মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর ইউপি নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নেয়ামুল আকনের মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। এ সময় তাদের বাধা দিলে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটানিং কর্মকর্তা দীপক বিশ্বাস, চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তার স্ত্রীসহ পাঁচজনকে মারধর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ মে) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কালকিনি উপজেলা নির্বাচন অফিসের সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনার কার্যালয়ে লিখিতভাবে জানালে রাত ৮টার দিকে নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৫ জুন উপজেলার এনায়েতনগর ও পূর্ব এনায়েতনগরসহ দুই ইউনিয়নে একসঙ্গে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এ নির্বাচনে পূর্ব এনায়েতনগর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নেয়ামুল আকন বিকেল সাড়ে ৩টায় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে আসেন। এ সময় আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী দলিল উদ্দিন তালুকদারের কর্মী-সমর্থকরা নেয়ামুল আকনকে মনোনয়নপত্র দাখিলে বাধা দেন।
তার মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নিতে গিয়ে হামলা চালান। এ সময় তাদের বাধা দিলে আহত হন উপজেলা রিটানিং কর্মকর্তা দীপক বিশ্বাস, চেয়ারম্যান প্রার্থী নেয়ামুল আকন ও তার স্ত্রী রেহানা বেগমসহ পাঁচজন। এদের মধ্যে কয়েকজনকে কালকিনি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দীপক বিশ্বাস বলেন, ‘চেয়ারম্যান প্রার্থী নেয়ামুল আকন মনোনয়নপত্র দাখিল করতে এলে কিছু দুষ্কৃতকারী তাকে মারধর করেছে। আমাকেও কিল-ঘুষি মারে। তারা নেয়ামুলের মনোনয়নপত্র ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার সময় কালকিনি থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তার ভূমিকা রহস্যজনক ছিল। পরে বিষয়টি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে লিখিতভাবে জানানোর পর নির্বাচন স্থগিত করা হয়। পরে নির্বাচনের তারিখ জানানো হবে।’
অভিযোগের বিষয় আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী দলিলউদ্দিন তালুকদার বলেন, ‘মনোনয়নপত্র ছিনতাইয়ের সঙ্গে আমি জড়িত না। কে বা কারা ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তা আমার জানা নেই। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় যে কেউ নির্বাচন করতে পারে। এতে আমার কিছু যায়-আসে না। প্রতিপক্ষের লোকজন আমাকে হেয় করার জন্য মিথ্যা রটাচ্ছে।’
কালকিনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইশতিয়াক আসফাক রাসেল বলেন, ‘আমিসহ সঙ্গীয় র্ফোস নিয়ে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় উপস্থিত ছিলাম। কিছু দুষ্কৃতকারী মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় উত্তেজনা সৃষ্টি করে। পরে আমি নিজে স্বতন্ত্র প্রার্থী নেয়ামুল আকনকে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কক্ষে যাই। তবে তার মনোনয়নপত্র দুষ্কৃতকারীরা ছিনিয়ে নিয়েছে বলে জানতে পারি। এখানে আমার কোন দোষ নেই। আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হচ্ছে।’
এ কে এম নাসিরুল হক/এসআর/এমএস