চবিতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন হচ্ছে না
শিক্ষক সমিতির ঘোর আপত্তির মুখে অবশেষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) হচ্ছে না প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন। গতকাল মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য চবিতে নির্মাণাধীন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল নির্ধারণ করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ও এতে সন্মতি দেয়। তবে হলটির অবস্থান শিক্ষক ও কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বাসস্থানের পাশে হওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান শিক্ষকরা।
বুধবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, শিক্ষক সমিতি স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় ক্যাম্পাসে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন করতে আপত্তি জানিয়েছি। আমি সরকারের উচ্চপর্যায়ে তা অবহিত করেছি। যেহেতু শিক্ষকরা চাচ্ছেন না তাই হলটিতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন হচ্ছে না। অথচ গতকাল শিক্ষকদের মতামত নিয়েই আমরা রাজি হয়েছিলাম। আমার একার কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না।
এদিকে এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নির্ধারণের খবরে শিক্ষক ও স্থানীয়রা গতকাল দফায় দফায় বৈঠক করে এর প্রতিবাদ জানান। এর প্রেক্ষিতে বুধবার দুপুরে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে স্মারকলিপি প্রদান করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন স্থাপনে উদ্বেগ জানিয়ে বলা হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এবং যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোলের সাম্প্রতিক কোয়ারেন্টাইন বিষয়ক নীতিমালায় বলা হয়, কোয়ারেন্টাইনের জন্য নির্ধারিত এলাকা হতে হবে জনবসতি থেকে দূরে এবং সুনির্দিষ্ট একটি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। আবাসস্থলে প্রতি রুমের সঙ্গে সংযুক্ত শৌচাগার বা টয়লেট থাকতে হবে। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উক্ত হলের খুব কম দূরত্বের মধ্যেই আশপাশে শিক্ষক ও কর্মচারীদের বসতি। হলের রুমগুলোতে সংযুক্ত টয়লেটও নেই, যা এ নীতিমালার ব্যাতিক্রম।
এছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী ইউভি (আল্ট্রাভায়োলেট রে) ও হট রুম সমৃদ্ধ নিয়মিত জীবাণুমুক্তকরণ সুবিধা সমৃদ্ধ কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থাকতে হয়। এ রকম সুবিধা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বর্জ্য অপসারণ ব্যবস্থাপনা নেই। সেই জায়াগায় ক্যাম্পাসে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করার সিদ্ধান্ত নেয়াটা অত্যধিক ঝুঁকির। তাই ৩০ হাজার ছাত্র, শিক্ষক ও কর্মচারীদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্তটি বাতিল ও পুনর্বিবেচনার জোর দাবি জানান শিক্ষকরা।
আবদুল্লাহ রাকীব/আরএআর/এমকেএইচ