বাকৃবি ভিসির বিরুদ্ধে সরকারি দুই বাসভবন ব্যবহারের অভিযোগ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ময়মনসিংহ
প্রকাশিত: ০২:৩৯ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২২

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসানের বিরুদ্ধে সরকারি দুই বাসভবন ব্যবহার, নিয়মিত অফিস না করা, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, অর্থের অপচয়, শিক্ষকদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশ।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অনুপ্রবেশকারী, অসৎ ও আদর্শহীন ব্যক্তি দ্বারা প্রশাসন পরিচালনা, শিক্ষা সংক্রান্ত অনিয়ম এবং স্বেচ্ছাচারিতা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে বিভিন্ন পদে নিয়োগে অনিয়মসহ ৯টি অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. পূর্বা ইসলাম। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম মুজিব আদর্শের একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর সংঘটনটি ঘিরে সৃষ্টি হয়েছে বিভেদ। তার আশকারায় দুইভাগে বিভক্ত প্রাণের সংঘটনটি। শুধু তাই নয়, সব ক্ষেত্রে উপাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ করছে। স্থবির হয়ে পড়ছে উন্নয়ন কাজ। ফেরত যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক ড. মনজুরুল আলম চম্পক বলেন, কয়েক বছরে বর্তমান উপাচার্যের সময়ে যে কয়েকটি নিয়োগ হয়েছে তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। এতে উপাচার্য ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশ ও জাতি। উপাচার্যের গাফিলতির কারণে সেশনজট কোনোভাবেই কমছে না। বিভিন্ন খাতে অপব্যয় মাত্রা ছাড়াচ্ছে। দুটি সরকারি বাসা ব্যবহারের পাশাপাশি খাওয়া দাওয়া, অতিথি আপ্যায়ন এমনকী পোষা প্রাণিও তিনি বাসভবনে রাখেন।

গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার বলেন, বিতর্কিত লোকজন দিয়ে উপাচার্য প্রশাসন পরিচালনা করছেন। যারা বিগত সময়ে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন আজ তারাই প্রশাসনিক পদে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। তিনি উপাচার্য হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার জন্য নির্দিষ্ট বাসভবন ব্যবহার ছাড়া বিশাল আকৃতির আরেকটি সরকারি বাসা ব্যবহার করছেন। বেশিরভাগ সময় তিনি ঢাকায় থাকেন। যার জন্য প্রশাসনিক কাজে স্থবিরতা কোনোভাবেই কমছে না।

এসময় গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. সাইদুর রহমান ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক ড. ইমদাদুল হক চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, আমার মতো স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বিগত সময়ে কোনো ভিসিরাই দায়িত্বপালন করতে পারেনি। উন্নয়নের কোনো টাকাই ফেরত যায়নি। শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগে অনিয়মের প্রশ্নই ওঠে না। নিয়োগে অনিয়ম বা স্বজনপ্রীতি বা পরিবারের কোনো লোককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে কেউ তা প্রমাণ করতে পারবে না।

সরকারি বাসভবন ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি একটি বাসাই ব্যবহার করি। ময়মনসিংহ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা; আমার জন্য নির্ধারিত বাসভবনের মেয়াদ শেষ। সেটিকে ইঞ্জিনিয়াররা অনিরাপদ ঘোষণা করেছে। তাই, সেটিতে বসবাস করা হয় না। অন্য যে বাসাটির কথা বলা হচ্ছে, আমি সেখানে বসবাস করি না। বিভিন্ন মিটিংয়ের প্রয়োজনে মাঝে মাঝে ব্যবহার করি।

গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের বিভক্তি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম বিভক্ত হওয়ার বিষয়ে আমার কোনো হস্তক্ষেপ নেই। বরং মিলিয়ে দেওয়ার জন্য আমি পাঁচবার তাদের নিয়ে আলোচনা করেছি। কিন্তু, তারা কোনো সমাধান মেনে নেননি। আর, অপচয় আমার মধ্যে নেই, তা কমবেশি সবাই জানেন। কাজ করতে হলে বোর্ড গঠন করা হয়, তারা সেটি তদারকি করে থাকেন।

মঞ্জুরুল ইসলাম/এমআরআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।