করোনা পরিস্থিতিতে ভাসমান অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন রাজধানীর হেল্পিং হ্যান্ড চ্যারিটি গ্রুপ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। মহামারিতে অনাহারে অর্ধাহারে থাকা ভাসমান মানুষের হাতে নিয়মিত খাবার তুলে দিচ্ছেন তারা।
জানা গেছে, প্রতিদিন ৩৭৫ প্যাকেট ইফতারি পৌঁছে দিচ্ছেন তারা। তাদের ইফতারিতে থাকছে- খেজুর, কলা, শশা, পিয়াজু, বেগুনি, আলুরচপ, ছোলা ও মুড়ি। এছাড়া সেহরির জন্য ৩৭৫ বক্স রান্না করা খাবার (ভাত, মুরগী মাংস ও মিক্সড সবজি) পৌঁছে দিচ্ছেন তারা।
হেল্পিং হ্যান্ড চ্যারিটি গ্রুপের সদস্যরা জানান, এই দুর্যোগে তারা চেষ্টা করছেন মানুষের সেবায় এগিয়ে আসার। আসছে রোজার ঈদে এবং তার পরেও সংকটের এ সময়ে রাজধানীর ভাসমান এসব মানুষকে খাবারসহ অন্যান্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে চান তারা।
তারা জানান, বিকেল হলেই গ্রুপের সদস্যরা ইফতার নিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বের হয়ে পড়েন। যেখানে যাকে অভুক্ত দেখতে পান, তার হাতেই তুলে দেন। রমজান শুরুর দিন থেকে ইফতারি বিতরণের মধ্য দিয়ে নিজেদের উদ্যোগে এ কাজ শুরু করেছেন তারা।
রমজানের শুরু থেকেই প্রতিদিন ইফতারি ও সেহরি বিতরণের জন্যে রাজধানীর পল্টন, ফকিরাপুল, আরামবাগ, মানিকনগর, রামপুরা, হাতিরঝিল, মহাখালী, বাড্ডা ও বনশ্রী এলাকায় বসবাসরত সাড়ে তিনশ জনেরও বেশি হতদরিদ্র, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তকে সন্ধ্যায় ইফতার ও রাতে সেহরির খাবার দেয়া হচ্ছে এবং পুরো রমজান মাসব্যাপী ইফতার ও সেহেরির খাবার বিতরণ করবে তারা।
হেল্পিং হ্যান্ড চ্যারিটির অন্যতম উদ্দ্যোক্তা জাফর ইকবাল জাগো নিউজকে জানান, প্রথমে আমরা পাঁচ থেকে সাতজন টাকা সংগ্রহ করে খাদ্য সামগ্রী কেনাকাটা করি। এর পর বাবুর্চি রান্না করে দিলে আমরা টিমের ১২-১৩ জন প্যাকিং করে বিকেলে ইফতারের আগে বিতরণে বের হই। আর সেহরির খাবার রাতে বিতরণ করে থাকি।
তিনি জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অতিদরিদ্র পরিবারগুলোকে খুঁজে বের করে খাবার সহায়তা দিচ্ছেন তারা।
তিনি জানান, এই কর্মসূচি বাস্তবায়নে অর্থ, শ্রম ও সময় দিয়ে সাহায্য করে যাচ্ছেন লায়ন, লিও সদস্য ও সাধারণ মানুষসহ নির্ভীক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। আগামী দিনগুলোতে কষ্টে থাকা আরও বেশি রোজাদারকে ইফতার ও সেহেরির খাবার পৌঁছে দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
জাফর ইকবাল জানান, নানা সীমাবদ্ধতা থাকলেও তারা এ কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে যাননি। তবে এখন অর্থ সংগ্রহে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। তারা অর্থ সংগ্রহের জন্যে কিছু মানুষের কাছ থেকে ইতোমধ্যে সহায়তা নিচ্ছেন। ব্যয় করেছেন নিজেদের ব্যক্তিগত সঞ্চয়ও। তাদের বিশ্বাস, এই কার্যক্রমে নিশ্চয়ই শুভাকাঙ্ক্ষীরা পাশে দাঁড়াবেন।
তিনি বলেন, এটা হলো দুর্যোগে ন্যূনতম সম্পদ ভাগাভাগি করে টিকে থাকার চেষ্টা। কাজের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝেছি, সামনে আরও বড় দুর্যোগ আসছে। এ সময় সবারই উচিত একে অন্যের পাশে থাকা। মানুষকে বাঁচাতে এগিয়ে আসা।
এফএইচ/এমএফ/পিআর