রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

ক্যান্টিনে বসাকে কেন্দ্র করে মারধর, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক রাবি
প্রকাশিত: ০৯:২৪ পিএম, ২৪ নভেম্বর ২০২৩

অডিও শুনুন

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) হলের ক্যান্টিনে বসাকে কেন্দ্র করে দুই শিক্ষার্থীকে কক্ষে গিয়ে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহার বিরুদ্ধে। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতিহার হলের ক্যান্টিনে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার দুই শিক্ষার্থী হলেন জাহিদ ও মাহফুজুর রহমান রিফাত। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে রিফাত মতিহার হল ছাত্রলীগের উপ-গণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক। তিনি শাখা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা সাকিবুল হাসান বাকির অনুসারী বলে জানা গেছে।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ভাস্কর সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিবের অনুসারী।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ক্যান্টিনে খাবার খেতে গিয়ে জায়গায় ফাঁকা পেয়ে খেতে বসেন জাহিদ। খাবারের একপর্যায়ে ভাস্কর সাহার এক কর্মী এসে জাহিদকে বলেন, এটা তার জায়গা। জাহিদ তাকে অন্য জায়গায় বসতে বলায় তাদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে খাওয়া শেষ করে জাহিদ তার বন্ধু রিফাতের ১২৯ নম্বর রুমে যান। সেখানে ভাস্করের সাহার নেতৃত্ব কয়েকজন ওই রুমে ঢুকে তাদের দুজনকেই মারধর করেন।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। ভাস্কর সাহা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের কাছে গেলে শাখা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা সাকিবুল হাসান বাকির কয়েকজন নেতা তার ওপর চড়াও হন। পরে বিকেলে সাকিবুল হাসান বাকিসহ তার সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজনের ওপর হামলা চালান ভাস্কর সাহার অনুসারীরা।

এ বিষয়ে সাকিবুল হাসান বাকি বলেন, ‘ভাস্কর সাহার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমাদের সবার অভিভাবক খায়রুজ্জামান লিটন (মেয়র) চাচা রাজশাহীতে নেই। উনি আসার পর এ বিষয়ে আমরা তার কাছে অভিযোগ জানাবো।’

হামলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ভাস্কর সাহা বলেন, ‘শান্ত ও জাহিদ নামের দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে ঝামেলার কথা শুনে আমি মীমাংসা করতে সেখানে যাই। পরে সাংবাদিকদের কাছে তারা অভিযোগ করে আমি তাদের গায়ে হাত তুলেছি, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। পরে আমি মাসুদের দোকানের সামনে গেলে তারা কয়েকজন আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা-হিল-গালিব বলেন, ‘ক্যাম্পাসের মতিহার হলের খাবার টেবিলে বসা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। আমি জানতে পেরে আমার সভাপতিকে জানাই। কিন্তু তারা অপেক্ষা না করে ছাত্রলীগের হল শাখা সেক্রেটারির গায়ে হাত তোলে। তারপরও সমস্যা সমাধান করার জন্য সভাপতি তাদের বারবার কল দিয়ে মতিহার হলের গেস্ট রুমে আসার জন্য বলে। আমরা প্রায় ৪৫ মিনিট বসে থাকার পরও তারা না এসে উল্টো বলে তারা তাদের মতো ব্যবস্থা নেবে। তারপর মতিহার হলের সেক্রেটারি ভাস্কর সাহা পরিবহনে দাঁড়ানো ছিল। তখন বহিরাগত সন্ত্রাসীর এসে ভাস্করের গায়ে হাত দেয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, বিষয়টি শুনেছি। মতিহার হলের প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি সেখানে পৌঁছেছেন বলে জানিয়েছেন। কোনো শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয়টি প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মনির হোসেন মাহিন/এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।