রাজধানীর ওয়াইডব্লিউসিএ স্কুল থেকে সাত বছরের ছেলেকে নিয়ে রিকশাযোগে বাসায় ফিরছিলেন লালবাগের গৃহবধূ সালমা বেগম। ঢাকা কলেজের বিপরীতে একটি বাসকে ওভারটেক করার সময় আরেকটি বাস তাদের রিকশার পাশ দিয়ে দ্রুত চলে যায়। হঠাৎ রিকশাটি দুলে উঠলে ভয়ে চিৎকার করে কেঁদে উঠে ছোট্ট ছেলেটি। সালমা বেগম তাকিয়ে দেখেন বাসের কোনার বের হয়ে থাকা লোহার পাতের সঙ্গে আঁচড় লেগে রিকশার হুডের প্লাস্টিক ছিঁড়ে গেছে। বাসটির পিছনেই একটি পুলিশের টহল গাড়ি, অদূরে ট্রাফিকের কনস্টেবল দাঁড়িয়ে থাকলেও চালকের বেপরোয়া ড্রাইভিং দেখেও বাসটিকে থামানোর চেষ্টা করলো না পুলিশ সদস্যরা। ঘটনাটি গতকাল রোববারের।জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে সালমা বেগম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বলেন, “এমন দেশে বাস করি, যেখানে সন্তান নিয়ে নির্বিঘ্নে পথ চলতে পারি না, সর্বদা প্রাণভয়ে থাকতে হয়।”৩৬ নম্বরধারী ওই বাসটির নাম ‘সেফটি এন্টারপ্রাইজ’। নামে সেফটি হলেও একটু লক্ষ্য করলেই সহজেই বোঝা যায় বাসটি মোটেও সেফটি নয়। বাসটির পিছনের দিকে লোহার পাত বিছিন্ন হয়ে বিপদজনকভাবে বাইরে বের হয়ে আছে। বাসটির দুই পাশে অসংখ্য আঁচড়ের দাগ ও রং উঠে গেছে। যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।কয়েকজন বাসযাত্রী জাগো নিউজকে জানান, এ দৃশ্য শুধু ঢাকা নিউ মার্কেটের নয়, ঢাকা শহরের বিভিন্ন রুটে যাতায়াতকারি অধিকাংশ বাসের গায়ে অসংখ্য আঁচড়ের দাগ। কোনো বাসের জানালার গ্লাস ভাঙা আবার কোনটির ড্রাইভিং সিটের সামনের গ্লাস ভাঙা।তারা আরো জানান, প্রতিটি রুটে বাস চালকরা ‘কার আগে কে যাবে ’ বেপরোয়া গাড়ি চালানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। বিশেষ করে যে সকল স্থানে বাস স্টোপেজ রয়েছে সেগুলো সামনে আসামাত্রই চালকরা একে অপরকে ওভারটেক করতে গিয়ে এক বাস আরেক বাসের গায়ে ধাক্কা খায়। এ ধরনের ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। কোনো কোনো বাসে দিনের পর দিন আচড়ের ফলে লোহার পাত বাইরে বেরিয়ে গেছে। ওই সব লোহার পাতে লেগে রিকশার যাত্রীরা আহত হয়।এদিকে গতকাল রোববারও এয়ারপোর্ট রোডে দ্রুতগামী একটি বাস প্রাইভেটকারকে চাপা দিলে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মজনু নামের একজন বাস যাত্রী বলেন, বর্তমানে রাস্তায় আনফিট বাসের সংখ্যা বেড়ে গেছে। লক্কড় ঝক্কড় মার্কা গাড়িতে রং করে রাস্তায় নামানো হচ্ছে। রাস্তায় ট্রাফিক থাকলেও তারা রহস্যজনক কারণে এসব গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।এমইউ/আরএস/পিআর