হল খুলে দেয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সিদ্ধান্ত কাল

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৭:৪৯ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১

আবাসিক হল খোলা ও পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে কোনো ‘পিসমিল’ (টুকরো টুকরো) সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক বিষয়ে আগামীকাল (২৩ ফেব্রুয়ারি) একাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবসিক হল খুলে দেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। সমাবেশ শেষে সকল বর্ষের জন্য হল খুলে দেয়ার দাবিতে উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি প্রদান করে। এরপর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন উপাচার্য।

১৩ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলবে কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, একটি পরিপ্রেক্ষিতে একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ১৩ মার্চ থেকে অনার্স ও মাস্টার্সের পরীক্ষার্থীদের হলে রেখে পরীক্ষা নেয়ার। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা আগামীকাল জরুরি ভিত্তিতে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা ডেকেছি। সেখানে আমাদের জাতীয় সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনা, তাদের হলে উঠানো ও পরীক্ষার তারিখ নিয়ে আলোচনা হবে।

তিনি আরও বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিনেশনের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত, সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। প্যানডেমিকের মধ্যে যেকোনো সিদ্ধান্ত ‘পিসমিল’(টুকরো টুকরো) হয় না, সেগুলো জাতীয়ভাবে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত হতে হয়, সমন্বিত হতে হয়। না হলে অনেক সময় মহামারির ঝুঁকি বাড়ে। সেগুলো বিবেচনায় নিয়েই একাডেমিক কাউন্সিল সভা করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দায়িত্বশীল। এর ব্যতিক্রম আমাদের চোখে পড়ে না। আশা করি তারা তাদের বিবেকপ্রসূত সিদ্ধান্ত নেবে। শিক্ষার্থীদেরও কিন্তু চাপ অনেক। তারা ধৈর্য ধরেছে। তাদের কথা চিন্তা করে যেখানে যে সিদ্ধান্ত প্রয়োজন একাডেমিক কাউন্সিল তা নেবে।

হল খোলার আন্দোলন নিয়ে ‘দ্বৈত’ অবস্থানে শিক্ষার্থীরা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে হল খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ৭২ ঘণ্টার ভেতরে সিদ্ধান্ত নেয়ার আল্টিমেটাম দেয়া হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাঁচজন প্রতিনিধি স্মারকলিপি নিয়ে উপাচার্যের কাছে যান। উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকের পর প্রতিনিধিরা তাদের পূর্বঘোষিত আল্টিমেটামের সুর নরম করে।

jagonews24

তাদের কেউ প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার পক্ষে মত দেয়। আবার কেউ আন্দোলনের মাধ্যমে হলে ওঠার পক্ষে স্লোগান দেয়। এ নিয়ে আন্দোলনকারীদের মধ্যে সামান্য উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা উপাচার্য কার্যালয় ত্যাগ করেন।

নেমে পড়েছেন শহীদুল্লাহ্ হলের শিক্ষার্থীরা

জোরপূর্বক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ও অমর একুশে হলে ওঠা শিক্ষার্থীরা কয়েক ঘণ্টা অবস্থানের পর হল থেকে বেরিয়ে আসেন।তবে কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেছেন, হলে ওঠার দাবিতে আমাদের আন্দোলনের নেপথ্যে হল সংসদের ভিপি হোসাইন আহমেদ সোহান ছিলেন। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর সিদ্ধান্তের পর তিনিই আমাদেরকে হল থেকে নেমে যাওয়ার জন্য বলেন।

তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হল সংসদের ভিপি ও বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আহমেদ সোহান। তিনি বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের হল থেকে নেমে যাওয়ার বিষয়ে কোনো চাপ প্রয়োগ করিনি। তবে কেউ যদি আমাদের কাছে বলে আমরা হলে থাকব কি থাকব না। তখন তো আমরা বলবই যে, না থাকায় ভালো।’

এ বিষয়ে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা হলে একত্রে প্রবেশ করেছে গেট টুগেদার করার জন্য। হলে থাকার প্রস্তুতি নিয়ে তারা আসেনি। কিছুক্ষণ অবস্থানের পর তারা স্বেচ্ছায় হল থেকে চলে যায়।’

আল সাদী/এআরএ/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।