চবি প্রশাসন-বিরোধীদের দ্বন্দ্ব

মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠান বর্জন শিক্ষক-অফিসার সমিতির

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক চবি
প্রকাশিত: ০৪:৫৩ এএম, ২৭ মার্চ ২০২৩

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) প্রশাসনপন্থি ও বিরোধীদের দ্বন্দ্ব নতুন মাত্রা পেয়েছে। দ্বন্দ্বের জেরে এবার স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা অনুষ্ঠান বর্জন করলো শিক্ষক সমিতি ও অফিসার সমিতি। শিক্ষক সমিতি বর্তমান প্রশাসন বিরোধী হিসেবেই পরিচিত।

অনুষ্ঠান বর্জনের কারণ হিসেবে শিক্ষক সমিতি বলছে, জামায়াত সংশ্লিষ্ট প্রক্টরকে রাখা হয়েছে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনায়। অন্যদিকে আলোচনা সভার সভাপতির দায়িত্বে রেজিস্ট্রারকে রাখা হয়নি বিধায় অনুষ্ঠান বর্জন করেছে অফিসার সমিতি।

রোববার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননার আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এ অনুষ্ঠান বর্জন করে প্রতিবাদ করেছে শিক্ষক ও অফিসার সমিতি।

জানা যায়, কয়েকটি কারণ দেখিয়ে অনুষ্ঠান বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। এর মধ্যে প্রধান কারণ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তা হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিযুক্ত প্রক্টরকে রাখা। তার বিরুদ্ধে জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছে শিক্ষক সমিতি। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে রাখা হয় আইকিউএসির পরিচালককে। অথচ তিনি কোনো প্রশাসনিক পদে নেই। এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কাদের সম্মাননা দেওয়া হবে এ বিষয়ে অবগত ছিল না শিক্ষক সমিতি। অন্যদিকে অনুষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্বে রেজিস্ট্রারকে না রাখায় চবি অফিসার সমিতি অনুষ্ঠান বর্জন করে।

আলোচনা সভা বয়কটের বিষয়ে চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী বলেন, ওই সভায় স্বাগত বক্তা হিসেবে বর্তমান প্রক্টরকে রাখা হয়। তার বিরুদ্ধে স্বাধীনতাবিরোধী কাজ এবং জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন স্বাধীনতা বিরোধী দলের লোক, এটা আমরা মানতে পারবো না। তাছাড়া অনুষ্ঠানের সভাপতি (আইকিউএসির পরিচালক) বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রশাসনিক পদে নেই। এমন একজন কীভাবে এই অনুষ্ঠানের সভাপতি হন!

অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দেওয়া হবে এটা চমৎকার সিদ্ধান্ত। কিন্তু কোন মুক্তিযোদ্ধারা সম্মাননা পাচ্ছেন আমরা জানি না। অনেক ডিনও জানেন না। সুতরাং এমন একটি অনুষ্ঠানে শিক্ষক সমিতি থাকতে পারে না। তাই আমরা প্রতিবাদ হিসেবে অনুষ্ঠান বর্জন করেছি।

অন্যদিকে, আলোচনা সভা বর্জনের বিষয়ে চবি অফিসার সমিতির সভাপতি রশীদুল হায়দার জাবেদ বলেন, অনুষ্ঠানে অফিসার সমিতিকে মূল্যায়ন করা হয়নি। সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠানগুলো পরিচালনা বা সভাপতিত্ব করে থাকেন রেজিস্ট্রার। কিন্তু এবারের অনুষ্ঠান পরিচালনা বা সভাপতিত্ব কোনোটিতেই রেজিস্ট্রারকে রাখা হয়নি। রেজিস্ট্রার আমাদের অভিভাবক। আমরা মনে করছি তাকে অসম্মান করা হয়েছে। আর তাকে অসম্মান করা মানে আমাদেরও সম্মানহানি।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারকে একাধিকবার কল করা হয়। তবে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এছাড়াও প্রক্টর ড. নূরুল আজিম সিকদারকেও একাধিকবার কল করা হয়। তিনিও ফোন রিসিভ করেননি।

কেএসআর/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।