সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে হত্যা মামলায় ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা মো. নাজির এ আদেশ দেন।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- একই উপজেলার খাস সোনামুখী মধ্যপাড়া গ্রামের শ্রী সুজন কুমার সরকার, বিশ্বাস বাড়ি এলাকার রুবেল, বলরামপুর পূর্বপাড়া এলাকার শিপন, ইউসুফ আলী, লিটন মণ্ডল ও সড়াতৈল গ্রামের রায়হান সরদার।
সাজাপ্রাপ্ত রায়হান সরদারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি অন্য একটি ধারায় ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্টেনোগ্রাফার রাশেদুল ইসলাম বলেন, দণ্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামির মধ্যে পাঁচজন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আসামি সুজন কুমার সরকার পলাতক।
আরও পড়ুন: যাবজ্জীবন অর্থ আমৃত্যু কারাদণ্ড
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রায়হান সরদার ও শিপন ভিকটিম মনোতোষের বাবার স-মিলে কাজ করতেন। কাজের সময় রায়হান সরদার মনোতোষের বাবার কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা ধার নেন। কিছুদিন পর মনোতোষের বাবার স-মিলটি বন্ধ হয়ে গেলে তারা অন্য জায়গায় কাজ করেন। এর এক পর্যায়ে মনোতোষের বাবা পাওনা টাকার জন্য রায়হান সরদারকে চাপ দিয়ে বকাঝকা করলে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করেন। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রায়হান সরদার তার সহযোগী সুজন কুমার সরকার, রুবেল, শিপন, ইউসুফ আলী ও লিটন মণ্ডলের সঙ্গে পরামর্শ করেন। পরিকল্পনা মোতাবেক ২০১৭ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তিনি শিপনের বাড়িতে পিকনিকের আয়োজন করেন এবং মনোতোষকে দাওয়াত দেন। খাওয়া দাওয়ার পর সুজন কুমার সরকার, রুবেল, রায়হান সরদার, শিপন, ইউসুফ আলী ও লিটন মণ্ডল ভিকটিমকে বেঁধে রেখে তার বাবার কাছে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন।
আসামিরা ভিকটিম মনোতোষকে বেলকুচি উপজেলার বিশ্বাসবাড়ি হুরা সাগর নদের উত্তর পাশে নূর নবীর ইউক্যালিপটাস বাগানে নিয়ে যান। সেখানে তারা মদ ও গাঁজা সেবন করে মনোতোষকে পরিকল্পনা অনুযায়ী মদের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে বেশি পরিমাণ মদ খাওয়ান। এ সময় ভিকটিম নিস্তেজ হয়ে পড়লে আসামিরা তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাশের একটি ক্ষেতে কচুরিপনা দিয়ে ঢেকে রাখেন।
এ ঘটনায় মনোতোষের চাচাতো ভাই অচিন্ত্য কুমার সরকার বাদী হয়ে বেলকুচি থানায় মামলা করেন। মামলা চলাকালে ১৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ আদেশ দেন।
এম এ মালেক/আরএইচ/জিকেএস