পরিবহন সংকট: বিকেলের বাসে সিট রাখতে হয় সকালে

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাককানইবি
প্রকাশিত: ০৬:৩০ পিএম, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

ঘড়ির কাটায় তখন দুপুর ২টা। আর ১৫ মিনিট পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নজরুল ভাস্কর্যের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকা বাসগুলো যাত্রা শুরু করবে। কিন্তু বাসে উঠে সিট পাবার কোনো উপায় নেই। পরিবহন সংকট থাকায় শিক্ষার্থীরা সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে সিটগুলোতে ব্যাগ, খাতা, বোতল বা কাগজ দিয়ে বন্ধুদের জন্য বরাদ্দ করে রেখেছেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নিত্যকার ঘটনা এটি। ক্যাম্পাস থেকে ময়মনসিংহের টাউনহলের দূরত্ব প্রায় ২৬ কিলোমিটার। বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ আবাসিক সুবিধা না থাকা, শহরে সুযোগ সুবিধা বেশি থাকা ও টিউশনসহ নানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০-৩৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শহরে থাকেন। তাদের সবারই ক্যাম্পাসে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন। তবে চাহিদা অনুযায়ী পরিবহন সংখ্যা যথেষ্ট নয় বলে অভিযোগ রয়েছে শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৯টা ও ১০টায় টাউনহল থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো দুপুর ২টা ১৫ ও ৪টা ১৫ মিনিটে ক্যাম্পাস থেকে টাউনহল যায়। সকালের বাসগুলোতে যারা ক্যাম্পাসে আসেন তারা নামার সময়ই ফেরার জন্য সিট রেখে দেন। তাদের দাবি, দুপুর কিংবা বিকেলের বাসে এখনি সিট রাখতে হচ্ছে। তা নাহলে পরে যুদ্ধ করেও সিট পাওয়া যাবে না। নিয়মিত অনেকেই দাঁড়িয়েই যান ২৬ কিলোমিটার রাস্তা। প্রচণ্ড ভিড়ে বাসে নড়াচড়ার জায়গাও থাকে না।

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া জান্নাত ইভা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস সংখ্যা অপ্রতুল। তাই সিট পেতে বেগ পেতে হয়। দুটায় ময়মনসিংহ যেতে চাইলে কেউ এগারোটাতেই সিট রাখতে আসতে পারে না।

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ের জন্য নতুন সিডিউল করা হয়েছে। যখন যায় তখন এক সঙ্গে ৪-৫ টা বাস যায়। সবাই সকাল থেকে অপেক্ষায় থেকে সিট রেখে দেন।

পরিবহন দফতর সূত্র জানায়, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১৯ বাস-মিনিবাস নিয়মিত চলাচল করছে। এরমধ্যে নিজস্ব বাস সাতটি, নিজস্ব সিভিলিয়ান মিনিবাস রয়েছে চারটি। এছাড়া বিআরটিসির ভাড়া করা ৬টি ও শিকদার ট্রান্সপোর্টের দুটি বাস চলছে নিয়মিত।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক ড. মো. আরিফুর রহমান বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ে প্রস্তুতকৃত নতুন সিডিউলের কারণে একটু চাপ পড়ছে। সরকারি নির্দেশনা মেনেই সেটি করা হয়েছে। তবে সংকট দূর করতে সম্প্রতি নতুন দুটি নিজস্ব বাস যুক্ত হয়েছে। কিন্তু একজন শিক্ষার্থী ৫/৭ জনের জন্য সিট রেখে দিচ্ছে বলে সময়মত এসেও অনেকে সিট পাচ্ছেন না।

নতুন দুটি বাস যুক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ভাড়া বাস ও নির্ভরতা কমিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছি। বাস দুটি চলাচল শুরু করলে ভিড় ও চাপ কমবে।

আহসান হাবীব/আরএইচ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।