রতিটিতে ‘স্বাভাবিক’ উল্লেখ রয়েছে।
খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়া চাকমা, ডা. মীর মোশাররফ হোসেন ও ডা. নাহিদ আক্তারের সমন্বয়ে মেডিকেল টিম পরীক্ষা করে।
চিকিৎসক দলটির প্রধান খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি) জয়া চাকমা বলেন, ওই শিক্ষার্থীর মেডিকেল পরীক্ষার ফলাফলে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, প্রতিবেদন মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) পেয়েছি। ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন- ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সড়ক অবরোধ স্থগিত করেছে জুম্ম ছাত্র জনতাগুইমারা সহিংসতা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটিখাগড়াছড়িতে সহিংসতায় ৩ মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি আসকের
ধর্ষণের অভিযোগ থেকে খাগড়াছড়িতে ছড়ানো সহিংসতাকে ‘পরিকল্পিত’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পরিকল্পিত সহিংসতায় তিনটি জীবন ঝরে গেছে, যা খুবই দুঃখজনক।
খাগড়াছড়িতে কিশোরী ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে সাত দিন ধরে চলা অবরোধের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ রোববার গুইমারায় সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছে তিন পাহাড়ি যুবক। আর আহত হয়েছেন তিন সেনা কর্মকর্তাসহ ১৩ সেনা সদস্য এবং ওসিসহ তিন পুলিশ সদস্য।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালায় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি ক্ষেত থেকে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে। পরে তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শয়ন শীল (১৯) নামে এক তরুণকে আটক করে পুলিশ।
এই ঘটনায় খাগড়াছড়িতে ব্যাপক বিক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, যা একসময় সহিংসতায় রূপ নেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় এবং অতিরিক্ত সেনাবাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন করা হয়। এরপরও উত্তেজনা প্রশমিত হয়নি। ১৪৪ ধারার মধ্যেই জেলার গুইমারায় ঝরে তিন প্রাণ।
এদিকে রোববার গুইমারায় সহিংসতার ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবার দুপুরে গুইমারায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার।
এফএ/জেআইএম