লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে আটজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন উভয়পক্ষের শতাধিক লোক।
রোববার (৪ আগস্ট) রাত ১০ টার দিকে লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সোহেল রানা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের ভাষ্যমতে, নিহতরা হলেন ওসমান গনি, মো. কাউসার, সাদ আল আফনান, তৌহিদ কবির রাফি, রিয়াজ চৌধুরী, আহমেদ শরীফ, হারুন ও রাসেল। নিহতের অধিকাংশই আওয়ামী লীগ সমর্থক। তবে নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারীরা জানান, লক্ষ্মীপুর শহরের মাদাম এলাকায় দুপুর ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোটা আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এতে গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হন। একপর্যায়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সালাহ উদ্দিন টিপু কয়েক রাউন্ড গুলি করেন। দুপুর ২টার দিকে আন্দোলনকারীরা তার শহরের তমিজ মার্কেট এলাকার বাসা ঘেরাও করেন। এসময় চেয়ারম্যান টিপু দলবল নিয়ে বাসায় ছিলেন। একপর্যায়ে তার বাসার ছাদ থেকে গুলি করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়ছেন। পরে ক্ষুদ্ধ আন্দোলনকারীরা টিপুর বাসায় পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন। একপর্যায়ে টিপুর বাসা থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় পিটিয়ে আহত করা হয় ২০-২৫ জনকে। এরমধ্যে ৫-৬ জনের মরদেহ সড়কে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এছাড়া আন্দোলনকারীরা লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি চৌধুরী মাহমুুদুন্নবী সোহেলের বাসভবনে ভাঙচুর করে আগুন দেন। তবে ঘটনার সময় এমপি বাসায় ছিলেন না। তিনি পরিবারসহ ঢাকায় অবস্থান করছেন।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অরুপ পাল বলেন, বিকেল পর্যন্ত আহত ৫৩ জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এর অধিকাংশই গুলিবিদ্ধ।
তিনি আরও জানান, মৃত অবস্থায় তিনজনকে আনা হয়। ঢাকা নেওয়ার পথে একজন মারা গেছেন।
এ বিষয়ে সালাহ উদ্দিন টিপুর বক্তব্য জানা যায়নি।
সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়াছিন ফারুক মজুমদারকে বলেন, আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানের বাসভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণ আনতে কাজ করছি। বিস্তারিত পরে বলা যাবে।
কাজল কায়েস/এসআর