দেশজুড়ে

লাখো প্রদীপ জ্বালিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা

“অন্ধকার থেকে মুক্ত করুক একুশের আলো” এ স্লোগানকে সামনে রেখে মৌলবাদ, কুশিক্ষা, পশ্চাদমুখিতা আর সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে ভিন্নরকম আয়োজনের মধ্যদিয়ে নড়াইলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। এক লাখ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানানো হলো ভাষা সৈনিকদের।  প্রতি বছরের ন্যায় এবারো ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সূর্য অস্ত যাবার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজ সংলগ্ন কুড়িডোব মাঠে ৬ একর জমির উপর প্রায় তিন হাজার কর্মী এক লাখ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন। মুহূর্তেই অন্ধকার ছাপিয়ে সারামাঠ আলোকিত হয়ে যায়। আলোর বর্ণিল ছটায় আলোকিত হয় শহীদ মিনার, জাতীয় স্মৃতিসৌধ, বিভিন্ন বর্ণমালা, আল্পনাসহ গ্রাম-বাংলার নানা ঐহিত্যবাহী নকশা। দৃষ্টিনন্দন এসব নকশা নড়াইলবাসীসহ ঢাকা ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত দর্শনার্থীরা উপভোগ করেন। নড়াইলের সব পথ, অলিগলি যেন মিশে যায় কুড়িডোব মাঠ এলাকায়। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ ভ্যানে বা রিক্সায় চড়ে, কেউবা প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল নিয়ে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন দেখেন। সব চোখ গিয়ে পড়ে বাহারি আলোর বর্ণিল ছটায়। এছাড়া ৬৫তম ভাষা দিবস উপলক্ষে ৬৫টি ফানুস ওড়ানো হয়।একুশ উদযাপন পর্ষদ-২০১৫ আয়োজিত প্রদীপ প্রজ্জ্বলনে উপস্থিত ছিলেন, নড়াইল জেলা প্রশাসক মো. হেলাল মাহমুদ শরীফ, জেলা পরিষদ প্রশাসক অ্যাড. সুবাস চন্দ্র বোস, পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম, উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক প্রফেসর মুন্সী হাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নিজামউদ্দিন খান নিলু, নড়াইল পৌরসভার মেয়র মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বিশ্বাস, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের পত্নী বেগম ফজিলাতুন্নেসা, নাট্যব্যক্তিত্ব ও দ্বীপশিক্ষা প্রজ্জ্বলনের রুপকার কচি খন্দকার, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মলয় কুমার কুন্ডু, শরফুল আলম লিটু, শামীমুল ইসলাম টুলু প্রমুখ।এর আগে বিকেলে আলোচনা, গণসঙ্গীত, আবৃতি, কবিতা পাঠ ও দেশাত্মবোধক গানের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। ভাষা শহীদদের স্মরণে নড়াইলে ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের শুরু হয় ১৯৯৭ সালে নড়াইলের সুলতান মঞ্চ চত্বরে। প্রথম বছর মাত্র ৭০০ মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের মধ্যদিয়ে এ আয়োজনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর থেমে থাকেনি। একুশ এলেই এভাবে স্মরণ করা হয় ভাষা শহীদদের। এখন বেড়েছে এর পরিধি। এবার মাটির প্রদীপ ও মোমবাতি মিলিয়ে এক লাখ প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যদিয়ে পালিত হলো অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। নড়াইল পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম জানান, দেশের সর্ববৃহৎ এ আয়োজনকে ঘিরে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল। র‌্যাবসহ পুলিশের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থায় শান্তিপূর্ণভাবে পালিত হয়েছে ২১ উদযাপনের আয়োজন।হাফিজুল নিলু/এআরএ/পিআর