আন্তর্জাতিক

জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় নেবেন না হাসিনা: ইন্ডিপেনডেন্ট

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স, ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট বুধবার (২৯ অক্টোবর) একযোগে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিনটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে। ই-মেইলে নেওয়া ওই সাক্ষাৎকারগুলোতে তিনি গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা হত্যায় তার দায়, আসন্ন নির্বাচন, দেশে ফেরা, ট্রাইব্যুনালে তার বিচার ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন। সেই সঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের ঘটনার দায় নিতে ও সরাসরি ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন হাসিনা।

দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর এগুলোই হাসিনার প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎকার ও ৩টি গণমাধ্যমেই তিনি প্রায় একই ভাষায় কথা বলেছেন। লিখিত উত্তরে তিনি নিজে কোনো কিছুর দায় নেননি, কোনো কিছুর জন্য অনুশোচনাও প্রকাশ করেননি। বরং ছাত্র-জনতার হত্যার জন্য মাঠপর্যায়ে থাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দায়ী করেছেন। এমনকি, গণঅভ্যুত্থানকে ‘সহিংস বিদ্রোহ’ দাবি করে এর দমনকে ‘সাংবিধানিক অধিকার’ বলেও বর্ণনা করেছেন তিনি।

আবার নিজে পরপর তিনটি একতরফা নির্বাচনের আয়োজন করলেও পরবর্তী নির্বাচন অন্তর্ভুক্তিমূলক হওয়ার আশা প্রকাশ করেছেন। নিজে প্রধান বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রেখে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ করলেও এখন বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দিলে দেশে বৈষম্য সৃষ্টি হবে।

সরাসরি ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্টের সাক্ষাৎকারে যখন হাসিনাকে জিজ্ঞেস করা হয়, নিহত বিক্ষোভকারীদের পরিবারের কাছে তিনি ক্ষমা চাইবেন কি না? জবাবে হাসিনা বলেন, আমি আমাদের প্রতিটি সন্তান, ভাই, বোন ও বন্ধুর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করছি। আমি তাদের প্রতি আমার সমবেদনা জানাতে থাকবো। তবে হাসিনা দৃঢ়ভাবে দাবি করেন, তিনি কখনো পুলিশকে গুলি চালানোর নির্দেশ দেননি।

হাসিনা বলেন, তিনি কোনো হত্যাকাণ্ডের দায় ব্যক্তিগতভাবে নেবেন না। বরং তিনি ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানকে ‘একটি সহিংস বিদ্রোহ’ বলে আখ্যায়িত করেন।

ক্ষমতা হারানোর পর আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শেখ হাসিনার প্রথম সাক্ষাৎকার প্রকাশআগে রয়টার্সে শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার পড়ি, পরে মন্তব্য: প্রেস সচিবভাইরাল এই ছবিটি শেখ হাসিনার নয়

এক প্রশ্নের জবাবে হাসিনা বলেন, একজন নেতা হিসেবে আমি সার্বিকভাবে দায় স্বীকার করি। কিন্তু এই অভিযোগ যে আমি গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছিলাম- এটি সম্পূর্ণ ভুল।

হাসিনার দাবি, বেশিসংখ্যক প্রাণহানির জন্য দায়ী ছিল ‘মাঠপর্যায়ে থাকা নিরাপত্তা বাহিনীর শৃঙ্খলা ভেঙে পড়া’। তিনি আরও বলেন, একজন নেতা হিসেবে আমি অবশ্যই সামগ্রিক দায় স্বীকার করি, কিন্তু আমি নিজে নিরাপত্তা বাহিনীকে জনতার ওপর গুলি চালাতে বলেছিলাম বলে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ঠিক নয়।

তিনি বলেন, ‘অনির্বাচিত’ অন্তর্বর্তী সরকারের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তিনি আরও দাবি করেন, প্রথম দিকের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তাঁর সরকারই একটি স্বাধীন তদন্ত শুরু করেছিল, কিন্তু পরে তা বন্ধ করে দেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারেও তিনি প্রায় একই কথা বলেছেন। তিনি সেখানে বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আমি ব্যক্তিগতভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জনতার ওপর গুলি চালানোর নির্দেশ দিয়েছি, এটা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তবে তিনি স্বীকার করেন, চেইন অব কমান্ডের মধ্যে কিছু ভুল অবশ্যই হয়েছিল। সামগ্রিকভাবে, সরকারি কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্ত ছিল পরিমিত, সৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও যতটা সম্ভব প্রাণহানি কমানোর লক্ষ্যে।

