শেরপুরে ভুয়া ডিআইজিসহ প্রতারক চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার
অর্থের বিনিময়ে সরকারি চাকরি দেয়ার নাম করে চার ছাত্রের কাছ থেকে ২১ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে শেরপুরে এক ভুয়া ডিআইজি ও তার সহযোগী এক কলেজ শিক্ষকসহ চার প্রতারককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ডিআইজি পরিচয়দানকারী নড়াইল জেলার লোহাগড়া থানার আব্দুস ছাত্তারের ছেলে মো. রনি আমিন (৪০), শেরপুর সদর উপজেলার কামারের চর কলেজের শরীর চর্চা শিক্ষক মো. জুলহাস উদ্দিন (৪৮), ভুয়া ডিআইজির এপিএস পরিচয়দানকারী ময়মনসিংহ জেলার সদরের মো. কামরুজ্জামান (৩৮) ও শেরপুর সদরের মো. আবু সাইদ (২০)।
প্রতারক চক্রের ওই চার সদস্যকে শনিবার রাতে শেরপুর সদর থানায় সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হলে তারা ঘটনার সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেন।
সদর থানার ওসি মাজহারুল করিম জানান, গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সেজে মিথ্যা পরিচয় প্রদানপূর্বক অপরাধজনক বিশ্বাস ভঙ্গ করে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে শেরপুরের সোহেল, সুজন ও মাসুম নামে তিনজনের কাছ থেকে ২১ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। তাদের বিরুদ্ধে শেরপুর সদর থানায় মামলা রেকর্ডের প্রক্রিয়া চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের উপ-কমিশনার (ডিআইজি) পরিচয় দিয়ে ওই চার প্রতারক শেরপুর সদর উপজেলার রঘুনাথপুর সোলারচর গ্রামের শাখাওয়াত হোসেনের ছেলে মো. মাসুম মিয়া, বেতমারী পশ্চিম পাড়া গ্রামের নেহাজ উদ্দিনের ছেলে সোহেল রানা (১৮), বেতমারী উত্তরপাড়ার আয়নাল হকের ছেলে সুজন মিয়াসহ (১৮) আরও ৮ জনের কাছ থেকে পুলিশের এসআই, বিমান বাহিনীর নন-কমিশন পদে সহ সরকারি চাকরি দেয়ার নাম করে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেন।
এর মধ্যে মাসুম, সোহেল ও সুজনের কাছ থেকে ডিআইজির স্বাক্ষরকৃত ভুয়া ও মিথ্যা নিয়োগপত্র দিয়ে ২১ লাখ টাকা আত্মসাত করেন। পরে তাদের শেরপুর শহরের কবির প্যাথলজিতে নিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করে ময়মনসিংহে ট্রেনিংয়ে যাওয়ার কথা বলে।
বিষয়টি নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হলে ঘটনাটি শেরপুর সদর থানায় জানানো হয়। পরে ওসি মাজহারুল করিমের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গত দুই দিন অভিযান চালিয়ে ময়মনসিংহ থেকে ভুয়া ডিআইজি রনি আমিন ও তার পিএস পরিচয়দানকারী কামরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করে।
পরে তাদের দেয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে প্রতারক চক্রের অপর দুই সদস্য কামারেরচর কলেজের শিক্ষক জুলহাস উদ্দিন ও আবু সাইদকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে পুলিশ আইডিকার্ড ও বিভিন্ন নিয়োগ সংশ্লিষ্ট ভুয়া ও মিথ্যা কাগজপত্র উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে শেরপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. শাজাহান মিয়া বলেন, এ ঘটনায় সদর থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। রোববার রিমান্ড চেয়ে গ্রেফতারকৃতদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
হাকিম বাবুল/বিএ