চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে নেত্রকোনার বারহাট্টায় উজানগাঁও মনাষ আব্বাছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নিয়োগ পরীক্ষা দ্বিতীয়বারের মতো স্থগিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
রোববার (১২ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে জেলা শিক্ষা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গফুর এতথ্য নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ তদন্তে এখন ওই স্কুলে আছি।
এরআগে বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) স্কুলের পাঁচ পদে নিয়োগে ব্যাপক বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। উপজেলার নয়ন মিয়া ও সন্ধ্যা রানী নামের দুজন এ অভিযোগ করেন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করেন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫-৬ মাস আগে ওই স্কুলে পাঁচ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। সেসময় চাকরিপ্রার্থীদের কাছে থেকে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় এক ব্যক্তি মামলা কররেন। পরে নিয়োগ স্থগিত করা হয়। অভিযোগের তদন্ত শেষে ১০ অক্টোবর আবারও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। কিন্তু আগের মতো এবারও নিয়োগের জন্য ঘুস নেওয়ার অভিযোগ ওঠে প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির বিরুদ্ধে। ফলে নিয়োগ পরীক্ষাটি স্থগিত করে পুনরায় তদন্ত শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
স্কুল সূত্রে জানা গেছে, উজানগাঁও মনাষ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী, আয়া ও নিরাপত্তা প্রহরীসহ পাঁচ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় গত ১০ অক্টোবর। রোববার নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুস নেওয়ার অভিযোগে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলার বাউসী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘যাদের নিয়োগ দেওয়া হবে তাদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে সিলেক্ট করে রাখা হয়েছে। এ বিষয়টা এলাকার সবাই জানে। ৫-৬ মাস আগেও একবার ওই পদগুলোতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়েছিল। তখনো অগ্রিম ঘুস নেওয়ার অভিযোগে পরীক্ষা স্থগিত হয়।’
স্থানীয় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দর কষাকষি করে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নুরুল আমিন বলেন, পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। কর্মকর্তারা এখন স্কুলে আছেন। পরে কথা বলবো।
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শামছুল হক বলেন, পরীক্ষা স্থগিত হয়নি, আমরা স্থানান্তরিত করেছি। তদন্ত চলছে। পরে কথা হবে।
এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল গফুর বলেন, চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে ঘুস নেওয়া হচ্ছে। দুই ব্যক্তির অভিযোগের পর নিয়োগ পরীক্ষাটি স্থগিত করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
এইচ এম কামাল/এসআর/জিকেএস