জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

সমাবর্তনের গাউন পরে হাঁড়ি-পাতিল মাজলেন শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশিত: ০৬:৪৮ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

সমাবর্তনের গাউন পরে ভিন্নমাত্রার কিছু করে প্রচার করাটা এখন আর নতুন কিছু নয়। একক বা দলবদ্ধ গ্রাজুয়েটদের সৃজনশীলতা সমাবর্তন ঘনিয়ে আসলেই চোখে পড়ে। ব্যতিক্রম ঘটেনি জাহাঙ্গীরগনর বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ সমাবর্তনেও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নারী শিক্ষার্থীর একটি দল বানিয়েছেন স্বল্প দৈর্ঘ্যের একটি ভিডিও। সমাবর্তন গাউন ও ক্যাপ পরা ওই গ্রাজুয়েটদের মধ্যে কারও হাতে হাঁড়ি, কারও হাতে পাতিল, প্লেট কেউবা ধরে আছেন ভিমবার। তাদের মুখ ভারি করে সেই হাঁড়ি-পাতিল মাজতে দেখা যায়।

ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক হিসেবে দেওয়া হয়েছে এক যুবকের কণ্ঠস্বর। ব্যঙ্গাত্মক স্বরে ওই যুবককে বলতে শোনা যায়, ‘যতই পড়াশোনা করো, থালবাসন (থালা-বাসন) তোমায় মাজতেই হবে। পড়াশোনা করলে হয়ত ভিমবার দিয়ে, আর নাইলে (না হলে) ছাই দিয়ে। হা.. হা.. হা..।’

আরও পড়ুন: সমাবর্তনে আসা শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ক্যাম্পাস 

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সাড়া পড়ে। অনেকে মজাচ্ছলে বানোনো ভিডিওটি এক ধরনের ‘নীরব প্রতিবাদ’ বলেও আখ্যা দিচ্ছেন।

jagonews24

ভিডিওতে থাকা শিক্ষার্থীরা হলেন- নাজমুন নাহার ইতি, নাফিসা নাওয়ার বর্ণ, সুমাইয়া বিনতে রোকন, জান্নাতুন নাহার রুপা, রুমা রহমান, সামান্তা সুলতানা, ইসরাত সুরভী, ফারজানা ইমরোজ ও সারিকা সাজনীম। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।

ভিডিওতে থাকা নাজমুন নাহার ইতি বলেন, ‘মজা করার জন্যই ভিডিওটি করা। ভিডিওটা যে এ পর্যায়ে যাবে সেটি ভাবিনি।’

আরও পড়ুন: সমাবর্তনে মা-বাবাকে নিয়ে এসেছেন শুভ 

তবে নাফিসা নাওয়ার বর্ণ বলেন, ‘ভিডিওটিতে নারীদের থালা-বাসন মাজার বিষয়টি ফুটে উঠেছে। জীবনে চলতে গেলে রান্না-বান্না, থালাবাসন মাজা একটি অতি জরুরি কাজ। ছেলে-মেয়ে ভেদে বিষয়টি আলাদা নয়। যারা দেশের বাইরে উচ্চতর পড়াশোনা করছেন তারা সবাই এসব কাজ করে থাকেন। কিন্তু আমাদের সমাজে একটা প্রচলিত ধারণা- মেয়েদেরই এসব করতে হবে। ব্যাপারটা আসলে সেরকম নয়।’

সুমাইয়া বিনতে রোকন বলেন, ‘আমাদের সমাজব্যবস্থায় দেখি যে- মেয়েরা যতই উচ্চশিক্ষা নেই না কেন, মেয়েদের রান্না-বান্না, থালা-বাসন মাজতে হয়। কিন্তু আমাদের সমাজে ছেলেদের এ কাজগুলো করতে হয় না। এটা অবশ্যই একটা নীরব প্রতিবাদ যে শুধু মেয়েরাই কেন এসব কাজ করবে? এখানে আমাদের বার্তাটা হলো, শুধু মেয়েরা না, ছেলেদেরও এই মৌলিক কাজগুলো করা উচিত।’

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে একই ব্যাচের শিক্ষার্থী সৈকত বলেন, ‘ভিডিওটা যেভাবেই ওরা তৈরি করুক সেটাতে একটা বার্তা আছে। সমাজে দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী দুজনেই চাকরি করে কিন্তু বউ বাসায় ফিরে নিজেই রান্না করে। অনেকে মনে করে ছেলেরা কেন রান্না করবে, বাসন মাজবে?’


মাহবুব সরদার/আরএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।