তিনি এ প্রসঙ্গে ইনডিপেনডেন্টকে আরও বলেন, মাঠপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা, যাদের সুপ্রতিষ্ঠিত কার্যক্রম পরিচালনাবিষয়ক নির্দেশিকা মেনে চলার কথা ছিল। এসব নির্দেশিকায় বিশেষ পরিস্থিতিতে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া ছিল। এমনটা হতে পারে যে জটিল পরিস্থিতির মধ্যে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, যেগুলো ভুল ছিল।

নিজের বিচার প্রসঙ্গে

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনা ও তার সহযোগীদের বিচার কার্যক্রম চলছে। হাসিনাকে অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মূল পরিকল্পনাকারী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ জন্য তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের আবেদন করা হয়েছে। অভিযোগ হচ্ছে, শেখ হাসিনা ছাত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন, ফলে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হন।

শেখ হাসিনা দাবি করেছেন, ছাত্র আন্দোলনের সময়ের ১ হাজার ৪০০ মৃত্যুর সংখ্যাটি ‘অতিরঞ্জিত’। তার ভাষায়, এই সংখ্যা ট্রাইব্যুনালের প্রচারণার কাজে লাগে, কিন্তু বাস্তবে তা বাড়িয়ে বলা হয়েছে।

এ নিয়ে সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা আরও বলেছেন, যদি বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়, তাতে আমি অবাক হবো না বা ভয়ও পাবো না। এটি একটি প্রহসনের বিচার, যার পেছনে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কাজ করছে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একটি প্রহসনের আদালত, যেটি পরিচালনা করছে আমার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের নিয়ে গঠিত অনির্বাচিত সরকার। এই প্রতিদ্বন্দ্বীদের অনেকেই আমাকে ‘সরাতে’ যেকোনো কিছু করতে পারে।

ইনডিপেনডেন্ট তাদের প্রতিবেদনে লিখেছে, আদালতে এমন অডিও রেকর্ডিং বাজানো হয়েছে, যেখানে হাসিনাকে বলতে শোনা যায় যে তিনি বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করতে বলছেন। তবে শেখ হাসিনা দাবি করেছেন, এই রেকর্ডিংগুলো প্রসঙ্গের বাইরে কেটে নেওয়া ও বিকৃত করা হয়েছে। হাসিনা এ নিয়ে বলেছেন, সহিংসতা ঘটেছে মাঠপর্যায়ে থাকা কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তে, সরকারের আদেশে নয়।

দেশত্যাগ ও আওয়ামী লীগের উত্তরাধিকার প্রসঙ্গে

সাক্ষাৎকারে দেশত্যাগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট দেশে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ায় তিনি ভারতে চলে যান। তিনি রয়টার্সকে বলেন, দেশে থেকে গেলে আমার জীবন যেমন ঝুঁকিতে পড়তো, তেমনি আশপাশের মানুষদের জীবনেও বিপদ নেমে আসতো। তবে নির্বাসনে থাকলেও তিনি বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এখনো প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তার ভাষায়, শুধু অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনই দেশকে ঠিক করতে পারে।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি অবশ্যই দেশে ফিরতে চাই, তবে শর্ত হলো- সেখানে বৈধ সরকার থাকতে হবে, সংবিধান রক্ষা করতে হবে ও আইনের শাসন নিশ্চিত হতে হবে।

রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, কোনো সরকার যদি এমন নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত হয়, যেখানে তার দল থাকবে না, তবে তিনি সেই সরকারের শাসনামলে বাংলাদেশে ফিরবেন না। সে পর্যন্ত তিনি ভারতেই থেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ একদিন আবার বাংলাদেশের ভবিষ্যতে ভূমিকা রাখবে, সরকারে থাকুক বা বিরোধী দলে। আর এই দল পরিচালনার জন্য তার পরিবারের দরকার হবে না। তিনি বলেন, এটা আমার বা আমার পরিবারের বিষয় নয়। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সংবিধান ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ওপর। কোনো ব্যক্তি বা পরিবার দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে না।

হাসিনা জানান, তিনি কিংবা তার পরিবারের কেউ হয়তো আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে নাও থাকতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে রয়টার্স বলে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ গত বছর বলেছিলেন যে দল চাইলে তিনি নেতৃত্বের কথা বিবেচনা করতে পারেন।

