জিকা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের কাছে ১৮০ কোটি ডলারের জরুরি তহবিল চাওয়া হবে বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। মশাবাহিত এ ভাইরাস আমেরিকার দেশগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। খবর আলজাজিরার।সোমবার এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ বলছে, মশা নিয়ন্ত্রণ ও ভ্যাকসিন গবেষণা কর্মসূচি ও জিকা আক্রান্ত দেশগুলোতে এই অর্থ দেওয়া হবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সিবিএস নিউজকে দেয়া এক স্বাক্ষাতকারে বলেন, `ভালো সংবাদ হচ্ছে, এটি ইবোলা ভাইরাসের মতো নয়। জিকায় মানুষ মারা যায় না, অনেকেই আছেন যারা জিকায় আক্রান্ত কিন্তু তারা তা জানেন না।`প্যান আমেরিকান হেলথ অর্গানাইজেশন বলছে, উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার ২৬টি দেশে জিকা ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রগুলো (সিডিসি)জিকার প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন অঞ্চল থেকে ফিরে আসার পর দেশটির ৫০ ব্যক্তির দেহে ভাইরাসটি পাওয়া গেছে। এর আগে শনিবার কলম্বিয়ায় তিন হাজারের বেশি গর্ভবতী নারী মশাবাহিত জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে দেশটির প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়্যাল স্যান্তোস জানান। শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জিকা ভাইরাসের কারণে তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে প্রথমবারের মত ঘোষণা দেন। তারা বলেন, ওই তিনজনের মৃত্যুর জন্য মশা থেকে জন্ম নেয়া জিকা ভাইরাস দায়ী।ব্রাজিলে মাইক্রোসেফেলি রোগে আক্রান্ত অন্তত ৪ হাজার লোকের শরীরে জিকা ভাইরাস আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ব্রাজিলে প্রথম জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়। গর্ভবর্তী নারীরা এ রোগে আক্রান্ত হলে মাইক্রোসেফালিসহ শিশুর জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।শিশুর মাথা অস্বাভাবিকভাবে ছোট হয় এবং মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলোকে নারীদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ ও গর্ভপাতের সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে। চিকিৎসকেরা এরই মাঝে সদ্যোজাত শিশু কিংবা মায়ের দেহে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ রয়েছে এমন ১৭ ঘটনা শনাক্ত করেছেন।এখন পর্যন্ত এ রোগের কোনো প্রতিষেধকও নেই। আক্রান্তদের ৮০ ভাগের মধ্যেই কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। আক্রান্ত ব্যক্তি জ্বরসহ সামান্য অসুস্থতা বোধ করেন। শরীরে ফুসকুড়ি ওঠে এবং চোখ লাল হয়ে যায়।জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ মাসের শুরুতেই বিশ্বব্যাপী জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। জিকার প্রাদুর্ভাব রয়েছে এমন অঞ্চল থেকে আসা ব্যক্তির দেওয়া রক্ত গ্রহণ না করার জন্যও পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।এসআইএস/পিআর