‘আমি জোবায়েদের মাকে কী করে বোঝাব যে তার প্রাণের ছেলে জুবু আর দুনিয়াতে নেই। আমার ছেলে বড় হয়েছিল। আমি ঢাকায় ব্যবসার মাল (পণ্য) কিনতে আসলে সে আমার সাথে থাকতো। আমি তার কাঁধে ভর দিয়ে হাঁটতাম।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ছাত্রদলের নিহত নেতা জোবায়েদ হোসেনের জানাজার আগে আর্তনাদ করে কথাগুলো বলছিলেন তার বাবা মোবারক হোসেন। সোমবার দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও দলীয় সহকর্মীরা এ জানাজায় অংশ নেন।
মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমার ৫৮ বছরের জীবন-যৌবনের সব অর্জন শেষ। আমার প্রাণের জোবায়েদ আর নেই। আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আমি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই। আর সবাই আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন, আল্লাহ যেন তাকে বেহেশত নসিব করে।’
ছেলেকে পড়াশোনা করতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন জানিয়ে এ ব্যবসায়ী বলেন, ‘আশা করেছিলাম আমার ছেলে পড়াশোনা করে অনেক বড় হবে। চাকরি করবে। দেখে আমার আনন্দ লাগবে। কিন্তু আজ আমার ছেলেকে লাশ হিসেবে নিয়ে যাচ্ছি। এটা আমার জন্য কত যে বেদনার, আমি কী করে বোঝাব।’
জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য জোবায়েদ হোসেন/ছবি: সংগৃহীত
জানাজায় জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াসউদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, সহ-সভাপতি কাজী জিয়াউদ্দিন বাসেত, জবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল, সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন, শাখা শিবিরের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, ছাত্র অধিকারের সভাপতি এ কে এম রাকিব, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের আহ্বায়ক ফয়সাল মুরাদ প্রমুখ অংশ নেন।
জোবায়েদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগে পড়াশোনা করতেন। তিনি জবিস্থ কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। তিনি রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে পুরান ঢাকার আরমানীটোলায় এক ছাত্রীকে প্রাইভেট পড়াতে গিয়ে ওই বাসায় খুন হন। ভবনের নিচতলা থেকে তিনতলা পর্যন্ত সিঁড়িতে রক্ত পড়েছিল। তিনতলার সিঁড়িতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অবস্থায় জোবায়েদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
টিএইচকিউ/একিউএফ/জিকেএস