আন্তর্জাতিক

আফগানিস্তানে বিমান হামলার অভিযোগ অস্বীকার করলো পাকিস্তান

আফগানিস্তানে বিমান হামলার অভিযোগ অস্বীকার করলো পাকিস্তান। আফগান তালেবান দাবি করেছিল, পাকিস্তান আফগানিস্তানের ভেতরে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) ভোরে বিমান হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর গণমাধ্যম শাখা ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনসের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী আফগান তালেবানের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী আফগানিস্তানের ভেতরে কোনো বেসামরিক নাগরিকের ওপর হামলা চালায়নি।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তান যখন কাউকে আক্রমণ করে, তখন সেটা প্রকাশ্যেই ঘোষণা করে।

আরও পড়ুন>>আফগানিস্তানে পাকিস্তানের বিমান হামলায় নিহত কমপক্ষে ১০পাকিস্তানে আধাসামরিক বাহিনীর সদর দপ্তরে হামলা, নিহত ৬পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা: নতুন বাণিজ্য রুট খুঁজছে আফগানিস্তান

এর আগে আফগান তালেবানের মুখপাত্র পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খোস্ত, কুনার ও পাকতিকা প্রদেশে হামলার অভিযোগ আনেন। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেনারেল আহমেদ শরীফ জানান, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে পাকিস্তান কোনো ধরনের বিভাজনকে গ্রহণ করে না। তার ভাষায়, আমাদের দৃষ্টিতে ভালো তালেবান কিংবা খারাপ তালেবান— এমন কোনো ধারণা নেই। সন্ত্রাসীদের ক্ষেত্রে কোনো বিভাজন নেই।

তিনি আরও বলেন, আফগান তালেবান সরকারকে রাষ্ট্র হিসেবে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, অ-রাষ্ট্রীয় উপাদান হিসেবে নয়। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, আফগানিস্তানের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের স্থায়িত্ব কতদিন থাকবে?

সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের টানাপোড়েন বাড়ছে। পাকিস্তানের দাবি, আফগান ভূখণ্ড থেকে নিষিদ্ধ সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) হামলা চালাচ্ছে, যা আফগানিস্তান অস্বীকার করে আসছে। সীমান্ত সংঘর্ষ ও উত্তেজনার পর শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ইস্তাম্বুলে গত অক্টোবর নাগাদ দু’দেশের মধ্যে সংলাপ শুরু হলেও কোনো কার্যকর সমাধান হয়নি।

অক্টোবরের শেষে মধ্যস্থতাকারী তুরস্ক ও কাতারের সহায়তায় আলোচনার আরেক দফা শুরু হ। তবে গত ৭ নভেম্বর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানান, সীমান্ত সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে আলোচনার প্রক্রিয়া ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত’ হয়েছে।

সংলাপ ব্যর্থ হওয়ার পর আফগান তালেবান পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য কার্যক্রম স্থগিত করে। সীমান্ত বাণিজ্য আগেই বন্ধ করে দিয়েছিল ইসলামাবাদ। তুরস্ক এরপর জানায়, ইসলামাবাদ সফরে গিয়ে উত্তেজনা প্রশমনে উদ্যোগ নেবে তাদের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল। পাকিস্তান সরকার ১৪ নভেম্বর তুরস্ক ও দোহার ‘সৎ প্রচেষ্টার’ প্রশংসা করলেও প্রতিনিধি দলের সফরের তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।

গত সপ্তাহে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আফগানিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য ফের শুরুর আগে তালেবান প্রশাসনকে সীমান্তপারের সন্ত্রাসবাদ বন্ধে কাঙ্ক্ষিত পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি আফগান ভূখণ্ডে সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় বন্ধ না হলে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক জ্বালানি প্রকল্পও ঝুঁকিতে পড়বে।

সূত্র: ডনকেএএ/