সনাতন ধর্মাবলম্বী হয়েও মুসলিম সেজে প্রবাসী এক নারীকে বিয়ে করে দীর্ঘদিন সংসার করেছেন নৃপেন্দ্র দত্ত নামে এক প্রতারক। সুযোগ বুঝে ওই নারীর স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ১৭ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তারও অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রোববার সকালে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার দড়িহাওলাপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে নৃপেন্দ্র দত্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।গ্রেফতার নৃপেন্দ্র দত্ত পলাশ উপজেলার দড়িহাওলাপাড়া গ্রামের বসন্ত দত্তের ছেলে । পুলিশ জানায়, নৃপেন্দ্র দত্ত জর্ডানের একটি পোশাক কোম্পানিতে চাকরি করতেন। ওই সময় জর্ডানে বসবাসরত বাংলাদেশের গাজীপুর জেলার নার্গিস বেগমের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে তিনি মুসলিম সেজে নার্গিস বেগমকে বিয়ে করে। বিদেশে থাকাকালীন নিজের নাম পরিবর্তন করে নুর মুহাম্মদ নামে দীর্ঘ সাত বছর ওই নারীর সঙ্গে ঘর-সংসার করেন তিনি। একপর্যায়ে ব্যবসার কথা বলে নার্গিস আক্তারের কাছ থেকে নগদ ১৭ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কাকার নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন। এর পর থেকে তার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। পরে ভুক্তভোগী নার্গিস পলাশ থানায় মামলা দায়ের করেন। এরই জের ধরে রোববার পলাশ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।ভুক্তভোগী নার্গিস বেগম জানান, নুর মুহাম্মদ নামধারী নৃপেন্দ্র দত্ত প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে আমাকে বিয়ে করেন। পরে সে আমার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে আসেন। বিদেশে কর্মরত সহকর্মীদের থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসার বিষয়টি জানতে পারি। পরে আমি বাংলাদেশে তার গ্রামের বাড়িতে গিয়ে জানতে পারি সে মুসলিম না। তার নাম নৃপেন্দ্র এবং সেখানে তার স্ত্রী সন্তানও রয়েছে। তখন আমার টাকা পয়সা ফেরত চাইলে তিনি টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। নার্গিস বেগম আরো জানান, জর্ডানে সে লম্বা দাড়ী ,পায়জামা পাঞ্জাবি পরে চলাচল করত। তাবলীগ জামাতেও অংশ গ্রহণ করত। তার ধর্মীয় লেবাস দেখে অনেকে বিশ্বাস করে টাকা পয়সা দিয়ে সহযোগিতা করত। সে জর্ডান থেকে পালিয়ে আসার পরে জানতে পারি ,পারভীন নামে আমার এক সহকর্মীকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে তার সঙ্গে সম্পর্ক করে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে চলে এসেছে।এদিকে, কারাগারে থাকায় অভিযুক্ত নৃপেন্দ্র দত্তের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে পলাশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন,অভিযুক্ত নৃপেন্দ্র দত্ত জর্ডানে থাকাকালীন বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা আদায়ের জন্যই মূলত এ ধরনের কাজ করেছে বলে স্বীকার করেছে। তা ছাড়া প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন নার্গিস বেগম। এরই প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে সাত লাখ টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছে। সঞ্জিত সাহা/আরএআর/এমএস