কুপন দেখালেই মিলছে এক মাসের ত্রাণ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০২:৫৫ পিএম, ০৪ মে ২০২০

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কর্মহীন ও অসহায়দের সহায়তা করতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষকরা। অসহায় মানুষের মাঝে কুপনের মাধ্যমে বিশেষ পদ্ধতিতে ত্রাণ সহায়তা করছেন তারা।

ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমকে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখা ও গ্রহীতার পরিচয় গোপন রাখতে এই বিশেষ পদ্ধতি অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ কার্যক্রমে শিক্ষকদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীও সহায়তা করেছেন।

জানা যায়, ক্যাম্পাসের রিকশা-ভ্যানচালক, ক্যানটিনের কর্মচারী, বিভিন্ন অস্থায়ী দোকানদার ও হোটেল কর্মচারীদের মধ্যে যারা এখন কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এমন ১৫০ জনের তালিকা করা হয়েছে। এরপর তাদের সবাইকে কুপন দেয়া হয়েছে। প্রতিটি কুপনে খাদ্যসামগ্রীর পরিমাণ উল্লেখিত আছে। নির্দিষ্ট দোকানে গিয়ে এই কুপন দেখালে পরিবারের জন্য প্রায় এক মাসের খাদ্যসামগ্রী পেয়ে যান তারা।

খাদ্যসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ২০ কেজি চাল, আলু আট কেজি, পেঁয়াজ দেড় কেজি, ছোলা দেড় কেজি, মুড়ি দেড় কেজি, তেল এক লিটার, লবণ এক কেজি, চিনি এক কেজি ও সাবান একটি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কুপন পদ্ধতিতে যেমন জনসমাগম এড়ানো সম্ভব হচ্ছে তেমনি সামাজিক দূরত্বের জটিলতা নেই। অন্যদিকে পরিচয় গোপন থাকায় মধ্যবিত্তরা সম্মান রক্ষা করেই এ সহায়তা নিচ্ছেন।

এই উদ্যোগের সমন্বয়ক ও জাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এ মামুন জাগো নিউজকে বলেন, আমরা কয়েকজন শিক্ষক মিলে প্রথমে ফান্ড তৈরির কাজ শুরু করি। ফান্ডে শিক্ষকরা সহায়তা করেছেন। এছাড়া কয়েকজন কর্মকর্তা ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীও সহায়তা করেছেন। ত্রাণ সহায়তা করতে গিয়ে যাতে কেউ সংক্রমিত না হয় ও স্বাস্থ্যসম্মত প্রক্রিয়ায় যেন এটি সম্পন্ন করা যায়; এজন্য কুপন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে কোন ধরনের ঝুঁকি ছাড়াই ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ১৫০ টি পরিবারের একটা তালিকা করেছি। তালিকায় চা-বিক্রেতা, দোকানদার, ক্যানটিনের কর্মচারী, রিকশা ও ভ্যানচালক রয়েছেন যারা এখন কর্মহীন হয়ে অসহায় দিনযাপন করছেন। স্বেচ্ছাসেবকরা ব্যক্তির বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ ও কুপন বিলি করেছেন। সবাই কুপনে উল্লেখিত দোকান থেকে নিরাপদে ত্রাণ সহায়তা সংগ্রহ করেছেন। কুপনে প্রদানকৃত খাদ্যসামগ্রী একটি পরিবারের প্রায় একমাস চলে যাবে। এছাড়া রমজানের শেষ দিকে এই অসহায় মানুষদের দ্বিতীয় দফায় সহায়তা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এই কার্যক্রমে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আশরাফুল আলম, লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মনির উদ্দিন শিকদার, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ মাকসুদুর রহমান।

ফারুক হোসেন/এএম/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।