মেস ভাড়া নিয়ে বিপাকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি বন্ধ হয়েছে মেসও। ফলে অধিকাংশ শিক্ষার্থী বাড়িতে চলে গেছে। তবে মেস বন্ধ থাকলেও ভাড়া ঠিকই দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এতে বিড়াম্বনায় পড়েছে ঢাকা কলেজের প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী৷
শিক্ষার্থীদের দাবি, মেস মালিকরা বাড়ি ভাড়া মওকুফ করুক। তবে মেস মালিকদের এ বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ঢাকা কলেজে ১৬ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী অধ্যায়ন করছে। কলেজের সাতটি হল মিলে মাত্র সাড়ে ৪-৫ হাজার শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা পায়। বাকি প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের বাইরে ভাড়া মেসে থাকতে হয়।
ঢাকা কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, মেসে থাকাদের অধিকাংশই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাদের অধিকাংশই টিউশনি অথবা পার্টটাইম চাকরি করে খরচ বহন করে। করোনার কারণে মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ সবচেয়ে কষ্টে রয়েছেন। তাই মানবিক বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের মেস ভাড়া মওকুফের দাবি জানিয়েছেন তারা। তবে মেস ভাড়া অর্ধেক কমানো হলেও এতে অনেক শিক্ষার্থী উপকৃত হবে বলেও জানান তারা।
রুবেল হাসান নামের আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘পড়ালেখার পাশাপাশি ঢাকায় একটা পার্টটাইম জব করে নিজের খরচ চালিয়ে বাড়িতেও অল্প কিছু টাকা দিতাম৷ কলেজ ও মেস বন্ধ হওয়ায় এখন বাড়িতে অবস্থান করছি। মেসের মালিক ফোন দিয়ে বিকাশে টাকা পাঠাতে বলছেন। এমনিতেই পরিবারের সঙ্গে কষ্টে আছি। সরকারের উচিত বিষয়টা দেখা।
শিক্ষার্থীদের এ দাবির সঙ্গে একমত ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগও ৷ ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল উদ্দিন মাহী বলেন, আমরা এক সংকটময় অবস্থা পার করছি। পরিস্থিতি বিবেচনায় সব মেস মালিকের প্রতি ভাড়া মওকুফে মানবিক আবেদন জানাই। মানুষ বাঁচলে তবেই তো দেশ বাঁচবে।
ঢাকা কলেজ শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. আব্দুল কুদ্দুস সিকদার বলেন, শিক্ষার্থীরা এখন নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছে। অনেক শিক্ষার্থী বাড়ি ভাড়া নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে। বাড়ির মালিকেদর প্রতি আহ্বান থাকবে মানবিক দিক বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের বাড়ি ভাড়া মওকুফ বা শিথিলের জন্য।
ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নেহাল আহমেদ বলেন, সংকটপূর্ণ এই সময়ে মেস মালিক ও সংশ্লিষ্ট সকলকে শিক্ষার্থীদের প্রতি সহনশীল হতে হবে। কেননা এখন সকলেই অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী নিজের খরচ নিজেই সংগ্রহ করে। তারা এখন ঘর থেকেই বের হতে পারছে না। আর অনেক অভিভাবকদের রোজগারও একেবারেই বন্ধ। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ভাড়ার বিষয়টি মালিকদের মানবিক বিবেচনায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই মালিকদের অবস্থার কথাও চিন্তা করতে হবে। তাদের উপর জোরপূর্বক কোনো সিদ্ধান্ত চাইলেই চাপিয়ে দেয়া সমীচিন নয়। কারণ অনেকের পরিবার পরিজনের খরচ এই ভাড়া থেকেই আসে। তাই মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাবো, যেন সবাই সবার সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাশে থাকেন।
নাহিদ হাসান/এএইচ/জেআইএম