মেহেরপুরে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে আয়া নার্গিস হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী শহিদুল হক রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রোববার (১৩ জুলাই) দুপুরে মেহেরপুর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ আদেশ দেন।
অ্যাডভোকেট কাজী শহিদুল হক বলেন, আসামিদের ৩৬৪ ধারায় ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৩০২ ধারায় মৃত্যুদণ্ড সেই সঙ্গে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, ৩৭৯ ধারায় উভয়কে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০১ ধারায় তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড, সেই সঙ্গে আরও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, গাংনী উপজেলার সাহেবনগর গ্রামের ফোরকান আলীর ছেলে বাশারুল ইসলাম (৫২) ও একই গ্রামের জামিল হোসেনের ছেলে ফরজ আলী (৫১)। আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বামুন্দীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকে আয়ার চাকরি করতেন নার্গিস খাতুন। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই তিন মেয়েকে নিয়ে সাহেবনগরে (স্বামীর বাড়ি) বসবাস করতেন । এদিকে স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পদ নিয়ে তাদের সৎ ছেলে ও জামায়ের সঙ্গে জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলছিলো। ২০১৮ সালের ৫ আগস্ট সকাল ৯টার দিকে বাড়ি থেকে ক্লিনিকের উদ্দেশ্যে বের হন নার্গিস। বিকেল গড়িয়ে গেলেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। এমনকি তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ ছিলো। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তার সন্ধান না মেলায় গাংনী থানায় জিডি করেন তার মেয়ে তসলিমা খাতুন। ১৮ নভেম্বর জিডিটি মামলায় রূপান্তরিত হয়। মামলায় আসামি করা হয় তসলিমার সৎ ভাই ইয়াকুব আলী, ইউছুপ আলী ও ভগ্নিপতি ইসমাইল হোসেনকে।
পরে ২৪ জানুয়ারি বাশারুলের বাড়ির সেফটি ট্যাঙ্ক থেকে নার্গিসের অর্ধগলিত মরাদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইয়াকুব, বাশারুল ও জামিলকে আসামি করে চর্জশিট দেন। মামলা থেকে বাদ যায় ইউছুপ ও ইসমাইল। পরে ওই দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। আর আসামি ইয়াকুব এরই মধ্যে মারা যান।
আসিফ ইকবাল/এএইচ/জিকেএস