ফরিদপুরে পিস্তল নিয়ে শো-অফ যেন থামছেই না। সম্প্রতি দুই ছাত্রলীগ নেতা ও একজন কলেজছাত্র পিস্তল প্রদর্শন করা ছবি ফেসবুকে দিয়ে আলোচনায় আসেন। এতে জেলাজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। এবার একটি বিদেশি পিস্তলসহ মৎস্যজীবী লীগ নেতার ছবি প্রকাশ্যে আসায় তোলপাড় শুরু হয়েছে ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে। জেলা মৎস্যজীবী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান পরশ শিকদারকে দেখা গেছে একটি বিদেশি পিস্তল হাতে নিয়ে শো-অফ করতে।
তবে পরশ শিকদার জানিয়েছেন, তিনি দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির শিকার। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা পিকুলের রাজনীতি না করায় তার এ ছবিটি ফেসবুকে ছেড়ে তাকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ছবিটি ফটোশপের কারসাজি নয়, আসল উল্লেখ করে পরশ সিকদার বলেন, পাঁচ বছর আগে শাহজাহান মৃধার পিকুলের ভাগনে পৌর যুবলীগের নেতা মিনহাজুল আবেদিন চয়নের মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ছবিটি তোলা।
তিনি আরও জানান, চয়নের একজন পরিচিত ব্যক্তির বাড়ির খামারে পাখির উপদ্রব ছিল। পাখি তাড়াতে তিনি একটি দামি এয়ারগান কেনেন। এয়ারগান কিনতে যাওয়ার সময় চয়নই তার গাড়িতে করে তাকে ওই বন্দুকের শোরুমে নিয়ে গিয়েছিলেন। তবে সেই এয়ারগান ক্রেতার বাড়ি বেনাপোল বলে জানালেও তার নাম-পরিচয় জানাতে পারেননি পরশ সিকদার।
‘“বন্দুকের শোরুমে আমি বসা ছিলাম। তখন ডিসপ্লে করে রাখা পিস্তলটি দেখিয়ে চয়ন আমাকে বলে, ‘মামা, এটা একটু উঁচু করে ধরো তো। একটা ছবি তুলি।’ এরপর সে মোবাইলে ছবিগুলো তোলে। আরও অনেক ছবি সে তুলেছিল। তবে এতদিন এসব ছবি কারও কাছে ছিল তা আমার জানা ছিল না। গতকাল রাতেই প্রথমে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মোর্তোজা তমাল আমাকে ফোন করে ছবিটি দেখেছে বলে প্রথম জানায়,” যোগ করেন মৎস্যজীবী নেতা পরশ সিকদার।
মিনহাজুল আবেদিন চয়ন ছবিটি তোলার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ঢাকার পল্টনের একটি আগ্নেয়াস্ত্রের শোরুম থেকে ছবিটি তোলা। পরশ অস্ত্র হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময় আমিই ছবিটি তুলেছিলাম। তারপর ছবিটি অনেকের মেসেঞ্জারে পাঠিয়েছিলাম। হয়তো কারও মেসেঞ্জারে থাকা পুরোনো সেই ছবিই কেউ ফেসবুকে ছেড়েছেন।’
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা পিকুল বলেন, ‘কে কার রাজনীতি করলো তাতে কী যায় আসে? অস্ত্রটি কি আমি তার হাতে তুলে দিয়েছি?’
তিনি বিষয়টি শুনেছেন তবে দেখেননি জানিয়ে বলেন, ‘ফেসবুকে কে ছবিটি ছেড়েছে সেটি দেখে লাভ আছে? অস্ত্রটি তো তারই হাতে। এজন্য এ বিষয়ে তাকেই জবাবদিহি করতে হবে।’
জেলা মৎস্যজীবী লীগের আহ্বায়ক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘পরশ সিকদার অস্ত্রবাজি করে এটি আমি বিশ্বাস করি না। সে হয়তো কারও অস্ত্র হাতে নিয়ে এভাবে ছবি তুলেছে। তবে ছবিটি যিনি ফেসবুকে ছেড়েছেন তিনিও হয়তো সুস্থ মস্তিষ্কে কাজটি করেননি। অনেকেই আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন। বিষয়টি জানার পর আমরা সঠিক ঘটনা জানার চেষ্টা করছি। তদন্তসাপেক্ষে এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
এন কে বি নয়ন/এসআর/জেআইএম