বঙ্গোপসাগরের সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) সন্ধ্যা ৬টায় এটি ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ এ রূপ নেয়। এ অবস্থায় মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
শনিবার (২৫ মে) আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৮) এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ এ পরিণত হয়েছে। এটি আজ সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
আরও পড়ুন
ঘূর্ণিঝড়ের বড় অংশ আঘাত হানতে পারে রোববার সন্ধ্যার পরপায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে সাত নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে নম্বর স্থানীয় সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ছয় নম্বর বিপৎসংকেত সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩-৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
আরও পড়ুন
মোংলায় প্রস্তুত ১০৩ আশ্রয়কেন্দ্র, ১৩২০ স্বেচ্ছাসেবকঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা/ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মি.মি.) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মি.মি.) বর্ষণ হতে পারে।
এছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এর আগে আজ সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি সভা শেষে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ এর মূল অংশ রোববার (২৬ মে) সন্ধ্যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগর আইল্যান্ড এবং বাংলাদেশের পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার মধ্যদিয়ে অতিক্রম শুরু করতে পারে। ঘূর্ণিঝড়টির ৭০ শতাংশ বাংলাদেশ এবং ৩০ শতাংশ ভারতে আঘাত হানতে পারে।
আরএএস/ইএ/জেআইএম