ভোট বর্জনের আহ্বান

রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দিলে তাদের লাখ লাখ সমর্থক নির্বাচন বর্জন করবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুধু অবিচারই নয়, এটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। পরবর্তী সরকারের অবশ্যই নির্বাচনী বৈধতা থাকতে হবে। লাখ লাখ মানুষ আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে। এখন যে অবস্থা রয়েছে, তাতে তারা ভোট দেবে না। আপনি যদি একটি কার্যকর রাজনৈতিক ব্যবস্থা চান, তাহলে আপনি লাখ লাখ ভোটারকে বঞ্চিত করতে পারেন না।

আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়া হবে সে আশা প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমরা আওয়ামী লীগের ভোটারদের অন্যান্য দলকে সমর্থন করতে বলছি না। আমরা এখনো আশা করি, মানুষের বোধোদয় হবে ও আমাদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেওয়া হবে।

আর এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগসহ সব বড় রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তার দলকে বাদ দিয়ে নির্বাচন আয়োজন করা মানে দেশে ভবিষ্যৎ বিভেদের বীজ বপন করা।

নিজের আমলে হওয়া গুম নিয়ে কথা বলেননি

অভিযোগ আছে, শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে ভিন্নমত পোষণকারী ব্যক্তিদের গুম করা হতো। সম্প্রতি গুমসংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের কাছে ১ হাজার ৮৫০টি গুমের অভিযোগ আসে, যার মধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ৩৪৫ জন। অন্যদিকে, মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ জানিয়েছে, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত শাসনামলে দেশে গুম হন ৬৭৭ জন।

সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বললেও ও নিজেকে নির্দোষ উপস্থাপনের চেষ্টা করলেও নিজের শাসনামলে হওয়া গুমের ঘটনাগুলো নিয়ে কথা বলেননি হাসিনা। উল্টো রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, ক্ষমতাচ্যুতির পর তার সমর্থকদের ওপর বড় ধরনের দমন অভিযান চালানো হয়েছে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ নামে একটি অভিযানে হাজারো মানুষকে গ্রেফতার করে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তারা রাষ্ট্র অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে।

ভারতে যেমন আছেন

বর্তমানে শেখ হাসিনা দিল্লিতে অবস্থান করছেন। তার দাবি, সেখানে তিনি ‘স্বাধীনভাবেই’ জীবনযাপন করছেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, কয়েক মাস আগে দিল্লির ঐতিহাসিক লোধি গার্ডেনে শেখ হাসিনাকে হেঁটে বেড়াতে দেখা যায়। তার সঙ্গে ছিলেন দুজন ব্যক্তি, যাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী বলে মনে হচ্ছিল। অনেক পথচারী তাকে চিনে অভিবাদন জানালে তিনি মাথা নেড়ে সাড়া দেন।

এক পর্যায়ে ইনডিপেনডেন্ট তাদের প্রতিবেদনে লেখে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা হবে ও সম্ভবত তিনি জানেন ইতিহাস তার বিচার সদয়ভাবে করবে না। যদিও শেখ হাসিনা বলেছেন, সহিংস বিদ্রোহের মুখে দেশ রক্ষায় সাংবিধানিক কর্তব্য পালনের জন্য গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কোনো নেতাকে বিচারের মুখোমুখি করা উচিত নয়।

শেখ হাসিনা সব দায় অস্বীকার করলেও দ্য ইনডিপেনডেন্ট মন্তব্য করেছে যে গত বছর বাংলাদেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর যে দমন-পীড়ন চালানো হয়েছিল, তা বিশ্বকে শোকার্ত করে তুলেছিল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উপ–আঞ্চলিক পরিচালক বাবু রাম পান্ত তখন বলেছিলেন, বাড়তে থাকা মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের বিক্ষোভকারী বা ভিন্নমতের প্রতি একেবারেই অসহিষ্ণুতাকে তুলে ধরেছে। জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক তখন বলেছিলেন, ছাত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর আক্রমণ বিশেষভাবে দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।

বাংলাদেশে জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধানী দলের প্রতিবেদনেও বলা হয়, বাংলাদেশে গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিক্ষোভ চলাকালে ১ হাজার ৪০০ মানুষ নিহত হয়ে থাকতে পারেন, আহত হন কয়েক হাজার। এসব হতাহতের বেশির ভাগ হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে। এটি ছিল ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পর বাংলাদেশে সবচেয়ে সহিংস ঘটনা। পাশাপাশি মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই শেখ হাসিনা সরকারকে বিরোধীদের দমন, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, বিচারব্যবস্থার অপব্যবহার ও একতরফা নির্বাচনের জন্য অভিযুক্ত করেছিল।

সূত্র: দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট, রয়টার্স ও এএফপি

এসএএইচ/একিউএফ