আকর্ষণ বাড়াতে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদে যুক্ত হয়েছে বেশ কয়েকটি ‘হাউজ বোট’। পর্যটকদের দিন-রাত জলে ভেসে বেড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছে এসব বোট। আনন্দ উদযাপনের নতুন এ অনুষঙ্গ পেয়ে খুশি পর্যটকরা।
স্থানীয় ও পর্যটকরা জানান, সারাদিন হ্রদের জলে ভেসে বৌদ্ধ বিহার, সুবলং ঝরনাসহ পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগের পর রাতে হ্রদের জলে ভেসে আড্ডা ও রাত্রিযাপন করছেন পর্যটকরা। হ্রদে সবকটি হাউজ বোট বুকিং হয়ে যায়।
তারা জানান, হ্রদে প্রমোদিনী, রাঙাতরী, স্বপ্নডিঙি, মাউরুন নামের চারটি হাউজ বোটে রয়েছে। বোট গুলোতে বিভিন্ন প্যাকেজ অনুসারে ভ্রমণ ট্রিপ হয়। প্রতিজন ৬ হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্যাকেজ রয়েছে হাউজ বোটগুলোতে। বোটগুলোতে ১০-১২ জন থাকতে পারে। কিছু কিছু হাউজ বোটে ১৫-১৭ জনও থাকতে পারে।
হাউজ বোটে বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে আসা নাঈমুল সিকদার বলেন, শহরে যান্ত্রিকতা আমাদের আটকে রেখেছে। অফিস আর বাসা এ দুয়ে যেনো জীবনটা আটকে রয়েছে। তাই হঠাৎ বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে আসলাম। প্রথমে কোন হোটেলে উঠবো ভেবেছি। কিন্তু বন্ধুরা বল্লো না আমরা হাউজ বোটে থাকবো। প্রমোদিনী হাউজ বোট ভাড়া করে সারা দিন হ্রদে ঘুরে বেড়ালাম ও রাতে বোটে ছিলাম। সে এক অন্যরকম অনুভূতি।
পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা কাজী ইসরাফিল হক বলেন, পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছি। এ রকম হাউজ বোট আমি কাশ্মীরে দেখেছি। কিন্তু এখন আর এ হাউজ বোটে থাকার জন্য বাহির দেশে যেতে হবে না।
চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা নতুন দম্পতি আরফিন মেহেদী ও তাসনিম আক্তার জানান, বিয়ে হয়েছে তিন মাস। বিয়ের পর এটি আমাদের প্রথম ট্যুর বলা যেতে পারে। নতুন জীবনের প্রথম ট্যুরটি স্মরণীয় করে রাখতে হাউজ বোটে করে কাপ্তাই হ্রদে ঘুরেছি ও রাত্রিযাপন করেছি।
প্রমোদিনী হাউস বোটের স্বত্ত্বাধিকারী দীপাঞ্জন দেওয়ান জাগো নিউজকে বলেন, আমরাই প্রথম কাপ্তাই হ্রদে হাউজ বোট নিয়ে আসি। এরপর অনেকে হাউজ বোট নিয়ে ব্যবসা শুরু করেছে। এটিকে প্রজিটিভ দেখছি আমরা।
তিনি আরও বলেন, ২০১৯ সালে প্রথম হাউজ বোটটি হ্রদের জলে নামাই। চাহিদা দেখে আমরা একে এক তিনটি হাউজ বোট নামিয়েছি। এ বছর আরও একটি তৈরি করছি যেটি নভেম্বর-ডিসেম্বরের মধ্যে হ্রদের জলে পর্যটকদের সেবা দিতে নামবে।
মাউরুন হাউজ বোটের দায়িত্বরত কর্মকর্তা উচ্ছল চাকমা জানান, মোটামুটি সাড়া পাচ্ছি। আশা করছি সামনে পর্যটন মৌসুমে ভালো পর্যটকের সাড়া মিলবে। হাউজ বোট হচ্ছে পর্যটনের জন্য একটি নতুন সম্ভাবনা। এটিকে আরও উন্নয়ন করা হলে পর্যটন ক্ষেত্রে ভালো ভূমিকা রাখবে।
আরএইচ/জেআইএম