অর্থনীতি

এবার ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক স্কিমে বিনিয়োগে দুঃসংবাদ

এবার ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক স্কিমে বিনিয়োগে দুঃসংবাদ

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। এতে করে ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের জন্য সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কঠিন হয়ে গেছে। এর মধ্যে এবার ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক স্কিমে বিনিয়োগের লাগাম টানল সরকার। এ খাতের একক নামে বিনিয়োগ ঊর্ধ্বসীমা ৩০ লাখ টাকা থেকে কমিয়ে ১০ লাখ টাকা করা হয়েছে। আর যুগ্ম-নামে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা ৬০ লাখ টাকা কমিয়ে করা হয়েছে ২০ লাখ টাকা।

Advertisement

গত ২০ মে স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন বৃহস্পতিবার (২৮ মে) জারি করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এ আদেশ জারির দিন থেকে কার্যকর হবে।

হঠাৎ করে বিনিয়োগ ঊর্ধ্বসীমা তিন ভাগের দুই ভাগই কমিয়ে দেয়া হলো কেন-এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে জরুরি মিটিংয়ে আছি বলে কোনো মন্তব্য করতে চাননি অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বিভাগের এক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, ‌ব্যাংক আমানতে সুদহার যখন ৬ শতাংশ তখন ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের কিংবা সঞ্চয়পত্রে সুদহার সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তার খাত হিসেবে বিবেচিত এ খাতে অনেক ধনী ব্যক্তিরা বিনিয়োগ করছে। পাশাপশি এ খাত থেকে ঋণ নিলে সরকারকে বেশি পরিমাণ সুদ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে করে সরকারের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

Advertisement

এদিকে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে কালো টাকা এবং অতিরিক্ত বিনিয়োগ বন্ধে অনলাইনে অ্যাকাউন্ট খোলার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। ‘জাতীয় সঞ্চয় স্কিম অনলাইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এর এ নতুন মডিউলটি গত ১১ মার্চ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল উদ্বোধন করেন।

জানা গেছে, জাতীয় সঞ্চয় স্কিমটি অনলাইন তথা অটোমেশন হয়ে গেলে এতে বিনিয়োগ করার সময় একটি হিসাব (অ্যাকাউন্ট) খুলতে হবে। আর হিসাব খোলার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র। দুই লাখ টাকার বেশি ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে জমা দিতে হবে চেকের মাধ্যমে। সঙ্গে ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) সনদের কপিও দিতে হবে। যাদের হিসাব রয়েছে তাদেরকেও অনলাইন ডাটাবেজের আওতায় আনা হবে।

এদিকে ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদহার প্রায় অর্ধেক কমিয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি)। তবে এ সঞ্চয় স্কিমে সুদহার কমানোর ফলে এক মাসের মধ্যে সংসদের ভেতরে, বাইরে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়। সমালোচনার মুখে সুদের হারের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।

সে আশ্বাস অনুযায়ী ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সাধারণ ও মেয়াদি আমানতের সুদহার আগের অবস্থানে নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে গত ১৭ মার্চ একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। সেদিন থেকেই এটি কার্যকর করা হয়েছে।

Advertisement

সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সাধারণ হিসাবের ক্ষেত্রে সুদহার হবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এছাড়া তিনবছর মেয়াদি ডাকঘর সঞ্চয় স্কিমের সুদের হার হবে ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ। মেয়াদ পূর্তির আগে ভাঙানোর ক্ষেত্রে এক বছরের জন্য সুদ পাওয়া যাবে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ। দুই বছরের ক্ষেত্রে ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ।

এমইউএইচ/এসআর/জেআইএম